নারীর প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলের আচরণ পশ্চাৎগামী। জুলাই ঘোষণাপত্র থেকে সচেতনভাবে নারী শব্দটিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় নারীর মনোনয়ন নিয়ে ‘মাছের বাজারের’ মতো দর-কষাকষি করেছে রাজনৈতিক দলগুলো। কমিশন ও দলগুলোর এই রক্ষণশীল অবস্থানের জন্য ভবিষ্যতে তাদের খেসারত দিতে হবে, জবাবদিহি করতে হবে।
গতকাল শনিবার প্রথম আলো আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে আগামী নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী আসন ও নারীর মনোনয়ন নিয়ে কমিশন ও রাজনৈতিক দলের অবস্থান নিয়ে এমন ক্ষোভ প্রকাশ করেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। তাঁরা বলেন, বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আশায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু বৈষম্য বিলোপে সরকার ব্যর্থ। নারী আসন ও মনোনয়ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে আবারও রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা। এ আলোচনায় তাঁরা নারীদেরও রাখার দাবি জানিয়েছেন।
আবারও আলোচনায় বসতে হবে
‘জাতীয় সংসদে নারী আসন ও নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন’ শিরোনামে গোলটেবিল বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে। নারী আসন ও মনোনয়ন নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন বক্তারা। সংসদে সংরক্ষিত আসনসংখ্যা বাড়িয়ে সেসব আসনে সরাসরি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা, সাধারণ আসনে নির্বাচনের ক্ষেত্রে দলগুলোকে ৩৩ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মনোনয়ন দেওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানানো হয় বৈঠকে।
ঐকমত্য কমিশন প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিলেও নারী আসনে নির্বাচন পদ্ধতি ও সাধারণ আসনে মনোনয়ন-সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে কমিশনকে নারীদের নিয়ে পুনরায় আলোচনায় বসার দাবি জানানো হয়। এই দাবি পূরণে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ, প্রয়োজনে ঐকমত্য কমিশনের কার্যালয় ঘেরাও, দাবি মেনে না নিলে আগামী নির্বাচনে নারীদের ভোট বর্জন করার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়ারও দাবি ওঠে এই বৈঠকে।
আমি অকপটে স্বীকার করছি, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। পুরুষতন্ত্র জয়ী হয়েছে।বদিউল আলম মজুমদার, সদস্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশন
আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরীন পারভিন হক, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, ‘নিজেরা করি’র সমন্বয়কারী খুশী কবির, নারীপক্ষ’র সভানেত্রী গীতা দাস, গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান ও শ্রমবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্য তাসলিমা আখতার, স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য ইলিরা দেওয়ান, জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও শিক্ষার্থী নাজিফা জান্নাত।
গোলটেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক সুমনা শারমীন।
বৈঠকে সংসদে নারী আসন নিয়ে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নাজনীন আখতার।
রাজনৈতিক দলের সংস্কৃতি বদলাতে হবে
রাজনৈতিক দলগুলো যদি মনে করে বয়েজ ক্লাব হিসেবে পার করে দেব, সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।শিরীন পারভিন হক, প্রধান, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন
রাজনীতি ও জাতীয় সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্বের জায়গায় রাজনৈতিক দলগুলোর বিদ্যমান সংস্কৃতি বদলাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন শিরীন পারভিন হক। তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের খোলাখুলি সমালোচনা করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি মনে করে, বয়েজ ক্লাব হিসেবে পার করে দেব, সেটা গ্রহণযোগ্য নয়। সেটার জন্য প্রতিবাদ করতে হবে। তাদের (রাজনৈতিক দল) সংস্কৃতি বদলাতে হবে।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন জাতীয় সংসদের আসনসংখ্যা ৬০০ করা এবং এর মধ্যে ৩০০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত রেখে সেসব আসনে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব করেছে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাব দুই মেয়াদের জন্য। অনেক পুরুষ বলছেন, এতে নারী আধিক্য বাড়বে। তো বাড়ুক। এত দিন আমরা পুরুষ আধিক্য নিয়ে চলেছি। দুই মেয়াদ নারীর আধিক্য থাকুক। এই সময়ের মধ্যে অনেক নারী নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে।’
