আনফাল ‘নফল’ শব্দের বহুবচন। অর্থ অতিরিক্ত। কাফেরদের সঙ্গে যুদ্ধ চলাকালে যে সম্পদ মুসলিমদের হস্তগত হয়, তাকে নফল বলা হয়। মানে নফল বা আনফাল অর্থ যুদ্ধলব্ধ সম্পদ; যাকে ইসলামি পরিভাষায় ‘গনিমত’ বলা হয়। সুরা আনফাল পবিত্র কোরআনের অষ্টম সুরা। এই সুরা মদিনায় অবতীর্ণ হয়। এতে আছে ১০টি রুকু, ৭৫টি আয়াত। এই সুরায় আল্লাহ যুদ্ধজয়ের পর শত্রুর কাছ থেকে প্রাপ্ত অর্থ বা গনিমতের মাল সম্পর্কে আদেশ দান করেন এবং হিজরত সম্পর্কেও বলেন। এ সুরায় গনিমতের সম্পদ বণ্টন নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। তাই এ সুরাকে আনফাল বলা হয়।
সুরা আনফালের ১ থেকে ৪০ আয়াতে বিশেষ করে আল্লাহর পথে যুদ্ধ, ইমানদারের বৈশিষ্ট্য, যুদ্ধলব্ধ সম্পদের বণ্টননীতি, নবীজির (সা.) বিরুদ্ধে অবিশ্বাসীদের ষড়যন্ত্র, তাদের পরকালের ঠিকানা, বদর যুদ্ধের বিস্তারিত বিবরণ এবং মুসলমানদের অভিভাবক আল্লাহ ইত্যাদি বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্বাসীদের সফল হওয়ার ছয় উপায়
এই সুরায় আল্লাহ বিশ্বাসীদের ছয়টি উপায় বলে দিচ্ছেন, কীভাবে তাঁরা সফল হবেন।
১. পালানো যাবে না: ‘হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা যখন অবিশ্বাসীদের সম্মুখীন হবে, তখন পালিয়ে যাবে না’ (সুরা আনফাল, আয়াত: ১৫)
২. অনুগত থাকতে হবে: ‘হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করো, তোমরা যখন তার কথা শুনছ, তখন তা থেকে মুখ ফিরেয়ে নিয়ো না।’ (সুরা আনফাল, আয়াত: ২০)
৩. ইসলামের প্রয়োজনে সাড়া দিতে হবে: ‘হে বিশ্বাসীগণ, রাসুল যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে ডাকে, যা তোমাদের উদ্দীপিত করে, তখন আল্লাহ ও রাসুলের ডাকে সাড়া দেবে, আর জেনে রাখো যে মানুষ ও তার হৃদয়ের মাঝখানে আল্লাহ অবস্থান করেন ও তাঁরই কাছে তোমাদেরকে একত্র করা হবে।’ (সুরা আনফাল, আয়াত: ২৪)
৪. বিশ্বাস ভঙ্গ করা যাবে না: ‘হে বিশ্বাসীগণ, জেনেশুনে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ করবে না। আর তোমাদের পরস্পরের কাছে গচ্ছিত দ্রব্যের ব্যাপারেও নয়।’ (সুরা আনফাল, আয়াত: ২৭)
৫. আল্লাহকে ভয় করতে হবে: ‘হে বিশ্বাসীগণ, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, তবে আল্লাহ তোমাদের ফুরকান (ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার শক্তি) দেবেন, তোমাদের পাপ মোচন করবেন ও তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ বড়ই মঙ্গলময়।’ (সুরা আনফাল, আয়াত: ২৯)
৬. নিজেদের মধ্যে বিবাদ করা যাবে না: ‘হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা যখন কোনো দলের মোকাবিলা করবে, তখন অবিচলিত থাকবে ও আল্লাহকে বেশি করে মনে করবে, যাতে তোমরা সফল হও। আর আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করবে ও নিজেদের মধ্যে বিবাদ করবে না; করলে তোমরা সাহস হারাবে ও তোমাদের মনের জোর চলে যাবে। তোমরা ধৈর্য ধরবে, আল্লাহ তো ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন।’ (সুরা আনফাল, আয়াত: ৪৫-৪৬)
বিশ্বাসীদের সফল হওয়ার ৬ উপায়:
এই সুরায় আল্লাহ বিশ্বাসীদের ৬টি উপায় বলে দিচ্ছেন, কীভাবে তারা সফল হবেন।
১. পালানো যাবে না: ‘হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা যখন অবিশ্বসীদের সম্মুখীন হবে তখন পালিয়ে যাবে না’ (সুরা আনফাল, আয়াত: ১৫)
