হারানো মুসলিম সভ্যতার খোঁজে

বিশ্ব ইতিহাসে ইসলাম যে একটি অত্যন্ত প্রভাবশালী ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তি তা এখন সর্বজনস্বীকৃত। ১৪০০ বছরের বেশি আগে আরব ভূমিতে উৎসরিত মুসলিম রাজনৈতিক শক্তি উত্তরাধিকার সূত্রে ও সাম্রাজ্য বিস্তারের মাধ্যমে ইউরোপের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে পূর্ব আফ্রিকা ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পরযন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে বিপুল সংখ্যাক জনগোষ্ঠী ইসলাম গ্রহণ করেছে। তবে মুসলিম চিন্তাবিদ, বিজ্ঞানী, ধর্মতাত্ত্বিক থেকে শুরু করে শাসক, রাষ্ট্রনায়ক, ও যোদ্ধাদের বিভিন্ন অবদানের বহু বিষয় ইতিহাস থেকে হারিয়ে বা মুছে গেছে। আমেরিকান গবেষক ও ইতিহাসবিদ ফিরাস আলখাতিবের বই লস্ট ইসলামিক হিস্টোরি: রিক্লেইমিং মুসলিম সিভিলাইজেশন ফ্রম দ্য পাস্ট (ইসলামের হারানো ইতিহাস: অতীত থেকে মুসলিম সভ্যতার পুনরুদ্ধার) সেই মুছে যাওয়া অবদানের কিছু নতুনভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে।

আরও পড়ুন

বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখা কয়েকজন মুসলিম ব্যক্তিত্ব ও কিছু প্রতিষ্ঠানের ওপর এই বইয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। বইটিতে এগারোটি অধ্যায়: প্রাক-ইসলামী আরব, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ভূমিকা, খুলাফায়ে রাশেদিন, মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর পত্তন, জ্ঞানচর্চা ও মেধা বিকাশের সোনালি সময়, প্রবল বিশৃঙ্খলা, আল আন্দালুস, পুনর্জন্ম, পতন, এবং পুরানো ও নতুন চিন্তাধারা।

বইটিতে উমাইয়া, আব্বাসীয় এবং উসমানীয় সময়কালের কথা যেমন বিধৃত হয়েছে, তেমনি উঠে এসেছে মুর স্পেন, পশ্চিম আফ্রিকার সাভানা রাজ্য ও ভারতের মুঘল শাসনামলের গল্প। পরবর্তীকালে মুসলিম ভূখণ্ডগুলোয় ইউরোপীয় বেনিয়া-উপনিবেশিক শাসকদের দখল-শোষণ এবং আধুনিককালে মুসলিম বিশ্বে বিভিন্ন জাতি-রাষ্ট্রের উত্থানের ইতিহাসও ঠাঁই পেয়েছে এতে।

আরও পড়ুন

বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি, সামাজিক কাঠামো ও সংস্কৃতিক বিকাশে ইসলামী বিশ্বাসের প্রভাব নিয়ে লেখক গুরুত্বসহকারে আলোকপাত করার পাশাপাশি প্রাসঙ্গিকভাবে বিভিন্ন মুসলিম ব্যক্তিত্বকে তুলে ধরেছেন। এছাড়া প্রায় অজানা বা কম জানা অথচ গুরুত্বপূর্ণ কিছু অবদানের কথা অতিসংক্ষেপে উল্লেখ করেছেন। এর মধ্যে সর্বশেষটি হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চিকাগোতে সিয়ার্স টাওয়াররে নকশাকারী বাঙালি মুসলমান ফজলুর রহমান খানের কথা। ১৯৭৩ সালে এই টাওয়ারটি যখন উদ্বোধন হয়, তখন থেকে বহুবছর এটি ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন।

 লস্ট ইসলামিক হিস্টোরি: রিক্লেইমিং মুসলিম সিভিলাইজেশন ফ্রম দ্য পাস্ট, ফিরাস আলখাতিব, হার্স্ট অ্যান্ড কোম্পানি, লন্ডন, ২০১৪

আরও পড়ুন