স্বাধীনতাকে হত্যা করতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা: তথ্যমন্ত্রী

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মহিলা শ্রমিক লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তব্য দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ঢাকা, ২৯ আগস্ট
ছবি: সংগৃহীত

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, শুধু ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারকে হত্যার উদ্দেশ্যেই নয়, বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও স্বাধীনতাকে হত্যার চক্রান্তেই ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মহিলা শ্রমিক লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। মন্ত্রী এ সময় ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে শহীদ জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ও তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, যাঁরা এ দেশের স্বাধীনতা চাননি, মুক্তিযুদ্ধের সময় যাঁরা পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, খন্দকার মোশতাকসহ সেই সব বর্ণচোরা ষড়যন্ত্রকারীরা এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।

বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে একটি অগ্রগতির উদাহরণ হয়ে উঠত, এশিয়ায় সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়ার আগে মানুষ বাংলাদেশের উন্নয়নের গল্প শুনত, কিন্তু তাঁকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি, উল্লেখ করেন মন্ত্রী। হাছান মাহমুদ বলেন, ‘স্বাধীনতার পর তিন কোটি গৃহহারা মানুষের একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে ধ্বংসস্তূপ থেকে তুলে দাঁড় করিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়, তখন দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৪ শতাংশ, যা আমরা চার দশক পর বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১৬-১৭ সালে অতিক্রম করতে পেরেছি।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যাতে হত্যার বিচার না হয়, সে জন্য ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল, জিয়া সেটাকে ১৯৭৯ সালে আইনে পরিণত করেন। একইভাবে ২০০২ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি অপারেশন ক্লিনহার্ট পরিচালনা করে প্রায় এক শ মানুষ হত্যা করে তার বিচার বন্ধেও ইনডেমনিটি দেয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে পাকিস্তানি ভাবধারা তৈরি করা হয়েছিল। পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করার, জাতীয় পতাকা ও সংগীত পরিবর্তন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, বাংলাদেশ বেতারের নাম পরিবর্তন করে রেডিও পাকিস্তানের আদলে রেডিও বাংলাদেশ করা হয়েছিল।

নারী উন্নয়ন বিষয়ে এ সময় মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে নারী অগ্রগতিতে অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছে। দেশে আজ নারীরা বিচারপতি, সচিব, জেনারেল হয়েছেন, যা আগে কেউ ভাবেননি। শেখ হাসিনাই সন্তানের পরিচয়ের ক্ষেত্রে মায়ের নাম উল্লেখ বাধ্যতামূলক করেছেন। কারণ, একজন মা কখনো সন্তানকে ছেড়ে যান না। অন্যদিকে বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে নিজের ও নিজের বেশভূষার উন্নয়ন ঘটালেও নারী উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেননি।

সভার আগে জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক রাহাত খানের জানাজায় অংশ নেন তথ্যমন্ত্রী।

এদিকে বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। বিজ্ঞপ্তি।