কে জান্নাতে যাবে আর জাহান্নামে, তা বলতে নেই

এ ঘটনা হজরত কাতাদা (রা.)–কে নিয়ে। কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা অল্পতেই অন্যদের নিয়ে বিচার করে ফেলেন। যেমন অমুক এই কাজ করেছে, তাহলে সে জান্নাতে যাবে। আবার বিপরীতও বলতে পারেন। অথচ মহানবী (সা.)–এর সুন্নাহ থেকে জানা যায়, কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামে যাবে—এর ফয়সালা শুধু আল্লাহ তাআলা দিতে পারেন। এ ব্যাপারে আমাদের কোনো জ্ঞান দেওয়া হয়নি। আমরা শুধু এতটুকু বলতে পারি, এ কাজগুলো করলে জান্নাতে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি এবং এ কাজ করলে জাহান্নামে যাওয়ার আশঙ্কা বেশি। একজন ব্যক্তি আসলেই জান্নাতে অথবা জাহান্নামে যাবে কি না, এ বিষয়ে একমাত্র আল্লাহ ভালো জানেন।

হজরত কাতাদা (রা.) বলেন, ‘এই যুগের মানুষদের কী হয়েছে যে তারা একে অপরকে জান্নাতি অথবা জাহান্নাম সাব্যস্ত করে ফেলছে। অথচ তাকে যদি নিজের সম্পর্কে একই প্রশ্ন করা হয়, সে কিছুই বলতে পারবে না। অন্যদের নিয়ে সে ঠিকই বলতে পারে।’

আরও পড়ুন

কাতাদা (রা.) বলেন, ‘এসব মানুষ, যারা অপরকে নিয়ে এসব কথা বলতে পছন্দ করে, আল্লাহর প্রেরিত নবী-রাসুলগণও কখনো এই সাহস দেখাননি।’

হজরত নূহ (আ.) তাঁর জাতিকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, ‘তিনি জবাব দিলেন, তারা যা করছে, সে ব্যাপারে আমার কতটুকুই–বা জ্ঞান আছে। তাদের হিসাব নেওয়া তো আমার পালনকর্তার কাজ; যদি তোমরা বুঝতে।’ (সুরা শুয়ারা, আয়াত: ১১২–১১৩)

সুরা হুদের ৮৬ নম্বর আয়াতে আছে, শুয়াইব (আ.) তাঁর জাতিকে বলেছিলেন, ‘আল্লাহর দেওয়া উদ্বৃত্ত তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও। তবে আমি তোমাদের ওপর কোনো পর্যবেক্ষণকারী নই।’

অর্থাৎ শুয়াইব (আ.) তাঁর জাতিকে বলছিলেন, তোমরা সৎভাবে উপার্জন করবে। কিন্তু আমি এরপরও কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারি না—কে জান্নাতে যাবে আর কে জাহান্নামে যাবে। আল্লাহ তাআলা হলেন আল হাকিম তথা মহাবিচারক। তিনিই ভালো জানেন কে জান্নাতে যাওয়ার যোগ্য আর কে জাহান্নামে যাবে।

আরও পড়ুন

আমাদের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–কেও আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আর কিছু তোমার আশপাশের মুনাফেক এবং কিছু মদিনাবাসীও মুনাফেকিতে লিপ্ত। তুমি তাদের জানো না; আমি তাদের জানি। আমি তাদের কঠিন শাস্তি দান করব দুবার, তারপর তাদের নিয়ে যাওয়া হবে মহান শাস্তির দিকে। (সুরা তওবা, আয়াত: ১০১)

কাতাদা (রা.) এই আয়াতের ভিত্তিতে মন্তব্য করেন, ‘কেউ যদি আসলেই মানুষের পরকালীন পরিণতি সম্পর্কে জানতেন, তিনি হতেন আমাদের নবী (সা.)। আল্লাহ যেহেতু তাকে এ সুযোগ দেননি। সুতরাং আমাদের এ ব্যাপারে কিছু বলার যোগ্যতা নেই।’

এর মানে এটা নয় যে আমরা মানুষকে সৎ পথে ডাকব না। আমাদের পরিষ্কার করে দিতে হবে, এ কাজগুলো করা নিষিদ্ধ। এগুলো করলে জান্নাতে যাবে এবং এগুলো করলে জাহান্নামে যাবে। কিন্তু আসলেই কে জান্নাতে যাচ্ছে আর কে জাহান্নামে যাচ্ছে, এ ব্যাপারে কিছু বলা যাবে না।

অনুবাদ: সাজিদ আল মাহমুদ

আরও পড়ুন