সড়ক দুর্ঘটনা ও মোটরসাইকেলশিল্প: নিরাপদ সড়কের জন্য করণীয়

প্রথম আলোর আয়োজনে ‘সড়ক দুর্ঘটনা ও মোটরসাইকেলশিল্প: নিরাপদ সড়কের জন্য করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক হয় চলতি বছরের ২৩ আগস্ট। এ আলোচনার বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত হলো।

প্রথম আলোর আয়োজনে ‘সড়ক দুর্ঘটনা ও মোটরসাইকেলশিল্প: নিরাপদ সড়কের জন্য করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক হয় চলতি বছরের ২৩ আগস্ট
ছবি: প্রথম আলো

অংশগ্রহণকারী

মো. লোকমান হোসেন মোল্লা

পরিচালক (অপারেশন) বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)

মতিউর রহমান

চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উত্তরা মোটরস লিমিটেড, সভাপতি, বিমামা

খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ

মহাসচিব, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি

হাদীউজ্জামান

অধ্যাপক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)

বিপ্লব কুমার রায়

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিভিএস অটো বাংলাদেশ লিমিটেড ও সাধারণ সম্পাদক, বিমামা

দেওয়ান সোহান

ফাউন্ডার, দেশি বাইকার ডট কম

ইসরাত খান মজলিশ

প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ ওমেন রাইডার্স ক্লাব

সুব্রত রঞ্জন দাস

নির্বাহী পরিচালক, এসিআই মোটরস লিমিটেড

আমিনুর রহমান

কো-অর্ডিনেটর, রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড

বিজয় কুমার মণ্ডল

সিএফও এবং কোম্পানি সেক্রেটারি, এইচএমসিএস নিলয় বাংলাদেশ লিমিটেড

সাদিয়া ইয়াসমিন চৌধুরী

অ্যাডমিন, ক্রিয়েটিভ মাইন্ডেড বিডি

মো. ইসমাইল ভূঁইয়া

হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড সেফটি, বাংলাদেশ হোন্ডা প্রাইভেট লিমিটেড

সূচনা বক্তব্য

আব্দুল কাইয়ুম

সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো

সঞ্চালনা

ফিরোজ চৌধুরী

সহকারী সম্পাদক, প্রথম আলো

আলোচনা

আব্দুল কাইয়ুম

মোটরসাইকেল তৈরির কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে। বিনিয়োগের সময় তাদের একধরনের শর্ত ছিল। সেই শর্তের ভিত্তিতে বিনিয়োগ করেছে। এখন তাদের জন্য নিয়ম কঠিন হলে বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। আবার আমরা এটাও মনে করি, যাঁরা মোটরসাইকেল চালাবেন, তাঁরা যেন দক্ষ চালক হন। তাঁদের যেন লাইসেন্স থাকে। আলোচনায় এসব বিষয় আসবে বলে আশা করি।

ইসরাত খান মজলিশ

ইসরাত খান মজলিশ

২০১৭ সালে ২২ হাজার ৭৩৩ জন নারী বাইকার লাইসেন্স নিয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনার কারণের মধ্যে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অবহেলা, আইন নিয়ে চালকদের মাঝে ভুল ধারণা, সড়ক পরিবহন খাতে অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্য ইত্যাদি। সড়ক দুর্ঘটনা একটি জাতীয় দুর্যোগ।

অনেক প্রতিষ্ঠান সড়ক নজরদারির জন্য অ্যাপ তৈরি করছে। এসব অ্যাপের মাধ্যমে সড়কের প্রায় যাবতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়। এ অ্যাপ সিসিটিভির সঙ্গে লাগিয়ে দিলে সড়কের অনিয়ম তদারক করা সহজ হবে। দুর্ঘটনার পর সাধারণত চালকেরা পালিয়ে যান। অ্যাপের মাধ্যমে চালককে শনাক্ত করা সহজ হয়।

জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালের (পঙ্গু) একজন ডাক্তার বলছিলেন, তাঁরা বেশি সড়ক দুর্ঘটনার রোগী পাচ্ছেন। একজন ট্রাকচালককে প্রশ্ন করা হলো, কেন দুর্ঘটনা হয়েছে। তিনি বলেন, সারা রাত গাড়ি চালালে তঁার ঘুম আসে। হেলপার যেন তঁাকে জাগিয়ে রাখেন। হেলপার নিজেও ঘুমিয়ে পড়েছে। তারপর দুর্ঘটনা ঘটেছে। হেলপারকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে যে তার বয়স কত। সে বলেছে, তার বয়স ১৫ বছর। তার তো লাইসেন্স পাওয়ার কথা নয়। কিন্তু সে বলল যে সিস্টেম আছে। পাওয়া যায়।

এই সিস্টেমের প্রণেতা করা? এটা কেন হয়? একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকের কাছ থেকে কতটা সচেতনতা আশা করা যায়। চালক প্রশিক্ষণের কিছু নিয়ম আছে। কিন্তু ট্রাকচালকদের প্রশিক্ষণের সময় সব নিয়ম ঠিকভাবে পালন করা হয় না। সে যদি সমানে-পেছনে যেতে পারে, তাহলে সে লাইসেন্স পেয়ে যায়। বিদেশে ছোট রাস্তা দিয়ে যেতে পারছেকি না, ঠিকমতো ইউটার্ন নিতে পারছে কি না, এমন নানা জটিল পরীক্ষা তাদের নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে বিআরটিএ কোনোভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না।

প্রতিদিন সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে। অনেক পরিবার শেষ হয়ে যাচ্ছে। সেখানে নতুন আইনে দোষী ব্যক্তি পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। আবার জামিনও হতে পারে। সরকার একবার মৃত্যুদণ্ডের বিধান করল। কঠিন আইন করতে গেলেই বাস মালিক সমিতিসহ সুবিধাভোগী একটি মহল চাপ প্রয়োগ করে আইন তাদের পক্ষে নিয়ে নেয়। একজন মানুষের জীবনের মূল্য কি পাঁচ বছর কারাদণ্ড? এসব বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা না করলে কোনো দিনও সমস্যার সমাধান হবে না।

দেওয়ান সোহান

দেওয়ান সোহান

নিরাপদ সড়ক নিয়ে কাজ করার জন্য কমিউনিটির সম্পৃক্ততা দরকার। দেশে দুই ধরনের মোটরসাইকেলচালক রয়েছেন। একটা শ্রেণি নিজেদের ব্যক্তিগত প্রয়োজন ও ভ্রমণ করার জন্য চালায়। আবার উবার, পাঠাওসহ কিছু প্রতিষ্ঠান ভাড়ায় চালায়। তাদের প্রত্যেকের মধ্যে আলাদাভাবে একতা আছে। কিন্তু এই দুই শ্রেণির মধ্যে একটা গ্যাপ আছে। এই গ্যাপ কমিয়ে আনা প্রয়োজন। ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী চালকদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি। প্রায় অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটে এই শ্রেণির চালকদের মধ্যে। এদের লাইসেন্স দেওয়ার সময় কিছু শর্ত দেওয়া যেতে পারে। এ বিষয়টা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।

বিজয় কুমার মণ্ডল

বিজয় কুমার মণ্ডল

হিরোর মতো জয়েন্টভেঞ্চার অনেক কোম্পানি আছে। হিরো, রানার, টিভিএস, ইয়ামাহা, বাজাজ ইত্যাদি। প্রতিটা কোম্পানিতে বৈদেশিক বিনিয়োগ আছে। এখন আমাদের বিনিয়োগ প্রায় ২৫০ কোটি টাকা। প্রতিটা কোম্পানির বিনিয়োগই প্রায় এমন। ২০১৫ সালের নিয়মকানুনের ওপর ভিত্তি করে কোম্পানিগুলো বিনিয়োগ করেছে।

এরপর এক একটা বছর যাচ্ছে আর আমাদের ওপর নতুন নিয়ম চাপানো হচ্ছে। প্রথমে এনবিআরের সঙ্গে অনেক বোঝাপড়া করতে হয়েছে। তবে বিআরটিএর সহযোগিতায় আমরা এ পর্যন্ত এসেছি। কোভিডের সময় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ২০২২ সাল ঘুরে দাঁড়ানোর বছর। বছরে আমাদের মোট বিক্রির ৬০ শতাংশ বিক্রি হয় ঈদের আগে–পরে তিন মাস। এবার ঈদে হাইওয়ে, পদ্মা সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল চলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা যাচাই করে দেখেছি, সেটি চালকের দোষে হয়নি। এর পরে বাস, ট্রাক ও প্রাইভেট কারের দুর্ঘটনা হয়েছে।

কিন্তু মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে নিয়ম করা হলো লাইসেন্স ছাড়া মোটরসাইকেল বিক্রি করা যাবে না। অনেক চেষ্টা করে বিদেশি বিনিয়োগ আনা হয়। কিন্তু প্রতিবছর নিয়ম পরিবর্তন করা হলে বিনিয়োগ কার্যকর হয় না। আগামী পাঁচ বছরে আরও ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা আছে। এখন জ্বালানি–সংকটের কথা চিন্তা করে আমরা ইলেকট্রিক মোটরসাইকেলের কথা ভাবছি। কিন্তু আমরা যদি একটার পর একটা নিয়মের বেড়াজালে আটকে যাই, তাহলে এগোতে পারব না। নীতিনির্ধারকদের অনুরোধ করব, কোনো নিয়ম করার সময় যেন একটা শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা জরুরি।

সুব্রত রঞ্জন দাস

সুব্রত রঞ্জন দাস

ইয়ামাহা শুরুতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছিল না। তখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিনিয়োগ বোর্ডের প্রতিনিধি জাপানে গিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। ইয়ামাহার বিনিয়োগ না করার কারণ ছিল এখানে ঘন ঘন নীতি পরিবর্তন হয়। বিআরটিআরের সার্কুলারের পর আমরা শিল্প মন্ত্রণালয়ে জানতে চেয়েছিলাম এমন কেন হলো। তারা বলল যে তারা বিষয়টি জানত না। এভাবে যদি কাজের মধ্যে সমন্বয় না থাকে, তাহলে জটিলতা বাড়তেই থাকবে। বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীরা ইতিমধ্যেই অনেক বিনিয়োগ করেছে। বারবার নীতি পরিবর্তন করা হলে ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীরা নিরুৎসাহিত হতে পারে।

আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই হাজার মানুষ মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। করোনার সময় মানুষের বাড়িতে হারভেস্টর, ট্রাক্টর পৌঁছে দিয়েছে। সারা দেশে সেবা দিতে গেলে হাইওয়েতে যেতে হয়। সরকারের আগ্রহে আমরা মোটরসাইকেলশিল্পে বিনিয়োগ করেছি। লাইসেন্স করতে গেলে প্রায় ২৯০ দিনের মতো সময় লাগে।

আমরা বিআরটিএ ও সরকারকে ট্যাক্স দিই। সেখান থেকে কিছু টাকা বিনিয়োগ করে দুর্ঘটনার জন্য কাজ করা যায়। মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে লাখ লাখ তরুণ আর গ্রামীণ উদ্যোক্তারা। এসব বিষয় বিবেচনা করে যৌক্তিক সমাধানের দিকে যেতে হবে।

অধিকাংশ মোটরসাইকেলচালক মানসম্মত হেলমেট পরে না। হেলমেট আমদানি শুল্ক কমালে চালকেরা আন্তর্জাতিক মানের হেলমেট ব্যবহার করতে পারে। ড্রাইভিং লাইসেন্সপ্রাপ্তির প্রক্রিয়া সহজ করা প্রয়োজন। প্রয়োজনে সরকারি–বেসরকারি অংশীদারের ভিত্তিতে মোটরসাইকেল ড্রাইভিং প্রশিক্ষণকেন্দ্র গড়ে তোলা যেতে পারে।

মো. ইসমাইল ভূঁইয়া

মো. ইসমাইল ভূঁইয়া

চালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সমস্যার জন্য একটি শিল্পের ঝুঁকি তৈরি হয়, এমন উদ্যোগ নিতে পারি না; বরং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। বিশ্বের কোনো দেশে মোটরসাইকেল বা কোনো যানবাহন রেজিস্ট্রেশনের জন্য আগে লাইসেন্স করতে হয়। বন্দুক কেনার আগে লাইসেন্স নিতে হয়। কারণ, বন্দুক দিয়ে মানুষ হত্যা করা যায়। মোটরসাইকেল এ ধরনের কোনো পণ্য নয় যে এটি কেনার আগেই এর লাইসেন্স নিতে হবে। এ বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা প্রয়োজন।

আমিনুর রহমান

আমিনুর রহমান

প্রধান সমস্যা হলো সড়ক দুর্ঘটনা। মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী হিসেবে আমাদেরও কিছু দায় আছে। সে জায়গা থেকে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা কীভাবে কমানো যায়, সেটি নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমাদের এ কাজের সঙ্গে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ আছে। মোটরসাইকেল কোম্পানির প্রতিনিধিরা এখানে আছেন। সবাই তাঁদের কথা বলবেন। হেলমেট মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা কমায় না। মৃত্যুহার কমায়। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা খুব মারাত্মক হয়। আমরা চাই, দুর্ঘটনা যেন না ঘটে। আমাদের গ্রাম ও শহরের সড়কে অনেক ত্রুটি আছে। রাস্তা সংস্কার করে সড়ক নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। দুর্ঘটনা রোধে অন্যান্য দেশের মতো স্কুটি বাইকের ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন। বিআরটিএ সব সময় আমাদের সহযোগিতা করছে। শুধু সম্প্রতি তাদের একটি সার্কুলার রিভিউ করার জন্য অনুরোধ জানাই।

সাদিয়া ইয়াসমিন চৌধুরী

সাদিয়া ইয়াসমিন চৌধুরী

সমস্যার সঠিক সমাধান বের করা উচিত। কোনো একটা বিষয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা সমাধান নয়। মোটরসাইকেলশিল্প এখন দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। কর্মসংস্থানে মোটরসাইকেলশিল্পের ভূমিকা আছে। একজন নারীর যানবাহনে চলা কতটুকু নিরাপদ, সেটা আমরা সবাই জানি। বাসে তো নারীদের নির্যাতনের খবর শুনে থাকি। বাইকে কোনো হ্যারাজমেন্টের শিকার হতে হয় না। আবার খরচও কম লাগে। অনিয়ম–অবস্থাপনার জন্যই দুর্ঘটনা ঘটছে। জরুরি প্রয়োজনে যেকোনো জায়গায় দ্রুত যাওয়া যায়। আমাকে ১৩ বছরের এক লেগুনাচালক পেছন থেকে ধাক্কা দিয়েছিল। ১৩ বছরের একটা ছেলে কীভাবে গাড়ি চালাচ্ছে? এরা টাকা দিয়ে সবকিছু ম্যানেজ করে নেয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এর দায় এড়াতে পারে না। মোটরসাইকেলশিল্প যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।

বিপ্লব কুমার রায়

বিপ্লব কুমার রায়

মোটরসাইকেল একটা শিল্প। এখানে প্রায় ২০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। দুর্ঘটনাকে সামনে এনে যে এই শিল্পকে যে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে, সেটি খুব দুঃখজনক। আমার কিছু দুর্ঘটনা বিশ্লেষণ করে দেখেছি। এটা শুধু একজনের দোষে হয়নি। কেবল মোটরসাইকেল নয়, যাঁরা গাড়ি চালান সবার সচেতনতা দরকার। কোনো একটা শিল্পকে বাধাগ্রস্ত করে সমস্যার সমাধান করা যাবে না। ১৪ থেকে ২২ বছর বয়সী যারা যানবাহন চালায় তাদের মধ্যে দুর্ঘটনার হার বেশি। এ ক্ষেত্রে পরিবারকেও সচেতন করতে হবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ গত ৩ জুলাই মোটরসাইকেল বিক্রয় বা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান কর্তৃক মোটরসাইকেল বিক্রয় বা সরবরাহের আগে ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকার আবশ্যকতা, পাশাপাশি ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন প্রদান না করা এবং চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরসাইকেল বিক্রি না করার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। আমাদের জানামতে বিক্রির ক্ষেত্রে পৃথিবীর কোনো দেশে অথবা বাংলাদেশে অন্য কোনো যানবাহন বিক্রয়ে এমন নিয়ম নেই। দ্রুতগতিতে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিআরটিএ অনেক পিছিয়ে আছে, এখানে বিআরটিএর আরও সক্ষমতা ববাড়াতে হবে এবং এই দায়িত্ব তাদেরই নিতে হবে। বশ্যই সরকারের সব আইন মেনে রাস্তায় মোটরসাইকেল চালাতে হবে এবং আমারা (বিমামা) বা মোটরসাইকল বিক্রয় প্রতিষ্ঠানের সচেতনতা বৃদ্ধিতে সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।

