ঈদুল ফিতরে আমরা কী করব

ঈদুল ফিতরের আলোচনা

ঈদুল ফিতর

ঈদুল ফিতর মুসলমানদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের একটি। ‘ঈদ’ অর্থ উৎসব বা আনন্দ। ‘ফিতর’ অর্থ বিদীর্ণ করা, উপবাস ভঙ্গ করা, স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়া।

পবিত্র রমজানে মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা ও সংযম পালনের পর শাওয়াল মাসের ১ তারিখে মুসলমানদের স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরে যাওয়ার দিনটিই ঈদুল ফিতর। পবিত্র রমজানের এক মাস কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য—এসব রিপুর চর্চা থেকে নিজেকে বিরত রাখার সাধনা চলে।

হাদিসে ঈদুল ফিতর

হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর মদিনায় হিজরতের পরই ঈদুল ফিতর উৎসব পালন শুরু হয়। হজরত আনাস (রা.) বর্ণিত একটি হাদিস থেকে জানা যায় যে নবী করিম (সা.) মদিনায় এসে জানলেন, মদিনাবাসী বছরের দুটি দিনে আনন্দ-উল্লাস করে থাকে। জিজ্ঞাসা করে তিনি আরও জানলেন, ইসলামপূর্ব যুগ থেকেই এই দুটি দিনকে তারা উৎসবের দিন হিসেবে পালন করে। রাসুল (সা.) তাঁদের বললেন, আল্লাহ তোমাদের এই দুইটি দিনের বদলে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন। দিন দুটি হলো ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর।

আরও পড়ুন

পবিত্র রমজানের পুরো এক মাস রোজা এবং সংশ্লিষ্ট ইবাদত ও বিধিনিষেধ পালনের পর শাওয়াল মাসের পয়লা তারিখে ঈদ উৎসব পালিত হয়। এ দিনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে জামাতে ঈদের নামাজ আদায়, গরিব-দুঃখীদের মধ্যে ফিতরা বিতরণ এবং ভালো খাওয়া–দাওয়ার আয়োজন।

আরও পড়ুন

ঈদুল ফিতরে ফিতরা আদায়

ঈদুল ফিতর উৎসবের একটি তাৎপর্যময় অঙ্গ হলো ফিতরা বিতরণ। রোজার সময় সংযম সাধনায় কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি ঘটে থাকলে তা সংশোধন এবং সমাজের সর্বস্তরের লোক যাতে উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পারে, সে জন্য গরিব-দুঃখীদের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট হারে সদকায়ে ফিতরা বিতরণ করতে হয়।

প্রত্যেক সমর্থ্য মুসলমানের জন্য ফিতরা দেওয়া ওয়াজিব। মাথাপিছু কত টাকা ফিতরা দিতে হবে, তা আগেই রাষ্ট্র কিংবা সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করে দেয়। নিয়ম হলো ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়ার আগেই এই ফিতরা পরিশোধ করতে হবে। তারপর ঈদগাহ কিংবা তার অভাবে বড় মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়। ফিতরা দেওয়া ছাড়াও গরিবদের সাধ্যমতো খাদ্য ও বস্ত্র ইত্যাদি দেওয়া উত্তম।

আরও পড়ুন

ঈদুল ফিতরের নামাজে অতিরিক্ত ছয় তকবিরসহ দু’রাকাত ওয়াজিব নামাজ পড়তে হয়। নামাজের শেষে ইমাম সাহেব পর পর দুটি খুতবা পড়েন। নামাজ শেষে মুসলমানরা উচ্চ–নিচ, ধনী–গরিব ও বয়সনির্বিশেষে পরস্পরের সঙ্গে কোলাকুলি, সালাম ও কুশল বিনিময় করে। এ ছাড়া অনেকে এ দিন আত্মীয়স্বজন ও পুণ্যবানদের কবরও জিয়ারত করে।