মামুনুলের বিষয়ে আরও ঘটনা জেনে জানানো হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
ফাইল ছবি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, গতকাল সোনারগাঁ উপজেলায় তাণ্ডব দেখা গেছে। সোনারগাঁ উপজেলার একটি বেসরকারি হোটেলে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুল হক একজন মহিলাকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন। ওই মহিলা কে, তা তিনি টেলিভিশনে নিজের মুখে স্বীকার করেছেন। তিনি তাঁর স্ত্রী নন। এ বিষয়ে আরও ঘটনা জেনে সবাইকে জানানো হবে।

আজ রোববার জাতীয় সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ওই ঘটনার পর দেখলাম, ওই রিসোর্টের ওপর আক্রমণ। কেন এই আক্রমণ, আমার জানা নেই। সেখানে বিদেশি কয়েকজন ছিল। পুলিশ ও বিজিবি গিয়ে তাঁদের রক্ষা করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘হঠাৎ এ ধরনের তাণ্ডব কেন, নিশ্চয়ই এর কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি। যারাই তাণ্ডব করে থাকুক, তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছি।’

জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে দেওয়া বিবৃতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ২৬ থেকে ২৮ মার্চ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ও হামলার ঘটনা নিয়ে কথা বলেন। জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালি বিধির ৩০০ ধারা অনুযায়ী কোনো মন্ত্রী জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জাতীয় সংসদে বিবৃতি দিতে পারেন।

মন্ত্রী বলেন, ২৬ থেকে ২৮ মার্চ দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা ও হামলার ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের যারা জড়িত, সবাইকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। এর মধ্যে ২২ জনকে আটক করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সহিংসতার সময় পুলিশ জীবনরক্ষায় বাধ্য হয়ে গুলি ছুড়েছিল।

মন্ত্রী আরও বলেন, ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়। এর মধ্যে মসজিদে মসজিদে আওয়ামী লীগের দোয়া মাহফিলের কর্মসূচিও ছিল। বায়তুল মোকাররমে নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের নেতা–কর্মীরা ছোটাছুটি শুরু করেন। আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা যেখানে বসেছিলেন, সেদিকে আসতে থাকেন। আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা সরে গেলেও পরে বৃষ্টির মতো ইট নিক্ষেপ করতে দেখা গেছে। সারা দেশে তারা গুজব ছড়িয়েছে, মুসল্লিদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। এই গুজবকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেটসহ বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, হাটহাজারীতে হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা থানার ভবন আক্রমণ করেন। পুলিশের একজন ক্যাডারকে আহত করেছেন। জীবনরক্ষায় বাধ্য হয়ে পুলিশ গুলি ছোড়ে। চারজন সেদিন মৃত্যুবরণ করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও একই ঘটনা ঘটেছিল। মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে এসে ছাত্ররা বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর শুরু করেন। সেখানে একজন মৃত্যুবরণ করেন। ৬০০ থেকে ৭০০ মাদ্রাসা সেখানে আছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। তাঁরা পুলিশ, থানা, পুলিশ লাইন, ডিসির বাংলো আক্রমণ করেন। অরাজক পরিস্থিতিতে পুলিশ–বিজিবি গুলি করে। ২৭ মার্চ এখানে সাতজনের মৃত্যু হয়। ২৮ মার্চের সহিংসতায় আরও পাঁচজন মারা যায়। মোট মৃত্যুবরণ করেন ১৭ জন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একটি ছবিতে দেখা গেছে, নরসিংদীতে একজন ঘোড়ায় চড়ে এসেছিলেন, তাঁকে ধরা হয়েছে। পিস্তল উঁচু করে ফায়ার করছেন একজন, সবাইকে চিহ্নিত করা হয়েছে।