মানুষ হতাশার চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

‘এটা কখন হয়? যখন হতাশার চরম পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছে মানুষ। আজকে সেই অবস্থায় গিয়ে আমরা পৌঁছেছি।’ রাজধানী ঢাকায় গতকাল সোমবার একজন রাইড শেয়ারের চালকের মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ফেলার ঘটনার কথা উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

রাজধানীর গুলশানে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র নেই, আছে একটা মুখোশ। একটা আবরণ আছে গণতন্ত্রের। সেই আবরণের মধ্যে পুরোপুরি একদলীয় ব্যবস্থা চলছে।
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এরা অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে, এরা আজকে পুরোপুরিভাবে একটা লুটেরা অর্থনীতি, একটা লুটেরা সমাজ তৈরি করছে। কী অবস্থা দেখেন, এই করোনার কারণে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা এত খারাপ হয়েছে যে গতকাল একজন যুবক তাঁর মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দিয়েছেন।’

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকারের লুটেরা অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় আজ মানুষের হতাশা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। তিনি বলেন, এখানে একটা ভয়ভীতির সংস্কৃতি এমনভাবে তৈরি হয়েছে যে এখন কথা বলতে যে কেউ ভয় পায়। সাংবাদিকেরা লিখতে ভয় পান। সরকারের দমননীতিতে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৩৫ লাখের ওপরে মামলা।

গ্রেপ্তার, পুলিশি নির্যাতনে নেতা-কর্মীরা এলাকায় থাকতে পারছেন না, এমন অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এই দেশকে কি একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যাবে? যাবে না। একটা অস্বস্তিকর অবস্থা এরা তৈরি করেছে। আজকে এদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়, রাষ্ট্র নিরাপদ নয়। এটা সবাইকে জানাতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সেই যে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে আমাদের লক্ষ্য ছিল এখানে একটা বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা এবং একই সঙ্গে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রাখা, যেটা আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মূল কথা ছিল। সেটা আমাদের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এগুলোর জন্য আমাদের সংগ্রাম করতে হবে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই লড়াইয়ে সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।’

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, বরকত উল্লাহ, আবদুল আউয়াল, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, ফরহাদ হালিম, বিজন কান্তি সরকার, আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, আবদুল হাই শিকদার প্রমুখ।

সভা পরিচালনা করেন কমিটির সদস্যসচিব আবদুস সালাম। সভায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর বছরব্যাপী কর্মসূচি পুনরায় শুরুর বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।