বিরোধীদের দমাতে সরকারের পেছন থেকে কাজ করছে একটা শক্তি

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, যারাই এই সরকারের বিরোধিতা করছে, তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য ভয়ংকর একটা শক্তি সরকারের আড়ালে থেকে কাজ করছে। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৫তম কারাবন্দী দিবস উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম নামের দুটি সংগঠন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ ছাত্র ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা মীর হেলাল।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‌‌‘কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর জেল থেকে বেরিয়ে যে স্টেটমেন্ট দিয়েছেন, সেই স্টেটমেন্টেই বোঝা যায় ভয়ংকর একটা শক্তি পেছন থেকে, এই সরকারের আড়ালে থেকে যারাই এই সরকারের বিরোধিতা করছে, যারাই রাষ্ট্রপ্রধানের বিরোধিতা করছে, তাদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য অমানবিক নির্যাতন করছে।’

মির্জা ফখরুলের অভিযোগ, লেখক মুশতাক আহমেদ শুধু লেখার অপরাধে, কিশোরকে শুধু কার্টুন আঁকার অপরাধে নির্মমভাবে অত্যাচার করে মাসের পর মাস আটক রাখা হয়েছে।

২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা মামলায় তারেক রহমানের নাম কোথাও ছিল না উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনবার এফআইআর করেও যখন নাম পাওয়া যায়নি, তখন আরেকজনকে ধার করে নিয়ে এসে নতুন করে অভিযোগপত্র তৈরি করে তাঁকে (তারেক রহমান) সেখানে আসামি দেখানো হয়েছে। এখন যেকোনো ঘটনা ঘটলে তাঁর নাম দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বিএনপির মহাসচিবের দাবি, সারা দেশে তাঁর দলের ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথা মামলা দেওয়া হয়েছে। এখন তাঁদের রাস্তায় নামতে দেওয়া হয় না। পথে বেরিয়ে কথা বলতে দেওয়া হয় না।

আক্ষেপ করে মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পালন করা হচ্ছে। স্বাধীনতার লক্ষ্য কী ছিল, চেতনা কী ছিল? গণতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।

স্বাধীনতার চেতনা আজ ভূলুণ্ঠিত বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রকে পুরোপুরিভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে। অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে।’

আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে রাজপথ ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই আমাদের রাজপথে গিয়ে ফায়সালা করতে হবে।’ দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আসুন, ঘুরে দাঁড়াই। রাজপথ গরম করুন। রাজপথ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে বেগম জিয়াকে গুলশানের বাড়ি থেকে মুক্ত করা এবং তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে ইকবাল হাসান আরও বলেন, ‘এই মার আর খাওয়া যাবে না। এই ব্ল্যাকহোলে আর ঢোকা যাবে না।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামালসহ সভায় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।