আল্লাহ হজের যে প্রতিদান দেবেন

পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা পালনের উদ্দেশে্য ও পাপমুক্তির আকুল বাসনায় সেখানে সমবেত হন লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমান। মহান আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ চেয়ে মোনাজাত করেন তাঁরা l ছবি: রয়টার্স

জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২৭ জুন হজ হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৩ হাজার হজযাত্রী এবার হজ পালন করবেন। হজ সাদামাটা পাঁচটি দিনের বিষয় নয়। এই পাঁচ দিন যদি আপনি হজের ফিকাহ অনুযায়ী আপনাকে সবকিছু সঠিকভাবে পালন করতে হবে, হজের করণীয় ছাড়া অন্য কাজে লিপ্ত হওয়া যাবে না, কী করছেন এবং কেন করছেন, তা উপলব্ধি করে সব আচারবিধি পালন করতে হবে। এই হজের প্রতিদান আল্লাহ কী দেবেন?

আবু হুরায়রা (রা.)–র হজ সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এক ওমরাহ (থেকে) অন্য ওমরাহর পর্যন্ত মধ্যবর্তী সব গুনাহকে মুছে দেয়। আর মাবরুর হজের একমাত্র প্রতিদান হলো জান্নাত। (বুখারি, হাদিস: ১,৬৮৩)

আরও পড়ুন

বুখারির বর্ণনায় আছে যে হজরত আয়েশা (রা.)–র বর্ণনায় আছে যে তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা দেখছি জিহাদ সর্বোত্তম আমল। আমরাও জিহাদে যেতে চাই। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, (তোমাদের জন্য) সর্বোত্তম জিহাদ হলো হজে মাবরুর। (বুখারি, হাদিস: ১৫২০)

মহানবী (সা.)–এর সাহাবী আমর ইবনুল আস (রা.) একবার শয্যাশায়ী। তাঁর ছেলে বলল, আপনি একজন মুমিন। রাসুলুল্লাহ (সা.) আপনাকে সুসংবাদ দিয়েছেন, সেখানে আপনি মৃত্যুর আগে এভাবে কান্নাকাটি করছেন কেন?

তিনি দেয়ালের দিকে মুখ করে শুয়ে ছিলেন। ছেলের দিকে মুখ ফিরিয়ে তিনি বললেন, আমি নিজেকে তিনটি অবস্থায় পেয়েছি। এমন একটা সময় ছিল, যখন আমি আল্লাহর রাসুল (সা.) ছাড়া আর কারও প্রতি রাগান্বিত, ক্রোধান্বিত ছিলাম না। আমার অন্তরে তাঁর ওপর ক্ষমতাশালী হয়ে তাঁকে শেষ করে ফেলার সুতীব্র ইচ্ছা চেপে বসেছিল। সেটিই আমি সবচেয়ে বেশি করে চাইতাম। ঘুমে, জাগরণে আমি সব সময় শুধু এই-ই ভাবতাম। কিন্তু এরপর আল্লাহ আমার অন্তরে ইসলামের প্রতি ভালোবাসা ঢেলে দেন। আমি নবীজি (সা.)–এর কাছে গিয়ে বললাম, হে মুহাম্মদ, আমি মুসলিম হতে চাই! আপনার হাত বাড়িয়ে দিন, আমি আপনার কাছে বায়াত নেব। কিন্তু মুহাম্মদ (সা.) যখন হাত সামনের দিকে বাড়ালেন, তখন আমি আমার হাত গুটিয়ে নিলাম। নবীজি জিজ্ঞেস করলেন, কী হয়েছে?

আরও পড়ুন

—আমার একটি শর্ত আছে।

—কী শর্ত?

—আমাকে ক্ষমা করে দেওয়া হোক, এটাই আমার শর্ত।

আমর ইবনুল আস (রা.) জানতেন যে তিনি অতীতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যা যা করেছিলেন, তা তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। তাই তিনি নিশ্চিত হতে চাইছিলেন যেন নবীজি (সা.) তাঁকে তাঁর অতীতের কার্যকলাপের জন্য দোষী না করেন।

নবীজি (সা.) বললেন, ‘ও আমর, তুমি কি জানো না যে ইসলাম তার আগের সব গুনাহ মুছে দেয়, হিজরত তার আগের সব গুনাহ মুছে দেয়, আর হজ তার আগের সব গুনাহ মুছে দেয়?’

হাদিসে আছে, হজ ও ওমরাহ পালনকারীরা আল্লাহর মেহমান। তাঁরা দোয়া করলে তা কবুল হয়ে যায়, গুনাহ থেকে মাফ চাইলে তা মাফ করে দেওয়া হয়। (ইবনে মাজাহ, ২৮৯২)

আরও পড়ুন