তারাও যদি...

>

কেমন হতো যদি পশু-পাখিরাও কিছু অভিযোগ অস্বীকার করত? ভেবেছেন শরীফ মজুমদার, এঁকেছেন শিখা

অভিযোগ: আবারও দিনে-দুপুরে কাকের বাসায় ডিম পেড়েছে জনৈক দখলবাজ কোকিল। অভিযোগকারী কাকের ভাষ্যমতে, কদিন আগে তার অনুপস্থিতির সুযোগে এই কাজ করেছে অভিযুক্ত কোকিল। এই ঘটনায় চিলের কাছে মৌখিক অভিযোগ জানানোর পর কাকটিকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে অভিযুক্ত কোকিল।

কোকিলনেতার ভাষ্য: কাকের বাসায় ডিম পাড়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এ ঘটনায় আমাদের কোকিলসমাজের কেউ জড়িত থাকার প্রশ্নই আসে না। আমাদের কাছে তথ্য আছে, অভিযোগকারী কাক বিরোধী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আর যে ডিমগুলোর কথা বলা হচ্ছে, ওগুলো দেখতে কোকিলের ডিমের মতো হলেও আদতে সেগুলো ঘোড়ার ডিম!

অভিযোগ: গৃহস্থের ঘরের মাছ চুরি। অভিযুক্ত স্থানীয় মেছো বিড়াল সংঘের যুগ্ম আহ্বায়ক।

মেছো বিড়ালনেতার ভাষ্য: এই অভিযোগের বিন্দুমাত্র সত্যতা নেই। যে মেছো বিড়ালের কথা বলা হচ্ছে, তাকে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে অনেক আগেই মেছো বিড়াল সংঘ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সম্মিলিত মিউফ্রন্টের হুলো আর মেনিবিড়ালরা এসব অপকর্ম করে মেছোবিড়ালকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। শিগগিরই সব সত্য উন্মোচিত হবে।

অভিযোগ: দড়ি দিয়ে ধরেবেঁধে রেখেও আটকানো যাচ্ছে না ছাগলদের কাঁঠালপাতা লুটের ঘটনা। সম্প্রতি এক দরিদ্র চাষির কচি কচি গাছের কাঁঠালপাতা খেয়ে সাবাড় করেছে কতিপয় দুর্বৃত্ত ছাগল।

ছাগলনেতার ভাষ্য: এই অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ছাগল সম্প্রদায়কে ফাঁসানোর জন্যই এটা করা হয়েছে। আমরা শুনেছি, কিছু বহিরাগত গরু আমাদের ‘কাঁঠালপাতা তত্ত্ব’ ব্যবহার করে এই কাজ করেছে। নিজেরা খেয়ে নাম দিয়েছে আমাদের। শুধু তা-ই নয়, অনেক গরু আমাদের মতো ‘ম্যাঅ্যাঅ্যা’ করে ডাকারও অপচেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু অপরাধী যে-ই হোক না কেন, সবাইকে এক এক করে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।

অভিযোগ: গুরুত্বপূর্ণ নথি সাবাড়। কাটার ধরনে অভিযোগের তির উইপোকার দিকে। প্রমাণ মিলেছে ‘টুথপ্রিন্টে’।

উইপোকানেতার ভাষ্য: নথি সাবাড়ের ঘটনায় উইপোকাকে জড়িয়ে কিছু ইঁদুর বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। আর তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে কিছু সুশীল তেলাপোকা। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, নথি সাবাড়ের ঘটনায় আমাদের উইপোকাসমাজের কেউ জড়িত নয়। ইঁদুর আর তেলাপোকা নিজেরা এই কাজ করে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। তারা নিজেদের টুথপ্রিন্টকে উইপোকার টুথপ্রিন্ট বলে গুজব ছড়াচ্ছে।