শীর্ষ পদে জামায়াত ও শিবিরের সাবেক নেতা

একসময় ইসলামী ছাত্রশিবির করতেন। ছিলেন বগুড়া শহর জামায়াতের সেক্রেটারি। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি কোণঠাসা হওয়ার পর কিছুদিন নিষ্ক্রিয় ছিলেন। জামায়াত ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন বছর দুয়েক আগে। জামায়াতের ওই নেতা এবার বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্য ঘোষিত কমিটিতে আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন। ওই নেতার নাম এ বি এম মাজেদুর রহমান।

 গতকাল শনিবার স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি শফিউল বারী ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া সংগঠনটির বগুড়া জেলা ইউনিটের ২১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সদ্য ঘোষিত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হয়েছেন সদর থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সরকার মুকুল। তিনি বগুড়া সদর থানায় দায়ের হওয়া ছিনতাই মামলার আসামি। কমিটিতে স্থান পাওয়া বেশির ভাগ সদস্য হয় বিতর্কিত না হয় উড়ে এসে জুড়ে বসা লোক বলে অভিযোগ করেছেন স্বেচ্ছাসেবক দলের জেলা কমিটির সাবেক একাধিক নেতা। কমিটিতে একজন সরকারি চাকরিজীবীকে স্থান দেওয়া হয়েছে। আবার দুর্নীতির অভিযোগে বগুড়া পৌরসভায় কর আদায়কারী পদ থেকে বরখাস্ত হওয়া একজনের জায়গা হয়েছে কমিটিতে। রয়েছেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কয়েকজন নেতা-কর্মী। এর মধ্যে সদ্য ঘোষিত কমিটির আহ্বায়কের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরাও জায়গা পেয়েছেন এই কমিটিতে। 

 দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আহ্বায়ক ও যুগ্ম আহ্বায়ক ছাড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটিতে স্থান পাওয়া অন্যরা হলেন রাকিবুল ইসলাম, আবদুল গফুর, মাসুদ সরকার, সুলতান আহমেদ,খন্দকার মাহমুদুর রহমান, জামিনুর রহমান, রাজু আহমেদ, মিজানুর রহমান, আজাদ রহমান, শাহ আলম, ফারুক প্রধান, রবিউল ইসলাম, জাহাঙ্গীর মানিক সরকার, হাসিবুর রহমান, সজিবুর রহমান, ফয়সাল রহমান, সুজন তালুকদার, পারভেজ পশারী এবং শিহাব শাহরিয়ার।

>স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি এই বগুড়া জেলা আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয়। এর আহ্বায়ক বগুড়া শহর জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি।


জানতে চাইলে বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক রেজাউল করিম বলেন, বগুড়া শহর জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি মাজেদুর রহমানের বিরুদ্ধে বগুড়ার বিভিন্ন থানায় দেড় ডজন মামলা রয়েছে। বেশির ভাগ মামলা দায়ের হয়েছে ২০১২ থেকে ২০১৩ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবিরের নাশকতা চালানোর সময়। এসব মামলায় পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণসহ নানা অভিযোগ আনা হয়েছে।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কমিটির চারজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কমিটিতে স্থান পাওয়া সদস্যদের মধ্যে হাফ ডজন ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতা। এর মধ্যে রয়েছেন শাহ আলম, ফারুক প্রধানসহ আরও কয়েকজন। আবার পারভেজ পশারী এবং শিহাব শাহরিয়ার নতুন কমিটির আহ্বায়কের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা বিএনপির একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বগুড়া বিএনপিকে গলাটিপে হত্যা শুরু হয়েছে জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণার মাধ্যমে।’