'হোলি আর্টিজান মামলার রায় জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকদের জন্য অশনিসংকেত'

যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওবায়দুল কাদের। যশোর ঈদগাহ ময়দান, ২৭ নভেম্বর। ছবি: এহসান-উদ-দৌলা
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওবায়দুল কাদের। যশোর ঈদগাহ ময়দান, ২৭ নভেম্বর। ছবি: এহসান-উদ-দৌলা

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলায় সাতজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত খুশির খবর। এই রায় জঙ্গি ও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকদের জন্য অশনিসংকেত।’

আজ বুধবার বিকেলে যশোর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। সম্মেলনে আগের কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারকে নিজ নিজ পদে বহাল রাখা হয়েছে। ওবায়দুল কাদের নতুন এই কমিটি ঘোষণা করেন।

এ নিয়ে শহিদুল ইসলাম দ্বিতীয় মেয়াদে সভাপতি ও শাহীন চাকলাদার তৃতীয় মেয়াদে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হলেন। প্রায় পৌনে পাঁচ বছর পর উৎসবমুখর পরিবেশে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

দলের ভেতরে বিভক্তির কথা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারা ঘরের ভেতর ঘর, মশারির ভেতর মশারি খাটাবেন না। কলহ-কোন্দল করে দলের ঐক্য বিনষ্ট করবেন না। দল ভারী করার জন্য সুবিধাবাদী স্বাধীনতাবিরোধীদের আওয়ামী লীগে টানবেন না। মাদক ব্যবসায়ী-দুর্নীতিবাজদের আওয়ামী লীগে ঠাঁই নেই।’

চলমান শুদ্ধি অভিযানের বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ঢাকার অ্যাকশন শিগগিরই সারা দেশে শুরু হবে। শেখ হাসিনার প্রথম টার্গেট ঘরের লোক। এ জন্য ঘর থেকে শুদ্ধি অভিযান শুরু করা হয়েছে। ঘরের লোককে শাস্তি দিয়ে পরকে শেখানোই হচ্ছে শেখ হাসিনার নীতি।’

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার আমলে আপন লোকজনেরও নিস্তার নেই। আবরার হত্যার সঙ্গে জড়িত সবাই কিন্তু ছাত্রলীগের কর্মী। তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচারও করা হবে।’

যশোর-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের ৩৮ কিলোমিটার সম্প্রসারণকাজের অগ্রগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যশোর-খুলনা জাতীয় মহাসড়কে সম্প্রসারণকাজের অগ্রগতি নিয়ে যশোরের মানুষের প্রশ্ন রয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করুন। কাজের মান যদি ভালো না হয়, তাহলে কিন্তু কনট্রাক্টর-ইঞ্জিনিয়ারদের খবর আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ মহাসড়কের কাজের অগ্রগতি ও মান নিয়ে অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন।’ এ ছাড়া যশোর শহরের মণিহার-চৌরাস্তা-দড়াটানা-পালবাড়ি-বিমানবন্দর সড়ক চার লেনে উন্নীত করার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বুধবার বেলা ১১টায় সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য। সম্মেলনে বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ, কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম কামাল হোসেন ও পারভীন জামান, সাংসদ স্বপন ভট্টাচার্য, ইসমাত আরা সাদেক, কাজী নাবিল আহমেদ, শেখ আফিল উদ্দীন, রণজিৎ কুমার রায় ও মো. নাসির উদ্দীন। জেলা কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদার।