সরকারের অতিরিক্ত আমলাপ্রীতি সর্বজনবিদিত: রুমিন

বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানা
ফাইল ছবি

বিএনপি থেকে সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানা বলেছেন, ফৌজদারি অপরাধ হতে পারে এমন কোনো আইনে মোবাইল কোর্টকে (ভ্রাম্যমাণ আদালত) যুক্ত করা এখন এক ভয়ংকর প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারের অতিরিক্ত আমলাপ্রীতি সর্বজনবিদিত। এই আমলাপ্রীতির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতারাই নানা ফোরামে ক্ষোভ-উষ্মা প্রকাশ করছেন।

আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) বিল, ২০২১’ পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে রুমিন এসব কথা বলেন। জাতীয় পার্টির সাংসদ শামীম হায়দার পাটোয়ারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের বদলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার প্রস্তাব করেন।

বিলের আলোচনায় রুমিন ফারহানা বলেন, সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদ সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগ অর্থাৎ ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি’ অধ্যায়ের অংশ। এটা যদি রাষ্ট্রের মূলনীতি হয়ে থাকে তাহলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কোনোভাবেই বিচারকার্য পরিচালনা করতে পারেন না। এটা সুস্পষ্টভাবে অসাংবিধানিক। এটা আদালতেরও বক্তব্য।
রুমিন বলেন, রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণের চাঞ্চল্যকর মামলায় বিচারক যে পর্যবেক্ষণ দিয়েছিলেন তার প্রতিক্রিয়ায় আইনমন্ত্রী প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখেছেন। তিনি মিডিয়ায় এ ব্যাপারে ব্যবস্থার কথা বলেছেন। সেই বিচারককে বিচারকাজ থেকে সাময়িকভাবে নিবৃত্ত করে সরকারের আইন মন্ত্রণালয়ে পদায়ন করা হয়েছে।

রুমিন বলেন, নিম্ন আদালতকে পুরো নিজের কবজায় রাখা, সরকারের একজন মন্ত্রী বিচার বিভাগ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছেন—এই দৃশ্য অসুন্দর, অশোভনও বটে। একটা সভ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এটা হতে পারে না। দেশের নিম্ন আদালতের একজন বিচারকের রায় বা পর্যবেক্ষণে কোনো ভুল হলে সেটার তদারকি করার জন্য উচ্চ আদালত আছেন, তাঁরাই সেটা করবেন। কিছুদিন আগে একজন চলচ্চিত্রশিল্পীকে একাধিকবার রিমান্ড দেওয়ার কারণে নিম্ন আদালতের বিচারকের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত নিজেই ব্যবস্থা নিয়েছেন।

জাতীয় পার্টির সাংসদ শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘মোবাইল কোর্টের বিষয়টি এখনো সুপ্রিম কোর্টে পেন্ডিং। এ অবস্থায় প্রতিটি আইনেই মোবাইল কোর্ট আসছে। মোবাইল কোর্ট রাষ্ট্রের প্রয়োজনে হতে পারে। সেখানে জুডিশিয়াল মোবাইল কোর্ট করা যায়। জাজরাই মোবাইল কোর্ট করবেন। সে ক্ষেত্রে রায় আরও পারফেক্ট হবে।’
অবশ্য শেষ পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিধান রেখেই ‘বাংলাদেশ ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) বিল-২০২১’ জাতীয় সংসদে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই–বাছাই কমিটিতে পাঠান এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

বিলে বলা হয়েছে, কোনো ট্যুর অপারেটর ও ট্যুর গাইড পরিচালনার জন্য সরকারের নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ থেকে সনদ নিতে হবে। আইনটি কার্যকর হওয়ার তিন মাসের মধ্যে বিদ্যমান ট্যুর অপারেটরগুলোকে নিবন্ধন সনদ নিতে হবে। বিলে অনলাইন ট্যুর অপারেটরদেরও এই আইনের আওতায় আনা হয়েছে।