সায়মা ওয়াজেদের উদ্যোগেই প্রতিবন্ধীরা আলোতে: তথ্যমন্ত্রী

কৃষি, প্রতিবন্ধিতা ও করোনা বিষয়ে দুটি গবেষণার ফল উপস্থাপন ও কৃষি সাংবাদিকতায় সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন, ১৯ ডিসেম্বর
ছবি: পিআইডি

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘আমাদের দেশে আগে প্রতিবন্ধীদের লুকিয়ে রাখা হতো। কিন্তু এখন বাবা–মায়েরা তাঁদের প্রতিবন্ধী সন্তানদের শিক্ষিত করে স্বাবলম্বী করার কথা ভাবেন। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য কন্যা সায়মা ওয়াজেদের বিশেষ উদ্যোগেই আজ প্রতিবন্ধীদের জন্য দেশে নানা কার্যক্রম গৃহীত হয়েছে। বিভিন্ন খাতে তাঁরা ভাতা পাচ্ছেন, বিভিন্ন বিষয়ে পুরস্কার পাচ্ছেন, অন্ধকার থেকে আলোতে আসছেন।’

রাজধানীতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন (কেআইবি) মিলনায়তনে আজ শনিবার এক অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কৃষি, প্রতিবন্ধিতা ও করোনা বিষয়ে দুটি গবেষণার ফল উপস্থাপন ও কৃষি সাংবাদিকতায় সম্মাননা প্রদানে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দ্য লেপ্রসি মিশন ইন্টারন্যাশনাল-বাংলাদেশ, ইকো কো-অপারেশন, নরেক এবং বাংলাদেশ কৃষক লীগ গবেষণা দুটি পরিচালনা করেছে।

কৃষিতে প্রতিবন্ধী মানুষের অবদানভিত্তিক সংবাদের জন্য দ্য লেপ্রসি মিশন ইন্টারন্যাশনাল-বাংলাদেশের পক্ষে সাংবাদিকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী। সংবাদপত্র বিভাগে পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন দৈনিক আমাদের সময়-এর এম এইচ রবিন, দেশ রূপান্তরের মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নিজামুল হক, ভোরের কাগজের শেখ মাহতাব হোসেন, বিজয় বাংলাদেশের মীর খায়রুল আলম এবং ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক রতন মালো। টেলিভিশন বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন চ্যানেল-২৪–এর হাসনাত রাব্বী, বাংলাদেশ টেলিভিশনের আফরিন জাহান, ডিবিসি টেলিভিশনের তাহসিনা সাদিক, যমুনা টেলিভিশনের রামিজ আহসান ও জিটিভির ফেরদৌস আরেফিন।

হাছান মাহমুদ বলেন, গত পাঁচ দশকে জনসংখ্যা আড়াই গুণ হয়েছে। প্রতিবছর দুই লাখ একর কৃষিজমি কমলেও কৃষি উৎপাদন বেড়েছে, যা বর্তমান সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের কারণেই সম্ভব হয়েছে। কৃষিজমি যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। পাশাপাশি নগরকৃষি ও ছাদকৃষির ওপরও জোর দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, সাধারণ সম্পাদক সাংসদ উম্মে কুলসুম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ সেবা বিভাগের পরিচালক মাহফুজ হোসেন মৃধা, ইকো কো–অপারেশনের হেড অব প্রোগ্রামস মো. আবুল কালাম আজাদ এবং দ্য লেপ্রসি মিশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর সলোমন সুমন হালদার।

সাম্প্রতিক গবেষণার বরাত দিয়ে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশের শতকরা ৮৬ জন শারীরিক ও কুষ্ঠ প্রতিবন্ধী মানুষ প্রত্যক্ষভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত। করোনা মহামারির সময়ে দেশের ৮৮ শতাংশ প্রতিবন্ধী মানুষের আয় কমে গেছে। পারিবারিক ব্যয় সংকোচনের জন্য এ সময়ে ২২ শতাংশ প্রতিবন্ধী মানুষ তাঁদের কন্যাসন্তানের বিয়ে দিয়েছেন।

মুঠোফোন অ্যাপে বাংলাদেশ বেতার
বাংলাদেশ বেতারের ৮১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার ‘বাংলাদেশ বেতার’ অ্যাপ উদ্বোধন করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ১৯৩৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ বেতার। মুঠোফোন অ্যাপ উদ্বোধনের মাধ্যমে বেতারের সব সম্প্রচার এখন সারা বিশ্বে মুঠোফোনে শোনা যাবে।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় বেতার ভবনে শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ বেতারের মহাপরিচালক হোসনে আরা তালুকদারের সভাপতিত্বে এ উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান, তথ্যসচিব খাজা মিয়া, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ। এ ছাড়া বেতারের সব কর্মকর্তা ও কলাকুশলীরাও অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী ‘বাংলাদেশ বেতার অ্যাপস’ এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের দেশব্যাপী সম্প্রচার উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যুগ, মুঠোফোনের ব্যবহার অনেক বেশি। মানুষ আগের মতো ঘরে-বাইরে আলাদা করে রেডিও শোনে না। হাতে হাতে মুঠোফোন। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পরই চিন্তা করেছি, বেতারকে মোবাইলের মধ্যে নিয়ে যেতে হবে, নইলে বেতারকে আবার জনপ্রিয় করে তোলা কঠিন হবে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পৃথিবীকে অবাক করে দিয়ে এই করোনা মহামারির মধ্যেও ধনাত্মক জিডিপি ধরে রেখে পৃথিবীর ২২টি দেশের অন্যতম সেরা স্থানে আসীন। অথচ বিএনপির নেতারা এই অভূতপূর্ব উন্নয়ন দেখেও দেখেন না। তাঁরা ক্রমাগত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার আর বিভ্রান্তি ছড়াতে গিয়ে নিজেরাই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছেন।