‘আত-তাহিয়্যাতু’র মর্মবাণী কী

নামাজে দুই রাকাত বা চার রাকাতের বৈঠকে আমরা যে ‘আত-তাহিয়্যাতু’ পাঠ করি, তার আরবি নাম হলো তাশাহ্‌হুদ। তাশাহ্‌হুদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দোয়া, যা নামাজের প্রত্যেক বৈঠকে পড়তে হয়। তাশাহুদ বা আত-তাহিয়্যাতু হচ্ছে মহান আল্লাহ ও মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর একটি কথোপকথন; যা মিরাজের রাত্রিতে সংঘটিত হয়।

নামাজে যে দোয়াটি পড়া হয় এর অর্থ ও মর্ম উপলব্ধি করা প্রয়োজন।

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমরা যখন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পেছনে নামাজ আদায় করতাম, তখন আমরা বলতাম, ‘আসসালামু আলা জিবরিলা ওয়া মিকাইলা ওয়া আসসালামু আলা ফুলান ওয়া ফুলান।’ তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘আল্লাহ নিজেই তো সালাম। তাই যখন তোমরা কেউ নামাজ আদায় করবে, তখন সে যেন তাশাহহুদ পড়ে । কেননা, যখন তোমরা এই দোয়া পড়বে, তখন তা আসমান ও জমিনে অবস্থানকারী আল্লাহর সব নেকবান্দার কাছে পৌঁছে যাবে।’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘এরপর বান্দার কাছে যা ভালো লাগে সে দোয়া পড়ে আল্লাহর দরবারে আকুতি মিনতি জানাবে।’ (বুখারি: ৪০২; মুসলিম: ৬,২৬৫)

আরও পড়ুন

তাশাহহুদ

তাশাহহুদ উচ্চারণ: আত্তাহিয়্যাতু লিল্লাহি ওয়াস সালাওয়াতু ওয়াত ত্বাইয়্যিবাতু, আসসালামু আলাইকা আইয়্যুহান নাবিয়্যু ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু; আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহিন। আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসুলুহু।’

অর্থাৎ, সমস্ত মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক ইবাদত আল্লাহর জন্য। হে নবী, আপনার প্রতি সালাম এবং আল্লাহর রহমত ও বরকত নাজিল হোক। সালাম আমাদের প্রতি এবং আল্লাহর নেক বান্দাদের প্রতি। আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নাই এবং আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, নিশ্চয়ই মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর বান্দা এবং রাসুল। (বুখারি, হাদিস: ৬২৬৫)

আরও পড়ুন

তাশাহুদ পড়ার নিয়ম

নামাজি ব্যক্তি নামাজের মধ্যে যখন মৌখিকভাবে একত্ববাদের সাক্ষ্য দেয়, তখন তার আঙুলও এই সাক্ষ্য দেবে। তাই ‘আশহাদু আল্লা… ইলাহা’ পর্যন্ত পৌঁছবে, তখন বৃদ্ধাঙ্গুলি ও মধ্যমা আঙুল মিলিয়ে গোল বৃত্ত বানাবে এবং তর্জনী আঙুল দ্বারা ইশারা করবে। আর কনিষ্ঠা ও অনামিকা হাতের তালুর সঙ্গে যুক্ত থাকবে। ‘ইল্লাল্লাহ’ বলার পর শাহাদত আঙুল নিচু করবে। ইশারা শেষ করে আঙুল আর নাড়া চড়া করবে না। তবে অন্য আঙুলগুলো আপন অবস্থায় নামাজের শেষ পর্যন্ত থাকবে। (সহিহ মুসলিম: ১,৩৩৬-১,৩৩৭; সহিহ ইবনে হিব্বান: ৫/২৭০, সুনানে নাসায়ী কুবরা: ১,১৯৩, আবু দাউদ: ৯৮৯)

আরও পড়ুন