আসিয়া (আ.): আল্লাহর পথে উৎসর্গিত জীবন

সে-যুগের সর্বোন্নত প্রাসাদে বসবাস করতেন তিনি। অগুনতি চাকর-চাকরানি বেষ্টিত হয়ে থাকতেন। জীবন ছিল ভোগ বিলাস ও প্রাচুর্যের জৌলুশে চাকচিক্যময়। এই মহীয়সী নারী হলেন আসিয়া বিনতে মুযাহিম (আ.) ।

তিনি ছিলেন ফেরাউনের স্ত্রী। রাজমহলে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ নিরাপত্তাপ্রাপ্ত ও সুরক্ষিত।

তাঁর হৃদয়ে হেদায়েতের আলো উদ্ভাসিত হলো। নবী মুসা (আ.)-এর ওপর তিনি ইমান আনয়ন করলেন। এবং তিনি হয়ে উঠলেন একজন সত্যিকার মুমিন, ফেরাউনের প্রাসাদের অন্ধকারের প্রদীপ্ত মশাল।

তিনি সে-যুগের জাহিলি ব্যবস্থাপনাকে চ্যালেঞ্জ করলেন। যেই ব্যবস্থাপনার নেতৃত্বে ছিলেন তার স্বামী, যুগের ফেরাউন। কিন্তু অন্তর ইমানের আলোয় উদ্ভাসিত হওয়ার হর তিনি ভোগ বিলাসের জীবন, চাকর-বাঁদির এবং কোনো বিপদের পরোয়া করেননি। ফলে আল্লাহ তাকে সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী করেছেন এবং পবিত্র কোরআনে তাঁর আলোচনা এনেছেন। এমনকি তাকে ইমানদারদের সামনে উদাহরণ হিসেবে হাজির করেছেন।

আরও পড়ুন

ফেরাউন-পত্নী হজরত আসিয়ার(আ.) দৃষ্টান্ত বর্ণনা করে কোরআনে বলা হয়েছে: ‘সে বলল, হে আমার পালনকর্তা, বেহেশতে আপনার সন্নিকটে আমার জন্য একটি ঘর বানিয়ে দিয়েন। আমাকে ফেরাউন ও তার দুষ্কর্ম থেকে উদ্ধার করুন এবং আমাকে জালিম সম্প্রদায় থেকে মুক্তি দিন।’ (সুরা তাহরিম, আয়াত: ১১)

 তফসিরকারকগণ আয়াতের ব্যাখ্যায় লিখেছেন, হজরত আসিয়া (আ.) পরকালকে পার্থিব জীবনের ওপর প্রাধান্য দিয়েছেন। রাসুল (সা.) সেই সকল মহীয়সী পুণ্যবতী নারীদের সম্পর্কে আলোচনা করেছেন, তিনি ছিলেন ইমান পরিপূর্ণ করার বিবেচনায় তাদের অন্যতম।

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘অনেক এমন পুরুষ রয়েছেন যারা পরিপূর্ণতার স্তরে উপনীত হয়েছেন (অর্থাৎ নবী-রাসুলগণ)। কিন্তু নারীদের মধ্যে একমাত্র ফেরাউনের স্ত্রী আসিয়া (আ.) ও মরিয়ম বিনতে ইমরান (আ.)ছাড়া কেউ পরিপূর্ণতার স্তরে পৌঁছতে পারেননি। আর আয়েশার (রা.) শ্রেষ্ঠত্ব নারীদের ওপর তেমন, অন্যান্য খাবারের ওপর সারিদের (আরবের তখনকার জনপ্রিয় খাবার)। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,১৪৩; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,৩৪২; সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৪,৩৮১; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২০৮)

আরও পড়ুন