রাসুল (সা.) হুনাইন যুদ্ধ থেকে ফিরছিলেন। দেখলেন এক কিশোর বিলালের (রা.) আজান ব্যঙ্গ করছে। কিশোরটির নাম আবু মাহজুরা। নামাজ শেষে নবীজি (সা.) কিশোরদলকে ডাকলেন। জিজ্ঞেস করলেন, কে আজান দিয়েছ? আবার আজান দাও। সবাই ভয়ে তটস্থ। ওরা একে একে আজান দিল। ভয়ে ভয়ে আবু মাহজুরাও আজান দিলেন।
রাসুল (সা.) তাকে সুন্দরভাবে আজান দেওয়া শেখালেন। ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার; আশহাদু আল্লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল্লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ; আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ।’
(অর্থ: আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ নেই; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল)
তারপর বললেন, আবার দীর্ঘস্বরে বলো। ‘আশহাদু আল্লাইলা-হা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ; আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসুলুল্লাহ; হাইয়্যা আলাস্ সালাহ, হাইয়্যা আলাস্ সালাহ; হাইয়্যা ’আলাল ফালাহ, হাইয়্যা আলাল ফালাহ; আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ।’
(অর্থ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল; আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল। সালাতের জন্য এসো, সালাতের জন্য এসো। কল্যাণের জন্য এসো, কল্যাণের জন্য এসো। আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ নেই।)
এর আগে তিনি কখনো কাউকে আজান দেওয়া শিখিয়েছেন বলে জানা যায় না। শেখানোর শেখানো হয়ে গেলে তাকে কিছু অর্থকড়ি দিলেন। আবু মাহজুরার কণ্ঠস্বর ছিল সুমধুর। তিনি নিজেই বর্ণনা করেন, ‘সর্বশেষে ছিলাম আমি। আমি আজান দেওয়ার পর বললেন, আসো, তারপর আমাকে তাঁর সামনে বসালেন এবং আমার কপালে হাত বুলিয়ে তিনবার বরকতের দোয়া করলেন।’
আবু মাহজুরা মুসলমান হলেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘যাও, মসজিদে হারামে আজান দাও।’ শুধু আবু মাহজুরা (রা.) নয়, তাঁর বংশধর কয়েকশ বছর পর্যন্ত ইসলামের সর্বোত্তম মসজিদ, কাবাঘরের মুয়াজ্জিন ছিলেন।
তথ্যসূত্র: সুনানে আন নাসাঈ: ৬৩২, ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা: ৩/৭৮