তাজিয়া ইমাম হোসেন (রা.)–র কবরের প্রতিকৃতির নাম

প্রতীকি ছবি

আরবি তাজিয়া শব্দের অর্থ শোকের প্রকাশ। শিয়া সম্প্রদায় মহররম মাসের প্রথম ১০ দিন কারবালার ঘটনা উপলক্ষে শোক পালন করে। ইমাম হোসেন (রা.)–এর কবরের এই প্রতিকৃতির নামই হলো তাজিয়া। পবিত্র কোরআনের কোথাও শব্দটি পাওয়া যায় না। তবে মৃত ব্যক্তির বিয়োগবিধুর আত্মীয়বর্গের সঙ্গে সমবেদনা জ্ঞাপন প্রসঙ্গে এ শব্দ পাওয়া যায়।

শিয়াদের মধ্যে এই ‘তাজিয়া’ শব্দ দিয়ে প্রথমত শাহাদাতপ্রাপ্ত ইমামদের জন্য শোক প্রকাশ বোঝায়, বিশেষত ইমাম হোসেন (রা.)-এর জন্য শোক প্রকাশকে বোঝায়। শিয়া মতবাদের উদ্ভব ইরাক ও ইরানে হলেও সেখানে মহররমের শোকমিছিলে তাজিয়া বহন করা হয় না। বাংলাদেশে মোগল আমলে, বিশেষত শাহ সুজা (১৬৩৯-৫৯) বাংলার সুবেদার থাকাকালে এ অঞ্চলে শিয়াদের প্রভাব বৃদ্ধি পায়। ঢাকার নায়েব-নাজিমদের অধিকাংশই ছিলেন শিয়া। সে সময় হিজরি ১০৫২ সনে (১৬৪২ খ্রি.) সৈয়দ মীর মুরাদ ঢাকায় হোসেনি দালান নির্মাণ করেন।

আরও পড়ুন

একই সময়ে দেশের অন্যান্য স্থানেও যেমন মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, অষ্টগ্রাম, সৈয়দপুর, সিলেট ইত্যাদি স্থানে ইমামবাড়া নির্মিত হয়। সাধারণ তাজিয়া মিছিলে বহন করা তাজিয়া কাঠ, কাগজ, সোনা, রুপা, মারবেল পাথর ইত্যাদি দিয়ে তৈরি করা হয়। তবে ঢাকার হোসেনি দালানের তাজিয়াটি কাঠ ও রুপার আবরণ দিয়ে তৈরি করা হয়।

তাজিয়া মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বুক চাপড়ে ও জিঞ্জির দিয়ে পিঠের ওপর আঘাত করে নিজেদের রক্তাক্ত করেন। কয়েকজন লাঠি ঘোরাতে ঘোরাতে ও তরবারি চালাতে চালাতে অগ্রসর হন। ওই সময় দুটি শিবিকাসহ অশ্বারোহী সৈন্যের সাজে কিছু লোক মাতম করতে করতে অগ্রসর হন এবং তাঁদের পেছনে একদল গায়ক মর্সিয়া গাইতে থাকে। তারপর থাকে হোসেন (রা.)-র সমাধির প্রতিকৃতি। এভাবে মিছিলটি অগ্রসর হয় এবং পূর্বনির্ধারিত স্থানে গিয়ে তা শেষ হয়।

আরও পড়ুন