মাঘ মাসে শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা

সরস্বতী প্রতিমা

সরস্বতী শুক্লবর্ণা, শুক্লবসনা, বীণাধারিণী ও চন্দ্রের শোভাযুক্ত রাজহংসবাহনা বিদ্যাদেবী। হিন্দুশাস্ত্র দেবী ভাগবতমতে, তিনি সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার স্ত্রী। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণমতে, লক্ষ্মী ও সরস্বতী দুজনই নারায়ণের স্ত্রী। সরস্বতী বর্ণনায় সাদা বর্ণের প্রাধান্য দেখা যায়, যা তাঁর শুদ্ধতার প্রতীক এবং স্বভাবে সাত্ত্বিক গুণের পরিচায়ক। দেবতা শিব ও বিষ্ণু পর্যন্ত তাঁকে শ্রদ্ধা করেন।

ঋগ্বেদের দুটি মন্ত্রে সরস্বতীর উল্লেখ আছে। প্রাচীন ভারতে সরস্বতী নামে একটি নদী ছিল বলে জানা যায়। তবে এই নদী কোন পথে প্রবাহিত হতো, তার সন্ধান পাওয়া যায়নি; তাই একে সাধারণত গুপ্তগামিনী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পবিত্র ভূমি প্রয়াগে গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতীর মিলনস্থল সঙ্গম নামে পরিচিত। ধর্মীয় দিক থেকে এই সঙ্গমস্থান হিন্দুদের কাছে খুবই পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। তাদের বিশ্বাস, জীবনে অন্তত একবার প্রয়াগ দর্শন করা উচিত।

আরও পড়ুন

এভাবে সরস্বতী দেবী ও নদী হিসেবে দ্বৈত ভূমিকায় অবতীর্ণ। তাঁর নানা নাম—বীণাপাণি, ভারতী ইত্যাদি। তিনি ভক্তদের ভেতর থেকে অজ্ঞানতা দূর করে তাদের জ্ঞান দান করেন। তাঁর আশীর্বাদ পেলে মূর্খও জ্ঞানী হতে পারে—ভক্তদের মধ্যে এ বিশ্বাস প্রচলিত। সরস্বতী কবিদের ইষ্টদেবতা। কালিদাসকে বলা হয় সরস্বতীর বরপুত্র।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশের হিন্দু শিক্ষার্থীরা মাঘ মাসের শ্রীপঞ্চমীতে (শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে) সরস্বতী পূজা করে। অধিকাংশ হিন্দু পারিবারিকভাবেও সরস্বতী পূজা করে থাকে।পূজার সময় পবিত্র গ্রন্থ, পাঠ্যপুস্তক এবং ছাত্রদের কলম-পেনসিল দেবীর আশীর্বাদ লাভের আশায় পূজাবেদির ওপর রাখা হয়। এ উপলক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে।

সূত্র: সরস্বতী, যার যা ধর্ম, মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, প্রথমা প্রকাশন ২০১৪

আরও পড়ুন