বিরোধীদলীয় উপনেতা ৬-৭ বার ফোন করেছিলেন, ধরেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী

জি এম কাদের
ফাইল ছবি

জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের সমস্যার কথা জানাতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে ছয়-সাতবার ফোন করেছিলেন। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাঁর ফোন ধরেননি।

শনিবার বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে নিজ নির্বাচনী এলাকা লালমনিরহাটের স্বাস্থ্যসেবার বেহাল দশার কথা বলতে গিয়ে এমন অভিযোগ করেন জি এম কাদের। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বছর আগে যে অবস্থায় ছিল, এখনো সেখানেই আছে। করোনা পরিস্থিতিতেও মন্ত্রণালয়ের কোনো উন্নতি হয়নি।

জি এম কাদের বলেন, ‘সদর হাসপাতাল স্বাস্থ্যসেবা কমিটির সভাপতি পদে পদাধিকারবলে স্থানীয় সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁরা সঠিকভাবে কাজ করেন না বলে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন হচ্ছে না, এ মন্তব্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী করেছেন। এ কথার কারণে মানুষের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। যাঁদের এভাবে সভাপতি করা হয়, তাঁদের কোনো সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয় না। তাঁরা নিজ উদ্যোগে হাসপাতালের সমস্যা নির্ধারণ করেন এবং সমাধানের প্রচেষ্টা করেন।’

জি এম কাদের বলেন, স্বাস্থ্যসেবা কমিটিকে কোনো ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব দেওয়া হয়নি। নিয়ম, আইন বা অর্থ বরাদ্দ—এমন কিছুই থাকে না, যাতে তাঁরা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারেন। প্রায় সময় সিদ্ধান্তকে বাস্তবে রূপ দিতে মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ প্রয়োজন পড়ে। ফলে তাঁদের প্রধান কাজ হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা সরাসরি মন্ত্রীকে খুশি করে কাজটি বাস্তবায়ন করা।

মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা পাওয়া যায় না জানিয়ে জাতীয় পার্টর চেয়ারম্যান বলেন, ‘‌আমি মাননীয় মন্ত্রীকে (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) ছয়-সাতবার টেলিফোন করেছি। উনি টেলিফোন ধরেন না। তাঁর সহকারীকে ফোন দেওয়ার পরও পরে ফোন ব্যাক করেন না। এ রকম ব্যবহার পেয়েছি। পত্র দিলে কোনো উত্তর বা সমাধান মেলে না। সংসদ সদস্যরা অনেকেই তখন বাধ্য হয়ে সমাধানের লক্ষ্যে বিষয়গুলো সংসদে তুলে ধরেন। যদিও এরপর সমাধান তেমন একটা পাওয়া যায় না।’

রংপুর হাসপাতালের সমস্যা তুলে ধরে জি এম কাদের বলেন, ‘রংপুর হাসপাতালে ডায়ালাইসিস মেশিনের পানি বিশুদ্ধিকরণ অংশটি নষ্ট ছিল দীর্ঘ প্রায় আট মাস। ফলে ২৫টি ডায়ালাইসিস মেশিন অকেজো হয়ে পড়েছিল। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৬ লাখ টাকা দান উঠিয়ে এটা মেরামত করা হয়েছে। বর্তমানে ২৫টির মধ্যে ১০টি কাজ করছে না। বারবার মন্ত্রণালয়ে জানিয়েও কোনো ফল হয়নি। আমি ব্যক্তিগতভাবে দুই থেকে তিন মাস আগে স্বপ্রণোদিত হয়ে সচিবকে মেরামতের অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কোনো কাজ হয়নি।’ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের দুর্দশার চিত্রও এ সময় তিনি তুলে ধরেন।