পদক্ষেপ নেওয়ার এখনই সময়

আর মাত্র কয়েকটা দিন! তারপরই আসবে বহু আকাঙ্ক্ষিত বাজেট ঘোষণা। আশ্চর্যের ব্যাপার এই, প্রতি বছরের মতো এবারও বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থমন্ত্রী! এবারও কালো ব্রিফকেসে বাজেটের ঘোষণাপত্র নিয়ে সংসদে ঢুকবেন তিনি। এবং প্রতিবছরের মতো এবারও বাজেট ঘোষণার পরপরই বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে। যে ঘোষণা দিলে জিনিসপত্রের দাম অটোমেটিক বেড়ে যায়, তাকেই বোধ হয় বাজেট বলে। দাম বাড়বে জেনেও কেন যে বাজেট ঘোষণা করা হয়, তা অনেকের মাথায়ই আসে না। তবে বাজেট ঘোষণার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার। যেমন এটাই বর্তমান সরকারের শেষ বাজেট ঘোষণা। শেষ বাজেট ঘোষণাকে স্মরণীয় করে রাখতে সরকার কোনো পদক্ষেপ নিয়েছে বলে মনে হয় না। অথচ চাইলে কত বৈচিত্র্যময় করে গড়ে তোলা যেত বাজেট ঘোষণার দিনটিকে। রিয়েলিটি শোগুলোর বিশেষ পর্ব প্রায়ই স্টুডিওর বাইরে কক্সবাজার, রাঙামাটি এসব জায়গায় আয়োজন করা হয়। বৈচিত্র্য আনতে বাজেট অনুষ্ঠানটিও স্টুডিও মানে সংসদের বাইরে আয়োজন করা যেতে পারে। প্রাকৃতিক পরিবেশে অর্থমন্ত্রীও আরামে বাজেট ঘোষণা করলেন, আবার বেড়াতেও পারলেন, ব্যাপারটা ভালো না? তা ছাড়া বাজেট অধিবেশনে যা করার অর্থমন্ত্রীই করেন। অন্য সংসদ সদস্যদের তেমন কিছু করার থাকে না। সংসদের বাইরে বাজেট অধিবেশন বসলে তাঁরা আশপাশের গাছপালা, পাখি, ফুল দেখে সময় অতিবাহিত করতে পারবেন। বাজেট বক্তব্য সব সময়ই অত্যন্ত নীরস হয়। তবে যদি দেশসেরা আবৃত্তিশিল্পীকে দিয়ে পাঠ করানো হয়, তাহলে বাজেট শুনতে কবিতার মতো মনে হবে। বেশি পছন্দ হলে বাজেট বক্তব্যটি অনেকেই মোবাইলের রিংটোন হিসেবেও ব্যবহার করতে পারে। কিন্তু এসব বিষয় নিয়ে কেউ ভাবছে বলে মনে হয় না। তা ছাড়া এবারের বাজেট অধিবেশনে বিরোধী দলেরও যোগ দেওয়ার কথা। বিরোধী দলের একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা সব জায়গায় বসতে পারলেও সংসদে খুব বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারে না। অনেকের ধারণা, সংসদের আসনগুলো আরামদায়ক নয় বলেই বিরোধী দল কিছুক্ষণ পর উঠে যায়। বাজেট ঘোষণা একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। দীর্ঘ সময় বিরোধী দল ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে বসে থাকবে, এমনটা নাও হতে পারে। তাই আসনগুলোতে বিশেষভাবে আরামের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তবে বাজেটে ককটেল তৈরির সরঞ্জামের ওপর বড়সড় শুল্ক বসানো উচিত। এতে ধুমধাম করে ককটেল ফাটাতে পারবে না। আশা করি, কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলো নিয়ে গভীরভাবে ভাববে।