কোরআন কেন আরবি ভাষায়

পবিত্র কোরআন আরবি ভাষায় নাজিল হয়েছে। এর পেছনে যে গভীর তাৎপর্য রয়েছে, কোরআনের বিভিন্ন আয়াতেই তার ব্যাখ্যা করেছে।

মহানবী (সা.)–এর সম্প্রদায়ের ভাষা

মহানবী (সা.) আরবের মক্কায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর প্রথম শ্রোতা ছিলেন মক্কা ও তার আশপাশের আরব সম্প্রদায়। তাই তাদের কাছে আল্লাহর বাণী স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কোরআন আরবি ভাষাতেই নাজিল হয়। কোরআনে আছে, ‘আমি প্রত্যেক রাসুলকে তার সম্প্রদায়ের ভাষায় পাঠিয়েছি, যাতে সে তাদের কাছে বাণী স্পষ্টভাবে পৌঁছে দিতে পারে।’ (সুরা ইব্রাহিম, আয়াত: ৪)

কোরআনের আরেকটি আয়াতে আছে, ‘নিশ্চয়ই আমি এটিকে আরবি কোরআন করেছি, যাতে তোমরা বুঝতে পারো।’ (সুরা জুখরুফ, আয়াত: ৩)

এই আয়াত স্পষ্ট করে, প্রত্যেক নবী তাঁর সম্প্রদায়ের ভাষায় বাণী নিয়ে এসেছেন, যাতে মানুষ সহজে তা বুঝতে পারে। মক্কার লোকদের জন্য আরবি ছিল সবচেয়ে উপযুক্ত মাধ্যম।

কোরআন আরবি ভাষায় না হলে মক্কার লোকেরা এর বিরোধিতা করত। তারা প্রশ্ন তুলত যে, কেন একজন আরব রাসুলের কাছে অনারবি ভাষায় কিতাব নাজিল হলো।
আরও পড়ুন

মক্কা ও আশপাশের লোকদের সতর্ক করা

কোরআনের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল মক্কা ও তার আশপাশের মানুষকে সতর্ক করা এবং তাদের আল্লাহর পথে আহ্বান করা। এ বিষয়ে কোরআন বলে, ‘এভাবেই আমি তোমার প্রতি আরবি কোরআন নাজিল করেছি, যাতে তুমি মক্কা ও তার আশপাশের লোকদের সতর্ক করতে পারো এবং সেই সমবেত হওয়ার দিন সম্পর্কে সতর্ক করতে পার, যাতে কোনো সন্দেহ নেই—একদল থাকবে জান্নাতে, আরেক দল থাকবে জাহান্নামে।’ (সুরা আশ-শুরা, আয়াত: ৭)

এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, কোরআন আরবি ভাষায় নাজিল হওয়া ছিল মক্কার মানুষের কাছে বাণী পৌঁছানোর একটি কৌশলগত পদক্ষেপ।

কোরআন বলে, ‘এভাবেই আমি তোমার প্রতি আরবি কোরআন নাজিল করেছি, যাতে তুমি মক্কা ও তার আশপাশের লোকদের সতর্ক করতে পারো।’
(সুরা আশ-শুরা, আয়াত: ৭)
আরও পড়ুন

কোরআন অনারবি হলে প্রতিক্রিয়া

কোরআন আরবি ভাষায় না হলে মক্কার লোকেরা এর বিরোধিতা করত। তারা প্রশ্ন তুলত যে, কেন একজন আরব রাসুলের কাছে অনারবি ভাষায় কিতাব নাজিল হলো। কোরআন এই সম্ভাব্য আপত্তির জবাবে বলে: ‘যদি আমি এটিকে অনারবি কোরআন করতাম, তবে তারা বলত, ‘কেন এর আয়াতগুলো আমাদের ভাষায় বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হলো না? এ কি অনারবি ভাষায় আর আরব রাসুল?’ বলো, ‘যারা ঈমান এনেছে, তাদের জন্য এটি হিদায়াত ও শিফা।’ (সুরা ফুসসিলাত, আয়াত: ৪৪)

এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, আরবি ভাষায় কোরআন নাজিল হওয়া ছিল মানুষের মনের সন্দেহ দূর করার জন্যও জরুরি।

আরও পড়ুন