সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে আপস চলছে: মেনন

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সাংসদ রাশেদ খান মেনন
ফাইল ছবি

সাংসদ রাশেদ খান মেনন বলেছেন, দেশে সম্প্রতি যেসব সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। দেশে গত কয়েক দশক সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি হচ্ছে। এটা পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হচ্ছে। এসব ঘটনা তারই ফলশ্রুতি।
‘আদিবাসী ও সংখ্যালঘুবিষয়ক সংসদীয় ককাস’ আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল সভায় এসব কথা বলেন মেনন। আজ রোববার এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মেনন বলেন, একসময় বিএনপি এ ধরনের সাম্প্রদায়িক শক্তিকে ক্ষমতায় নিয়ে আশকারা দিয়েছে। এখন আবার সেই শক্তির সঙ্গে আপস চলছে। সে জন্যই তারা সহিংস ঘটনা ঘটানোর এ সাহসগুলো পায়।

মেনন বলেন, কুমিল্লার ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে, পরিকল্পিতভাবে সংখ্যালঘু মানুষের ওপর নির্যাতন চালানোর জন্যই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছিল।
সাংসদ হাসানুল হক ইনু তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা অসাম্প্রদায়িক চেতনাসম্পন্ন নেতৃত্ব গড়ে তুলতে পারছি না।’

অনুষ্ঠানে সাংসদ শিরিন আক্তার বলেন, ‘সমাজ ও রাষ্ট্রে অসাম্প্রদায়িক চেতনার যুবসমাজ ও রাজনৈতিক দলকে গড়ে তুলতে হবে। এটা অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশে অবশ্যই উন্নয়ন হচ্ছে। তবে সংবিধানের মূলনীতির আলোকে উন্নতি করতে হবে। যদি আমরা সেভাবে এগোতে না পারি, তাহলে আবার এমন ঘটনা ঘটবে।’
একটি টাস্কফোর্স গঠন করে সহিংসতার শিকার এলাকাগুলো পরিদর্শনের প্রস্তাব করেন সাংসদ আরমা দত্ত।

সভায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত বলেন, এরশাদের সময়কার সাম্প্রদায়িক হামলা এবং ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের সাম্প্রদায়িক হামলার পরে মনে করা হয়েছিল, ২০০৮ সালের পরে আর সাম্প্রদায়িক হামলা হবে না। কিন্তু তারপরও দেখা যায়, সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে হামলা করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে হামলা বেড়ে যাচ্ছে। বর্তমানে সংখ্যালঘুদের আস্থা রাজনৈতিক দলের ওপর নেই।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, ধনী-দরিদ্র সব সংখ্যালঘুর মন ভেঙে গেছে। পেছনে যাওয়ার আর জায়গা নেই। ফলে হিন্দু যুবসমাজের মধ্যে উগ্রবাদ জন্ম হচ্ছে। কিন্তু উগ্রতা দিয়ে উগ্রতাকে থামানো যাবে না। রাজনৈতিক নেতারা আজ ব্যর্থ হয়েছে। ভরসা শুধু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ওপর।

প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, ‘আমরা শুধু ঘটনার পেছনে ছুটছি। কিন্তু ঘটনার কারণে গুরুত্ব দিচ্ছি না।’

সভায় ককাসের টেকনোক্র্যাট সদস্য ও প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মেসবাহ কামাল বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক ব্যর্থতা প্রবল। এই ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে উঠবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, সাংবাদিক প্রণব সাহা, উন্নয়নকর্মী শঙ্কর পাল প্রমুখ।