সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না: কাদের

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত এ দেশে কোনো সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের অবমাননা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কোটি বাঙালির হৃদয়ে আঘাত বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, এর নেপথ্যে যারা মদদ ও অর্থের জোগান দিচ্ছে, তাদেরও খুঁজে বের করা হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবার এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অতীতে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। এখনো হচ্ছে। এখন হঠাৎ করে আবার বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির অপচেষ্টা চলছে। জনস্বার্থে তাদের কঠোর হাতে দমন করা হবে। ভাস্কর্য ইস্যুতে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক কোনো ষড়যন্ত্র আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ দেশে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির ঐক্য সুদৃঢ়, জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিকভাবে সব অপকৌশল মোকাবিলা করা হবে। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর ধর্মকে ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কর্মকাণ্ডে সমর্থন দিয়ে বিএনপি নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তারা ইতিমধ্যে তা প্রমাণ করেছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু কিছু ভাস্কর্যের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ছবির মিল থাকছে না। কখনো কখনো নকশা বা ডিজাইনেরও ত্রুটি দেখা যাচ্ছে। তাই বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টের অনুমতি গ্রহণ ছাড়া ভাস্কর্য নির্মাণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

সরকার নির্বাচন কমিশনকে দলীয় সংস্থায় পরিণত করেছে—বিএনপির মহাসচিবের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই ধরনের বক্তব্য ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যমূলক। বিএনপি জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে ব্যর্থতার দায় চাপাচ্ছে নির্বাচন কমিশনের ওপর। যারা ভোটের দিন কেন্দ্রে না যাওয়ার মধ্য দিয়ে নির্বাচনব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, তাদের এই অপপ্রয়াস জনগণের কাছে স্পষ্ট।

সংবাদ সম্মেলনের আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তাফা ওসমান তুরান সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বাংলাদেশ ও তুরস্কের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অনেক পুরোনো ও অভিন্ন বিশ্বাসের ওপর প্রতিষ্ঠিত বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ও তুরস্ক উদার গণতন্ত্র চর্চায় বিশ্বাসী। ইউরোপ ও এশীয় সংস্কৃতির সংযোগস্থল তিন সমুদ্রের দেশ তুরস্ক। দুই দেশের মধ্যে রয়েছে সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য গতিতে এগিয়ে যাওয়া এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলাসহ সামাজিক খাতের উন্নয়নের জন্য তুরস্ক সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন তুর্কি রাষ্ট্রদূত।

তুরস্কের রাষ্ট্রদূত জানান, ২০১৮ সালে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তুরস্কের আঙ্কারায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য এবং ঢাকায় কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্য স্থাপনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তাফা ওসমান তুরান আরও জানান, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে তুরস্কজুড়ে অনেক ভাস্কর্য রয়েছে। কিন্তু এ নিয়ে তুরস্কে কোনো ভিন্নমত বা বিতর্ক নেই।

অর্থনীতি, অবকাঠামো, কর্মসংস্থান ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার আরও সুযোগ রয়েছে বলে এ সময় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ওবায়দুল কাদের।