বিএনপির শপথ রাজনীতিতে চমক ও ইউ টার্ন: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপির সাংসদদের শপথ নেওয়ার বিষয়ে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির সাংসদদের শপথ নেওয়াটা রাজনীতির জন্য চমক ও ইউ টার্ন।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আওয়াজ’ নামের একটি সংগঠনের আয়োজনে ‘'উন্নয়নের মৃত্যুকূপে জনজীবন/নুসরাত একটি প্রতিবাদ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, ‘আমরা যে শপথ নিয়েছি, এর জন্য অনেকে অনেক মন্তব্য করেছেন। কিন্তু সময়ই প্রমাণ করবে, শপথ নেওয়াটা সঠিক সিদ্ধান্ত কি না। আগে আমরা শপথ নিইনি, তার মানে এখন নেব না—তা তো হতে পারে না।’ ‘ভয়াবহ দানব’-কে পরাজিত করার জন্যই শপথ নেওয়া হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, গতকাল থেকে রাজনীতি খুব গরম হয়ে উঠেছে। কারণ বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। বলা যেতে পারে এটি নিঃসন্দেহে একটা চমক, ইউ টার্ন। আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত ছিল ৩০ তারিখের যে নির্বাচন হয়েছে, সেটা কোনো নির্বাচন হয়নি। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে যে নির্বাচনের ভোট ২৯ তারিখের রাতে চুরি হয়ে গেছে, জনগণের ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নিয়ে নির্বাচন হয়েছে-তখন জনগণের যে ক্ষোভ ছিল, সেই ক্ষোভের ধারাবাহিকতায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম শপথ গ্রহণ করব না। কিন্তু একটি কথা আমরা বিশ্বাস করি, কোনো সিদ্ধান্তই যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত থাকবে, এটা সব সময় সঠিক নয়। আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, আমাদের ন্যূনতম যে সুযোগটুকু আছে সংসদে গিয়ে বলার, সেটা কাজে লাগাব।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সবাই শপথ নিয়েছে, কিন্তু আমি শপথ নিইনি। এটা আমাদের দলের সিদ্ধান্ত। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু হয়নি। এটা কৌশলের অংশ।’ তিনি বলেন, ‘স্পিকারের কাছে কোনো সময় চাইনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, কিছু কিছু পত্রিকা লিখেছে, আমি শপথের জন্য সময় চেয়েছি। একটি পত্রিকা লিখেছে, আমি আজ শপথ গ্রহণ করব। এটি সাংবাদিকতার এথিক্সের (নীতি) মধ্যে পড়ে না।’

সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা না করার দাবি করে ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘খালেদা জিয়া সমঝোতা করলে অনেক আগেই তিনি এ দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকতেন। আমরা কোনো বিদেশির পরামর্শে কিছু করিনি। আমরা চলমান রাজনীতি দেখছি। এগুলো বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

সংসদে যাওয়ার বিষয়ে ফখরুল ইসলাম আরও বলেন, আমাদের গণতন্ত্র চর্চার যে জায়গাটুকু, প্রতিবাদ করার যে জায়গাটুকু, তা একেবারে সংকীর্ণ হয়ে আসছে। তাই আমরা সেই জায়গা থেকে ন্যূনতম কথা বলার সুযোগ পেয়েছি। সময় প্রমাণ করবে এটা সঠিক সিদ্ধান্ত হলো কিনা। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করি, এই সিদ্ধান্তটি সঠিক সিদ্ধান্ত। বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আলোচনা সভায় জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, শাহিদা রফিক, সেলিমা রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।