নারীকে বাদ দিয়ে গঠিত হয়েছে ঐকমত্য কমিশন। বৈষম্য বিলোপের আশা এখন গুড়ে বালি।রাশেদা কে চৌধূরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা
রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, বৈষম্য বিলোপ, বিচার ও সংস্কার—এই তিন প্রত্যাশা নিয়ে গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। কিন্তু নারীকে বাদ দিয়ে ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়েছে। বৈষম্য বিলোপের আশা এখন ‘গুড়ে বালি’। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কাদের চাপে পড়ে কোন পথে হাঁটছে দেশ? আমরা কি ধরে নেব সরকার পক্ষপাতদুষ্ট? একটা বিশেষ গোষ্ঠী বা বিশেষ ব্যক্তি বা কারও কাছে অন্তর্বর্তী সরকার যে পক্ষপাতদুষ্ট নয়, সেটা তাদেরই প্রমাণ করতে হবে’। তিনি আরও বলেন, নারীদের কথা শুনতে হবে। সব রাজনৈতিক দলকে মানানোর দায়িত্ব পালন করতে হবে ঐকমত্য কমিশনকে। নারী আসন নিয়ে নারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাজনৈতিক দল ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান তিনি।
সংসদে নারী আসন ও নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে ক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় বদিউল আলম মজুমদার বলেন, এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐকমত্যে আনতে তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি অকপটে স্বীকার করছি, আমরা ব্যর্থ হয়েছি। পুরুষতন্ত্র জয়ী হয়েছে। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটা অঘটন ঘটে গেছে, একটা বিপর্যয় ঘটে গেছে। এটার জন্য আমরা সবাই দায়ী।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, ঐকমত্য কমিশন এবং অন্য কাউকে দোষারোপ করে জয় আসবে না। এভাবে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না।’ বিপর্যয়ের জন্য নারীরা যদি পুরুষদের দায়ী করেন তাহলে ‘প্রতিপক্ষ চিহ্নিত’ করতে ভুল হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। সংসদে ১০০ আসনে সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিতে ঘূর্ণমান পদ্ধতি গ্রহণ কার্যকর ব্যবস্থা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
জুলাই ঘোষণাপত্র থেকে নারী শব্দটিকে সচেতনভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে।খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম গবেষণা পরিচালক, সিপিডি
নারী প্রতিনিধিত্ব এখন পর্যন্ত যা আছে আগামী সংসদে তা আরও অনেক কম হবে বলে মনে করেন খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো ভালো দিকে যাচ্ছি না। জুলাই ঘোষণাপত্র থেকে নারীকে সচেতনভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। যদি এমন হতো যে ঘোষণাপত্রে সব গোষ্ঠীকেই বাদ দেওয়া হয়েছে, তাহলে বুঝতাম কোনো গোষ্ঠীকেই টার্গেট করা হয়নি। কিন্তু এখানে কয়েকটি গোষ্ঠীকে নেওয়া হয়েছে। আবার কোনো কোনোটিকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ রকম একটি জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে বৈষম্যবিহীন বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা দেখতে পারি না।’
গোলাম মোয়াজ্জেম আরও বলেন, দেশে নারীর ক্ষমতায়ন এখনো শুধু মুখের কথা। সামনের দিনগুলোতে এই পর্যায়েও নারীকে দেখা যাবে না। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশকে নারীর জন্য ইশতেহার হিসেবে ধরে নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসতে হবে।
সব জায়গায় নারীদের বাদ দেওয়ার এবং পিছিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন শাহীন আনাম। তিনি বলেন, নারীর প্রতি বৈষম্যগুলো এই সরকার বিবেচনায় নেবে বলে আকাঙ্ক্ষা ছিল। কিন্তু সেটা মোটেও হয়নি। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে প্রকাশ্যে কমিশনের সদস্যদের অপমান করা হলো। এর বিরুদ্ধে এই সরকার একটা টু শব্দ করেনি।
শাহীন আনাম বলেন, ‘যখনই সমান অধিকারের কথা বলি তখনই একটা হুংকার আসে। অনেক দিন ধরে সরাসরি নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে। এখন যে ৫ শতাংশ দেওয়ার কথা বলছে তা হাস্যকর। শুধু রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে নারীদের সম্পর্কে কেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তিনি সে প্রশ্ন তোলেন। ঐকমত্য কমিশনকে ‘বয়েজ ক্লাব’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