পৃথিবীর কোথাও মোটরসাইকেল কেনার জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়নি। দেশে মোটরসাইকেল চালানোর জন্য কোনো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নেই। বিআরটিএ ও আমরা মিলে মোটরসাইকেলচালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারি। কঠোরভাবে আইনের প্রয়োগ করতে হবে, যেন অযোগ্য ব্যক্তি গাড়ি চালাতে না পারে। অল্প সময়ের মধ্যে লাইসেন্স পাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। মোটরসাইকেলশিল্প ভীষণ নেতিবাচক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যে কারণে দুর্ঘটনা হয়, তার কারণ খুঁজে বের করে সবাই একসঙ্গে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে।

হাদীউজ্জামান

হাদীউজ্জামান

আমি গণপরিবহন ও মোটরসাইকেলশিল্পের সঙ্গে জড়িত নই। গবেষণা ও বাস্তবতার আলোকে কথা বলব। কেউ বিতর্ক করার জন্য আসিনি। সবাই সমাধান চাই। আমরা কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা তৈরি করেছি। এখানে বলা ছিল, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে হবে। ঢাকায় জনসংখ্যা বেশি। এখানে গণপরিবহনকে প্রাধান্য দিতে হবে। গণপরিবহন, মোটরসাইকেল সব ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে। ২৫ শতাংশ মানুষ ফুটপাত ব্যবহার করেন। ফুটপাত আমরা ঠিক করতে পারিনি। ঢাকা শহরে সবচেয়ে বেশি মারা যান পথচারী। পথচারীকে নিরাপত্তা দিতে সর্বোচ্চ তিন হাজার কোটি টাকা লাগে।

লন্ডনের মতো গণপরিবহন ঢাকা শহরে নামাতে হলে আট হাজার কোটি টাকা লাগবে। বছরে পাঁচ লাখ মোটরসাইকেল বিক্রি হয়। প্রতিবছর এটা বাড়বে। কিন্তু এর আগে কি রাস্তার ধারণক্ষমতা কখনো দেখেছেন কী পরিমাণ মোটরসাইকেল চলতে পারে। মোটরসাইকেলশিল্প কর্মসংস্থান করছে, অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে—সবই ঠিক আছে; কিন্তু আমরা একটি মূল্যায়ন করেছি, সেটি মোটরসাইকেলে যতসংখ্যক মানুষ মারা গেছে, তাতে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। তাহলে ওই ১৫ হাজার কোটি টাকা আর মোটরসাইকেলের ৫ হাজার কোটি টাকার বাজার এটা ভাবতে হবে।

যে শহরের রাস্তায় লেনভিত্তিক গাড়ি চলে না, চালকের দক্ষতা নেই, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলে, সেখানে কত সংখ্যক মোটরসাইকেল চলবে, সেটা ঠিক করতে হবে।

জাপান ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে তাদের সড়ক থেকে প্রায় আড়াই লাখ মোটরসাইকেল তুলে নিয়েছে। তাদের দুর্ঘটনা ৫০ শতাংশ কমে গেছে। আমাদের সড়কের ধারণক্ষমতা কত, কত সংখ্যক গাড়ি চলছে, কত সংখ্যক চলা উচিত বিআরটিএর এটা গবেষণা করা উচিত ছিল। সিঙ্গাপুরে এখনো সড়কের সক্ষমতা আছে। তারপরও গাড়ির প্রবৃদ্ধি শূন্য শতাংশ করেছে। রাস্তা থেকে একটা গাড়ি তুলে একটা গাড়ি নামায়। আর আমাদের সক্ষমতা অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। সড়কের ধারণক্ষমতার প্রায় ৪ থেকে ৫ গুণ গাড়ি চলছে। ২০২৫ সালের পর ভিয়েতনামের হ্যানয় শহরে আর মোটরসাইকেল দেখা যাবে না। শহরে আর মোটরসাইকেল চলতে দেবে না। গত দুই বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশের ১৮ ধাপ অবনতি হয়েছি।

