সংশ্লিষ্টতা নেই, তবু হেফাজতের মামলায় বিএনপির নেতা–কর্মী গ্রেপ্তার: ফখরুল

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ফাইল ছবি

হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচির সঙ্গে বিএনপির কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সরকার বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদেরকে হেফাজতের মামলায় জড়িয়ে গ্রেপ্তার ও হয়রানি করছে।

আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব অভিযোগ করেন।

বিএনপির মহাসচিবের ভাষ্য, রাজনৈতিকভাবে বিএনপিকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে সরকার প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বিএনপির নেতা–কর্মীদের দমন করতে চাচ্ছে। এটা সরকারের ভ্রষ্টাচার নীতি ছাড়া আর কিছুই নয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসে নির্বিচার গুলিবর্ষণ করে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ২৯ মার্চ দেশব্যাপী মহানগর ও ৩০ মার্চ জেলা সদরে প্রতিবাদ বিক্ষোভের ডাক দেয়। দলের এসব কর্মসূচিতে স্থানীয় পুলিশ ব্যাপক হামলা, গুলিবর্ষণ ও লাঠিপেটা করে। খুলনা মহানগরীর উদ্যোগে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জ, হামলায় বিএনপির নেতা বাবুল কাজীসহ ৩০ জন আহত হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোহাম্মদ বাবুল কাজী গত রাতে ইন্তেকাল করেন। পুলিশের হামলায় এই ঘটনায় নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, গত ৩০ মার্চ নওগাঁর বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে ৩০ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে নওগাঁয় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় যুবদল নেতা কোহিনুর ইসলামসহ ১৭ জনকে ওই দিনই গ্রেপ্তার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মোশারফ হোসেন, নওগাঁ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম এবং বক্তারপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আফজাল হোসেন সরদারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গত ১৪ দিনে ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক চেয়ারম্যান এফ আই ফারুক, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হেলাল আহমেদ, হালিম ফকির, মহানগর যুবদল সভাপতি মোজাম্মেল হক, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন, ছাত্রদল নেতা মাহবুবুর রহমান, মহানগর বিএনপির নেতা ওয়াসিম আকরামসহ ১৪ জন, কিশোরগঞ্জে গত তিন দিনে জেলা বিএনপির ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পবিষয়ক সম্পাদক মো. কাইয়ুম মিয়া, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের সুমনসহ ২০ জন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোজাফ্ফর চৌধুরী, উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. বাবরসহ ১০ জন, পটিয়ায় বিএনপির নেতা ইমতিয়াজ হাসানসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিবের অভিযোগ, ভয়াবহ করোনার মধ্যেও পুলিশ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নিরীহ নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার করতে তাঁদের বাড়ি বা পাড়া-মহল্লায় অভিযান চালিয়ে হয়রানি করছে। পুলিশের অপকীর্তি ও হামলায় এসব এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।