বিয়ের আগে মেয়েকে মা

ইমামা বিনতে হারেস ছিলেন আরবের এক বুদ্ধিমতী নারী। তিনি তার মেয়ে উম্মে আয়াস বিনতে আউফের বিবাহের সময় অমূল্য কিছু উপদেশ দেন, যা ইতিহাসে অক্ষয় হয়ে আছে।

 তিনি বলেন: আমার প্রিয় মেয়ে, অচিরেই তুমি এই ঘরকে বিদায় জানাবে যেখানে তুমি বেড়ে উঠেছ, বড় হয়েছ। যেখানে তুমি এক পা-দু পা করে হাঁটতে শিখেছ। পিতার সম্পদ আছে বলে যদি নারীর জন্য স্বামীর প্রয়োজন না হতো, তাহলে তুমি হতে সবচেয়ে ধনী মেয়ে। কিন্তু নারীকে পুরুষ এবং পুরুষকে নারীর জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। তোমাকে আমি দুটি করে দশটি কথা বলছি।

প্রথম ও দ্বিতীয় কথা হলো, নিজের জীবনসঙ্গীর সঙ্গে অল্পে তুষ্টির জীবন যাপন করবে। তার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে এবং তার প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে।

আরও পড়ুন

তৃতীয় ও চতুর্থ কথা হলো, এমনভাবে থাকবে যেন তোমাকে সুন্দর দেখায় এবং চমৎকার ঘ্রাণ পাওয়া যায়। তার দৃষ্টি যেন তোমার এমন কিছুতে না পড়ে, যা দেখতে অসুন্দর। তার নাকে যেন তোমার সুঘ্রাণ পৌঁছায়।

 পঞ্চম ও ষষ্ঠ কথা হলো, তার খাওয়া ও ঘুমের সময়ের প্রতি খেয়াল রেখো, যেন তার চিত্ত প্রশান্ত থাকে। মনে রাখবে, অধিক ক্ষুধা ক্রোধের জন্ম দেয়। অশান্তি আর অস্থিরতা মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তোলে।

 সপ্তম ও অষ্টম কথা হলো, তার ভৃত্য ও সন্তানের প্রতি লক্ষ্য রাখবে এবং তার সম্পদের হেফাজত করবে। তার সম্পদের হেফাজত করলেই প্রমাণ হবে যে, তুমি তাকে কামনা করো। ভৃত্য ও সন্তানদের প্রতি তোমার খেয়াল বোঝাবে যে, তোমার মধ্যে শৃঙ্খলার গুণ রয়েছে।

 নবম ও দশম কথা হলো, তার কোনো গোপন বিষয় প্রচার করবে না এবং কখনো তার কোনো নির্দেশ অমান্য কোরো না। গোপন বিষয় প্রকাশ করার কারণে তুমি তার যন্ত্রণা থেকে নিরাপদ থাকবে না। আর তুমি তার নির্দেশ অমান্য করলে তোমার প্রতি তার অন্তরে ঘৃণা বাড়তে থাকবে।

 শেষ কথা হলো, আমার মেয়ে, যখন সে বিষণ্ন ও চিন্তাগ্রস্ত থাকবে তার সামনে আনন্দ প্রকাশ কোরো না। আর যখন সে আনন্দিত থাকবে তার সামনে চেহারা বিমর্ষ রেখো না।’

 সূত্র: সাইদুল খাতির, ইবনে জাওযি, পৃ ২১৭

আরও পড়ুন