জাপানের মতো মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী দেশে ১০০ সিসি জনপ্রিয়। সেখানে আমাদের কেন ৫০০ সিসির মোটরসাইকেল দরকার। জিরো থেকে মাত্র ৩ সেকেন্ডে ১০০ সিসিতে চলে যায়। তাকে আপনি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন। এখানে মোগল সম্রাটের মতো এক একটা মোগল গড়ে উঠেছে। কবে থেকে বলা হচ্ছে নসিমন, করিমন, ভটভটি বন্ধ করতে হবে। বন্ধ হয়নি। আর হবেও না। মোটরসাইকেল, গণপরিবহন, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন, ভটভটি প্রতিটার একটা মোগল সম্রাট আছে। আমরা যদি এভাবে চলতেই থাকি, পরিবহনব্যবস্থায় শৃঙ্খলা না আনতে পারি, আলাদা লেন না করতে পরি, তাহলে দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ

খোন্দকার এনায়েত উল্যাহ

সড়কের নিরাপত্তা নিয়ে যেখানে আলোচনা হয়, আমি যাই। কিন্তু আজকের আলোচনা মোটরসাইকেলশিল্প নিয়ে। আলোচনায় এসেছে আন্দোলন করে মালিক সমিতি আইন পরিবর্তন করে ফেলে। এটা ঠিক না। জেব্রা ক্রসিং ছাড়া রাস্তা পার হলে ৫ হাজার টাকার জরিমানার বিধান ছিল। সে ব্যাপারে আমরা আপত্তি দিয়েছি। গণপরিবহন আর মোটরসাইকেল মুখোমুখি হতে পারে না। মোটরসাইকেলের প্রয়োজনীয়তা আছে। কিন্তু এর একটা সীমা থাকতে হবে।

মোটরসাইকেলে যাঁরা যাত্রী পরিবহন করবেন, তাঁদের আলাদা নম্বরপ্লেট ও রং থাকতে হবে। যেন বোঝা যায় এই মোটরসাইকেল যাত্রী পরিবহন করে। এরা ঢাকা থেকে একজন যাত্রী রংপুর নিয়ে যাবে? এটা কি কেউ সমর্থন করতে পারি। গত কয়েকটা ঈদে এমন ঘটনা ঘটেছে। একটা প্রতিষ্ঠান কতগুলো মোটরসাইকেল উৎপাদন করবে, এর একটা সীমা থাকতে হবে। ব্যক্তিগত মোটরসাইকেলের ব্যাপারে আমরা কোনো বক্তব্য নেই। গত ঈদে পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলা নিষিদ্ধ করা হলো। আমি সিদ্ধান্তের সভায় যেতে পারিনি। পরের দিন কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় দেখলাম আমার ঘোর প্রতিবাদের জন্য হাইওয়েতে মোটরসাইকেল চলা বন্ধ হয়েছে।

সড়কনিরাপত্তা নিয়ে ২০১৯ সালে ১১১টি সুপারিশ আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিয়েছি। বুয়েটের বিশেষজ্ঞরা আমাদের সঙ্গে ছিলেন। এটা নিয়ে কাজ চলছে। হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন নসিমন, করিমন, ভটভটি চলতে পারবে না। কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এটা মানছেন না। আইনে আছে, হাইওয়ের ১০ মিটারের মধ্যে কোনো পেট্রলপাম্পসহ কোনো স্থাপনা থাকতে পারবে না। একজন সিনিয়র সচিব বলছেন, এটা কি বাস্তবসম্মত! এখানে শুধু পরিবহনমালিকদের দোষ দিলে হবে না। রাস্তা তৈরি হওয়া থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত ব্ল্যাক স্পট আছে। এই সরকারের আমলে কিছু কিছু ব্ল্যাক স্পট মেরামত করা হয়েছে। আমাদের এনা পরিবহনের জন্য আমরা জিপিএইচ সিস্টেমে যাচ্ছি। সবাই আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি হবে বলে আশা করি।

মতিউর রহমান

মতিউর রহমান

আইডেনটিফিকেশন ছাড়া কোনোভাবেই হাইওয়েতে মোটরসাইকেল চালানো উচিত না। যেখানে হাইওয়েতে লেন নেই, সেখানে মোটরসাইকেল কীভাবে চলবে। আমাদের প্রায় ৮০ শতাংশ মোটরসাইকেল বিক্রি হয় গ্রামীণ এলাকায়। গ্রামের মানুষেরা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে তাদের প্রতিদিনের কাজকর্ম করছে। উপজেলা শহরে যাচ্ছে। মোটরসাইকেল গণপরিবহনের বিকল্প হতে পারে না। আমরাও সেটা মনে করি না। গণপরিবহন সারা দেশে, ইন্টার সিটি এবং বিদেশেও যাচ্ছে।

