'অপতৎপরতা কি না' জানতে ঢাবি ছাত্রদল নেতাকে পুলিশে সোপর্দ

আলীমুজ্জামান বাবু। ছবি: সংগৃহীত
আলীমুজ্জামান বাবু। ছবি: সংগৃহীত

নির্বাচন ঘিরে কোনো ‘অপতৎপরতায় লিপ্ত কি না’ তা দেখতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের এক নেতাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জহুরুল হক হলের পাঠকক্ষে পড়তে গেলে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে মারধর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেন।

থানায় সোপর্দ হওয়া শিক্ষার্থীর নাম আলীমুজ্জামান বাবু৷ তিনি শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র৷ এদিকে ছাত্রদলের একটি সূত্র জানিয়েছে, রাত সাড়ে নয়টায় ধানমন্ডির স্টার কাবাবে খাবার খেতে গেলে সেখান থেকে ঢাবির সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নাহিদুজ্জামান শিপন ও আবদুর রহিম রনিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আলীমুজ্জামান বাবুর মাস্টার্স শেষ৷ এখন সে চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে৷ অন্য অনেকের মতো সে–ও প্রায়ই হলের পাঠকক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে পড়তে যায়৷ পড়াশোনার দিকে ঝুঁকে গিয়ে সে রাজনীতিতে এখন তেমন সক্রিয় নেই৷ আজ সে জহুরুল হক হলের পাঠকক্ষে পড়তে গিয়েছিল৷ সেখানে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে মারধর করে এবং পরে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে পুলিশে দেয়৷’

ছাত্রদলের নেতাকে পুলিশে সোপর্দ করার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসিফ তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘৩০ তারিখের সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা খোঁজখবর রাখছি, কেউ যেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এসে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিঘ্নিত করতে না পারে৷ বাবু জহুরুল হক হলের ছাত্র হলেও হলে কখনোই তার আনাগোনা ছিল না৷ সে কল্যাণপুরে একটি বাসায় থাকে। হঠাৎ হলে দেখায় তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, সে হলের কি না৷ সে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিতে থাকে৷ পরিচয় জানতে চাইলে তার প্রথম উত্তর ছিল, “আমি আওয়ামী লীগ করি”৷ এতে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় সাধারণ ছাত্ররা তাকে প্রক্টরিয়াল টিমের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করে৷’

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আলীমুজ্জামান বাবু কোনো ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত আছে কি না, তা দেখার জন্য তাকে থানায় দেওয়া হয়েছে৷ অপতৎপরতায় লিপ্ত না হয়ে থাকলে ছাত্রত্ব না থাকা সত্ত্বেও সে হলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কী করছে? তার তো এখানে আসার কোনো প্রয়োজন নেই, সুযোগও নেই৷ সে কোনো ছাত্রসংগঠনের সদস্য, সেটি বড় ব্যাপার নয়৷ ছাত্রত্ব নেই অথচ হলে অবস্থান করছে এবং হল প্রশাসনের কাছে তার গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হয়েছে, তাই তাকে থানায় দেওয়া হয়েছে৷’

ছাত্রত্ব না থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের অনেকে হলে থাকছেন উল্লেখ করলে প্রক্টর বলেন, হল প্রশাসন বিষয়টি দেখবে৷ হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রক্টরিয়াল বডি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সহযোগিতা চাওয়া হলে সবার ক্ষেত্রে একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান বলেন, ছাত্রদলের একজনকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তাঁরা যাচাই-বাছাই করে দেখছেন৷