মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের এ দেশে রাজনীতি করা উচিত না: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের ষোলোশহর এলজিইডি ভবনে এক সভায় বক্তব্য দেন। ছবি: সংগৃহীত
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের ষোলোশহর এলজিইডি ভবনে এক সভায় বক্তব্য দেন। ছবি: সংগৃহীত

স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তির লোকদের এ দেশে রাজনীতি করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় থাকতে হবে। বিরোধী দলও হবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের ষোলশহর এলজিইডি ভবনে আয়োজিত এক সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয় জেলা আওয়ামী লীগ এই সভার আয়োজন করে।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাংসদ মোশাররফ হোসেন। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সংরক্ষিত আসনের সাংসদ খাদিজাতুল আনোয়ার।

সভায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, আগামী বছর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ হবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে একটি দেশে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি রাজনীতি করবে, তা হওয়া উচিত নয়। যারা দেশটাই চায়নি, দেশের পতাকাটাই চায়নি এবং দেশের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও তাদের আস্ফালন মেনে নেওয়া যায় না।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে যে নেতিবাচক রাজনীতি শুরু, তা ছিল ধ্বংসাত্মক। এই জোটের ধ্বংসাত্মক রাজনীতি না থাকলে বাংলাদেশ বহুদূর এগিয়ে যেতে পারত। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর কিংবা দক্ষিণ কোরিয়ার আগেই বাংলাদেশকে উন্নত দেশের খাতায় নাম লেখাতে পারতেন।

রাজনীতি এখন রাজনীতিবিদদের হাতে পুরোপুরি নেই উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাজনীতিতে বণিকায়ন ও দুর্বৃত্তায়ন ঘটেছে। রাজনীতিতে প্রচণ্ড সুবিধাবাদীদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এর সূচনা করেছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি ক্ষমতা দখল করতে রাজনীতিবিদদের কেনাবেচার হাট বসিয়েছিলেন। মৌসুমে যেমন খেলোয়াড় বিক্রি হয়, তখন অনেক রাজনীতিবিদও বিক্রি হয়েছিলেন। সেভাবেই গঠিত হয়েছিল বিএনপি। আজকে যাঁরা বিএনপির বড় বড় নেতা, তাঁরা সবাই খেলোয়াড়দের মতো রাজনীতির হাটে বিক্রি হওয়া মানুষ।

মওদুদ আহমদ, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রিজভী আহমেদসহ চট্টগ্রামের বিএনপির বড় নেতারা অন্য দল করতেন বলে হাছান মাহমুদ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আবার কেউ কেউ আওয়ামী লীগেও যোগদান করতে ছেয়েছিলেন। তাঁরা সবাই রাজনীতির মাঠে বিক্রি হওয়া ও সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ। সুবিধাবাদীদের সমন্বয়ে গঠিত রাজনৈতিক দলের নাম হচ্ছে বিএনপি।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, পরপর তিনবার রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগের মধ্যে অনেকের আলস্য এসেছে। দলে অনেক অনুপ্রবেশকারী ঢুকে গেছে। এদের চিহ্নিত করে দলকে পরিশুদ্ধ করা প্রয়োজন। অনুপ্রবেশকারী, সুবিধাবাদীরা যাতে দলকে গিলে ফেলতে না পারে, সেদিকে সবার নজর রাখতে হবে। অনুপ্রবেশকারী ও সুবিধাবাদীমুক্ত আওয়ামী লীগ গঠন করতে হবে।