খুশী কবির বলেন, ‘অতীতে যাঁরা নারী আসনে (সংসদে) এসেছিলেন, তাঁদের অনেকেই অনেক ভালো কাজ করেছেন। তাঁরা নিশ্চুপ ছিলেন না। অনেকেই সংসদে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু এমন অনেক পুরুষ প্রতিনিধি ছিলেন, যাঁরা কোনো ভূমিকা রাখেননি। তাই এটা একেবারেই যৌক্তিক নয় যে আমরা যোগ্য নারী পাচ্ছি না, কিন্তু অযোগ্য পুরুষ হলেও যথেষ্ট। এগুলো পরিবর্তনের জন্য আমাদের চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’
মাছের বাজারের মতো দর-কষাকষি
আলোচনায় অংশ নিয়ে অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, নারী রাজনীতিতে কীভাবে আসবে, তার ভাগ্য কী হবে, আসন কত পাবে, এসব আলোচনা করছেন পুরুষেরা। মাছের বাজারের মতো দর-কষাকষি করে এসব নির্ধারণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নারীকে তার মর্যাদা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। মানবাধিকারের জায়গা থেকে বিবেচনা করলে দলগুলো তা অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছে। কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলো মিলে একটা ভয়ংকর রক্ষণশীল অবস্থান নিয়েছে, ভবিষ্যতে এর দায় ও খেসারত তাদের দিতে হবে। তিনি বলেন, নারী কমিশনের ওপর আক্রমণের বিরুদ্ধে নিশ্চুপ থেকে সরকার প্রমাণ করেছে যে আসলে নারীর সঙ্গে তারা নেই। তারা সেই সব মানুষের সঙ্গে আছে যারা নারীর চলাচলকে, নারীর অগ্রযাত্রাকে থামাতে চায়।
ফারাহ কবির বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে সাধারণ আসনে ৫ শতাংশ নারীকে মনোয়ন দিতে চায় রাজনৈতিক দলগুলো। এই দয়াদাক্ষিণ্য কেন? পোশাক খাতে রেমিট্যান্স কারা দেয়? নারীদের ৫০ শতাংশের বেশি অবদান আছে। সেখানে মনোনয়নের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ কেন, বুঝতে পারছি না।’ সংরক্ষিত আসনসংখ্যা বাড়িয়ে অন্তত ১০০টি করে তাতে সরাসরি নির্বাচনের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, সংরক্ষিত আসনে সরাসরি নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। রাজনৈতিক দলে যে নারীরা আছেন, তাঁদের প্রস্তুত করতে হবে। কিন্তু দলগুলো বলবে, নারী খুঁজে পাওয়া যাবে না।
ফওজিয়া মোসলেম বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণের বড় জায়গা জাতীয় সংসদ। সেখানে নারীর প্রতিনিধিত্বটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি হতেই হবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যদি নারী না থাকে, তাহলে নারীর পক্ষে আইন তৈরি হওয়া, নারীর বৈষম্য দূর করার বাস্তবতা তৈরি করা, পরিপ্রেক্ষিত তৈরি করা সম্ভব হয় না। তিনি বলেন, ‘সমাজে নারীর প্রতি এত বিদ্বেষ আছে, সেটা এখন বোঝা যাচ্ছে। এ অবস্থায় আমাদের চাপ সৃষ্টি করে যেতেই হবে। আমরা সেটি করে যাচ্ছি।’ তিনি সংসদের আসন বাড়িয়ে ৪০০ করা এবং সেখানে নারীর জন্য ১৫০ আসন সংরক্ষণের কথা বলেন। পাশাপাশি তিনি নির্বাচনে নারীর সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির দাবি জানান।
নির্বাচন নিয়ে নারীরা কোনো সমঝোতায় যাবে না বলে মন্তব্য করেন নারীপক্ষ’র সভানেত্রী গীতা দাস। তিনি বলেন, ‘নারীদের সব খানে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। নারীরা জড় পদার্থ না। যখন যার ইচ্ছে সংসদে আসন তৈরি করবে, আমরা সেখানে বসব। যদি আসন নিয়ে পুনরায় কোনো সিদ্ধান্ত না আসে তাহলে আমরা ভোট দেব না। হয়তো গুরুত্ব দেবে না, কিন্তু আমরা আমাদের প্রতিবাদ জাতীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারব।’
দাবি আদায়ের এখনি সুযোগ
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর সংস্কারের বড় সুযোগ এসেছে উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সদস্য ইলিরা দেওয়ান বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক, অসাম্প্রদায়িক চেতনার, বৈষম্যহীন বাংলাদেশে যদি করতে না পারি, তাহলে রাজনৈতিক দলগুলো যখন ক্ষমতায় আসবে তখন আমাদের কথা বলার সুযোগ হবে না। আমরা মনে করছি এবার হচ্ছে আমাদের সময়।’
তাসলিমা আখতার বলেন, সংরক্ষিত আসনের বদলে সরাসরি নির্বাচন খুবই জরুরি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এখনো সেই চাপটা প্রয়োগ করার সুযোগ আছে। সরাসরি নির্বাচনের সিদ্ধান্তটা কেউ দিয়ে দিবে না। নারী আন্দোলনের কর্মী, নাগরিকদের সংগঠিত আকারে মাঠে নামতে হবে।
নাজিফা জান্নাত বলেন, নারীর বিষয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর আচরণ পশ্চাদ্গামী। ঐকমত্য গঠনের জন্য গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে নাগরিক সমাজসহ অন্যান্য যত ধরনের নারী সংস্থা রয়েছে, তাদের সরাসরি সরকারকে চিঠি দেওয়া উচিত। তাদের জানানো উচিত, এত দিন ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করেও সবার চিন্তার প্রকাশ ঘটাতে সক্ষম হয়নি সরকার।