২. অনুগত থাকতে হবে: ‘হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য কর তোমরা যখন তার কথা শুনছো তখন তা থেকে মুখ ফিরেয়ে নিয়ো না।’ (সুরা আনফাল, আয়াত: ২০)
৩. ইসলামের প্রয়োজনে সাড়া দিতে হবে: ‘হে বিশ্বাসীগণ, রাসুল যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে ডাকে, যা তোমাদের উদ্দীপিত করে, তখন আল্লাহ্ ও রাসুলের ডাকে সাড়া দেবে, আর জেনে রাখো যে মানুষ ও তার হৃদয়ের মাঝখানে আল্লাহ্ অবস্থান করেন ও তাঁরই কাছে তোমাদেরকে একত্র করা হবে। (সুরা আনফাল, আয়াত: ২৪)
৪. বিশ্বাস ভঙ্গ করা যাবে না: ‘হে বিশ্বাসীগণ, জেনেশুনে আল্লাহ্ ও তাঁর রসুলের সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ করবে না। আর তোমাদের পরস্পরের কাছে গচ্ছিত দ্রব্যের ব্যাপারেও নয়। (সুরা আনফাল, আয়াত: ২৭)
৫. আল্লাহকে ভয় করতে হবে: হে বিশ্বাসীগণ, যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে আল্লাহ্ তোমাদের ফুরকান (ন্যায়-অন্যায় পার্থক্য করার শক্তি) দেবেন, তোমাদের পাপ মোচন করবেন ও তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আর আল্লাহ্ বড়ই মঙ্গলময়। (সুরা আনফাল, আয়াত: ২৯)
৬. নিজেদের মধ্যে বিবাদ করা যাবে না: হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা যখন কোনো দলের মোকাবিলা করবে তখন অবিচলিত থাকবে ও আল্লাহকে বেশি ক'রে মনে করবে, যাতে তোমরা সফল হও। আর আল্লাহ ও তাঁর রসুলের আনুগত্য করবে ও নিজেদের মধ্যে বিবাদ করবে না; করলে তোমরা সাহস হারাবে ও তোমাদের মনের জোর চলে যাবে। তোমরা ধৈর্য ধরবে, আল্লাহ্ তো ধৈর্যশীলদের সঙ্গে রয়েছেন। (সুরা আনফাল, আয়াত: ৪৫–৪৬)
যুদ্ধলব্ধ সম্পদের বণ্টননীতি
কাফেরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার পর যে সম্পদ পাওয়া যায়, সেটা হলো গনিমত। গনিমতের সম্পদে অংশীদারত্ব এবং বণ্টনের নীতিনির্ধারণ বিষয়ে এই সুরায় আলোকপাত রয়েছে। মুহাম্মদ (সা.)-এর উম্মতের জন্য এই গনিমতের সম্পদ আল্লাহ বৈধ করে দিয়েছেন। আগের উম্মতের জন্য তা বৈধ ছিল না; যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর অবিশ্বাসীদের থেকে পাওয়া সব মালামাল এক জায়গায় জড়ো করলে আকাশ থেকে আগুন এসে তা জ্বালিয়ে ভস্ম করে দিত।
যুদ্ধলব্ধ সব সম্পদ রাষ্ট্রের কাছে জমা দিতে হয়। কোনো সৈন্যের জন্য তা থেকে বণ্টনের আগে কোনো বস্তু রেখে দেওয়ার অনুমতি নেই। রাষ্ট্রপ্রধান সেই সম্পদ বণ্টন করবেন। বদরের যুদ্ধে গনিমত সম্পদ মুসলমানদের হাতে আসে এবং রাসুল (সা.) সেগুলো যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বণ্টন করে দেন। এরপর অন্যান্য যুদ্ধে বিপুল পরিমাণ গনিমতের সম্পদ মুসলমানদের হাতে আসে। কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী, এর এক-পঞ্চমাংশ মহানবী (সা.) গ্রহণ করেন এবং তা তিনি জনসাধারণের কল্যাণে ব্যয় করেন। বাকি চার-পঞ্চমাংশ তিনি যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। তাফসিরে ইবনে কাসিরে এসেছে, যুদ্ধলব্ধ সব সম্পদ পাঁচ ভাগে ভাগ করা হবে। এর চার ভাগ যোদ্ধাদের মধ্যে বণ্টন করা হবে। আর বাকি এক–পঞ্চমাংশ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে রাখা হবে।