সাংবাদিক যদি নিজে ভয় পান, সরকারের কিছু করার থাকে না: তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
ছবি: সংগৃহীত

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, কোনো সাংবাদিক যদি অহেতুক নিজ থেকে ভয় পান, সেখানে সরকারের কিছু করার নেই। আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ওভারসিজ করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ওকাব)।

‘সেল্ফ-সেন্সরশিপ’ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ আরও বলেন, সৎ সাংবাদিকদের নির্ভয়ে কাজ করা দরকার। ত্রুটি-বিচ্যুতির সমালোচনা সাংবাদিকদের কাজকে সমাদৃত করে। এসব কাজ যাঁরা করেন, তাঁদের পাশে সরকার আছে। এ সময় তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে সাংবাদিকেরা ভয় পান, নাকি আমরা ভয় পাই—সেটাই প্রশ্ন। সাংবাদিকদের অন্যরা ভয় পান, সেটিও একটি প্রশ্ন। কে কাকে ভয় পান, সেটা বড় প্রশ্ন।’

সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এত নিচে কেন—এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারের প্রকাশিত সূচকের প্রতিবাদ করা হয়েছে। যারা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান আফগানিস্তানের নিচে রাখে, তাদের প্রতিবেদন কতটা বিশ্বাসযোগ্য?

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সাংবাদিকদের হেনস্তা করতে প্রণয়ন করা হয়নি বলেও দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এখন এই আইনে মামলা করা এত সহজ নয়। তাই মামলা কমে গেছে। আর সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করলে মন্ত্রণালয় থেকে জামিনের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারের কিছু প্রতিবেদন দেশের বাক্‌স্বাধীনতা নিয়ে সমালোচনা করে করা হয়েছে। সরকারও পরবর্তী সময়ে এসব প্রতিবেদনের সমালোচনা করেছে।

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অ্যামনেস্টির মতো প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতা হারানো দুঃখজনক। তারা যুদ্ধাপরাধীদের শাস্তি নিয়ে সমালোচনা করে। কিন্তু দেশে পেট্রলবোমা হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যা নিয়ে তারা কোনো কথা বলে না। ইসরায়েলের হামলা নিয়ে বিবৃতি দেয় না। টিআইবি নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, টিআইবি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মতো বিবৃতি দিলে তখন তা বিশ্বাসযোগ্যতা হারায়। টিআইবির মতো প্রতিষ্ঠান দেশের বিরুদ্ধে বলে। তবে অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান দেশের কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করে বলেও দাবি করেন তিনি।

সাংবাদিকদের পেশা নিয়ে আইন প্রণয়নের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, খসড়া আইনটি কেউ না পড়ে, আর কেউ কেউ না বুঝে নানা কথা বলছেন। তবে কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি আছে। সেগুলো পরিবর্তন, পরিমার্জন করা হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও সাংবাদিকেরা একমত।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ওকাবের সমন্বয়ক ও বিবিসির বাংলা বিভাগের সংবাদদাতা কাদির কল্লোল, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও একটি জার্মান বার্তা সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি নজরুল ইসলাম প্রমুখ।