'নূর ভাইর মতো ভালো মানুষ মন্ত্রী না হইলে হইবে কায়'

আসাদুজ্জামান নূর
আসাদুজ্জামান নূর

‘এত আশা নিয়া ভোট দিনো, তাও নূর ভাই মন্ত্রী হইল না কেনে? মনটা খিব খারাব, কোনো কিছুই ভালো নাগেছে না।’ কথাগুলো বলছিলেন রিকশাচালক আবু বক্কর সিদ্দিক (৪৫)। গতকাল সোমবার দুপুরে নীলফামারী জেলা শহরের মরাল সংঘ মোড়ে সহিদুলের চায়ের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে অন্য এক রিকশাচালকের সঙ্গে কথাগুলো বলছিলেন তিনি।

‘নূর ভাই তো মন্ত্রী হবে, সময় কী পার হয়া গেল। নূর ভাইর মতো ভালো মানুষ মন্ত্রী না হইলে হইবে কায়?’—আবু বক্করকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন অপর রিকশাচালক সাহেব আলী। নতুন মন্ত্রিসভায় সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের নাম না থাকার খবরে গত রোববার সন্ধ্যা থেকেই রিকশাচালক সিদ্দিকের মতো অনেকেই হতাশ হন।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে এসে নীলফামারী-২ (সদর) আসন থেকে টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর তিনি সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ৬৫ বছর পর নীলফামারী থেকে মন্ত্রী পেয়ে আনন্দিত হয়েছিলেন জেলাবাসী।

রামগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অনেক আশা ছিল সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়ের পাঁচ বছরের সফল মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর আবারও মন্ত্রিত্ব পাবেন। এলাকার উন্নয়নসহ গোটা দেশে আবারও সফলতার পরিচয় দেবেন। কিন্তু মন্ত্রিসভায় তাঁর জায়গা না হওয়ায় আমি যেমন মর্মাহত, এলাকার সব শ্রেণি–পেশার মানুষ মর্মাহত।’

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ভিশন-২০২১’–এর প্রধান সমন্বয়কারী ওয়াদুদ রহমান বলেন, ‘নূর ভাই নীলফামারী-২ আসনের চারবারের নির্বাচিত এমপি। প্রতিবার তিনি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সাম্প্রদায়িক দল জামায়াতের প্রার্থীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি সংস্কৃতিমন্ত্রীর দায়িত্বে থেকে সারা দেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনার সংস্কৃতি বিকাশে সফল হয়েছেন। তাঁর মতো একজন দক্ষ মানুষ মন্ত্রীর দায়িত্ব পেলে আবারও দক্ষতার পরিচয় দিতে পারবেন।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহমেদ বলেন, দেশ স্বাধীনের পর ২০১৪ সালে জেলা থেকে প্রথম মন্ত্রী হিসেবে আসাদুজ্জামান নূরকে তাঁরা পেয়েছিলেন। অনুন্নত জেলাটিকে গত পাঁচ বছরে তিনি উন্নয়নের পথে অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন। এলাকার মানুষের আশা ছিল তিনি আবারও মন্ত্রী হবেন। মন্ত্রিত্ব না পাওয়ার বিষয়টি এলাকার মানুষকে আশাহত করেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি তাঁদের আস্থা রয়েছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে জেলার মানুষের আশা–আকাঙ্ক্ষা তিনি পূরণ করবেন।