সাকা ন্যায়বিচার পাননি বলে মনে করে বিএনপি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ন্যায়বিচার পাননি বলে মনে করে বিএনপি। দলটির দাবি, সাকা চৌধুরীর পক্ষে আদালতে যেসব দালিলিক প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়েছিল, সেগুলো বিবেচনায় নিলে হয়তো তাঁর ফাঁসির আদেশ হতো না। সাকা চৌধুরী রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে ‘পারসিকিউশনের’ শিকার হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন দলটির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন। সাকা চৌধুরীর বিচারের ক্ষেত্রে অপরাধের চেয়ে রাজনৈতিক পরিচয় প্রাধান্য পেয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ছয়বার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন; তাঁর এলাকার মানুষ তাঁকে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে পাঠিয়েছিলেন। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের জন্য তাঁর কমিটমেন্ট ছিল। তিনি একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক ছিলেন, সৎ রাজনীতিক ছিলেন, তাঁর কমিটমেন্ট ছিল, গণতন্ত্রের প্রশ্নে তিনি আপসহীন ছিলেন।’
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার সময় জানাতে মূলত ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আপিল বিভাগে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর রায়ের পর বিএনপির যে অবস্থান ছিল, এখনো বিএনপির একই অবস্থান বহাল রয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম, তিনি ন্যায়বিচার পাবেন, কিন্তু আইনজীবীরা বলেছেন, তিনি ন্যায়বিচার পাননি।’
এর আগে গত ২৯ জুলাই আপিল বিভাগের রায়ের পর বিএনপি বলেছিল, তারা মনে করে সাকা চৌধুরী ন্যায়বিচার পাননি। রায়ে তারা হতাশ, বিস্মিত হয়েছে। তাদের আশা ছিল, রায় পুনর্বিবেচনায় তিনি ন্যায়বিচার পাবেন।
রিভিউর রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আসাদুজ্জামান দাবি করেন, সাকা চৌধুরী অপরাধী নন। তিনি অপরাধ করেননি। যে সময়ে অপরাধ সংঘটনের কথা বলা হয়েছে, সে সময় তিনি দেশে ছিলেন না। সাকা চৌধুরীর পক্ষ থেকে এর দালিলিক প্রমাণ এবং দেশি-বিদেশি একাধিক বিশিষ্টজনকে সাক্ষী মানা হয়েছিল। তিনি বলেছেন, তিনি ওই সময় তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলেন।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা খুশি হতাম, দেশবাসী খুশি হতো যদি এসব বিবেচনায় নেওয়া হতো। তা হলে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ওই সময় দেশে ছিলেন না এবং দেশে না থাকায় তাঁর পক্ষে সে-জাতীয় অপরাধ করার সুযোগ ছিল না, তা প্রমাণ হতে পারত।’
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশে না থাকা নিয়ে সাকা চৌধুরী আদালতে যে বক্তব্য দিয়েছেন, বিএনপি তা বিশ্বাস করে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তিনি আমাদের পার্টির নেতা। তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন আমরা মনে করি, তিনি অবশ্যই সত্যি কথা বলেছেন। তাঁর এই বক্তব্যের সপক্ষে তিনি দালিলিক প্রমাণও দিয়েছেন।’
বিএনপির মুখপাত্র অভিযোগ করেন, সাকা চৌধুরীকে নাগরিক হিসেবে মৌলিক ও মানবাধিকার দেওয়া হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।