মোটরসাইকেল সাধারণত ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে চলবে। এখন যে আইনকানুনগুলো করা হলো সেটা স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে করলে সঠিক হতো। মোটরসাইকেল বিক্রির সময় লাইসেন্সের বিষয়টি কেন এল, জানি না। দুর্ঘটনার জন্য তো এ নিয়ম হতে পারে না। দুর্ঘটনা কেন হচ্ছে, এর কারণ অনুসন্ধান করে সমাধান বের করতে হবে।

ইউরোপ–আমেরিকার মতো আইন আমাদের দেশে হবে না। আমাদের শিক্ষা, সংস্কৃতি, রুচি ভিন্ন ধরনের। আমাদের অনেক রাস্তার ফুটপাত ভাঙা থাকে। সেখানে কাদাপানি জমে থাকে। মোটরসাইকেল রাস্তার পাশ দিয়ে চলে। সেখানে রাস্তা উঁচু-নিচু ও অনেক ক্ষেত্রে ভাঙা থাকে, এ জন্য দুর্ঘটনা বেশি হয়। আমরা কোনো বিতর্ক করতে আসিনি। আমরা কারও প্রতিযোগীও না।

চালকদের প্রথমে শিক্ষানবিশ সনদ দিতে হবে। শিক্ষানবিশ সময় শেষ হওয়ার এক মাস আগে পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। পরীক্ষায় যারা পাস করবে, অনলাইনে তাদের সনদ দিলে সময় অনেক কমে আসবে বলে মনে করি। আমরা চাই আইনকানুনও থাকবে, ব্যবসাও থাকবে। বিআরটিএর সঙ্গে বসে একটা ভালো সিদ্ধান্তে আসতে পারি। বিআরটিএকে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা দিতে চাই। মোটরসাইকেল বিক্রির সঙ্গে লাইসেন্সের বিষয়টি যুক্তিযুক্ত কি না, বিআরটিএ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে ভেবে দেখবে বলে মনে করি।

মো. লোকমান হোসেন মোল্লা

মো. লোকমান হোসেন মোল্লা

আজকের অনুষ্ঠানে বিজ্ঞ আলোচকেরা আছেন। অনেক দিক থেকে আলোচনা হয়েছে। এ আলোচনা থেকে অনেক সুপারিশ আসবে। বিআরটিএর একার পক্ষে এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করা সম্ভব না। এ জন্য যে সংস্থার যেটা করণীয়, তারা সেটা করবে বলে আশা করি। আজ থেকে তিন বছর আগে সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের উপস্থিতিতে একটা সভা হয়েছিল। সেখানে আপনাদের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিল। সে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে প্রথমে লারনার লাইসেন্স দিয়ে শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে মোটরসাইকেল বিক্রির সময় লাইসেন্সের বিষয়টি আনা হবে।

সেভাবেই চলছিল। গত ঈদের সময় দুর্ঘটনার হার ব্যাপকভাবে বেড়ে চলল এবং হাইওয়েতে যাত্রী পরিবহন শুরু করল। এমনকি ফেরিও যাত্রীর জায়গা দখল করে নিল। সামাজিকভাবে এসবের খুব বিরূপ প্রতিক্রিয়া হলো। এই সবকিছু বিবেচনা করে সরকার মোটরসাইকেল বিক্রির সময় লাইসেন্সের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি তিন বছর আগের সিদ্ধান্ত। এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় বিমামার প্রতিনিধিরা ছিলেন। এখনকার এ বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য মোটরসাইকেল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিআরটিএ বরাবর আবেদন করতে পারত। তাহলে হয়তো বিমামার সঙ্গে আলোচনার সুযোগ হতো। মোটরসাইকেলশিল্পের নীতিমালায় বলা আছে প্রবৃদ্ধি। সেখানে বলা নেই যে এই প্রবৃদ্ধি স্পোর্টিং হবে নাকি স্কুটি হবে। ভিয়েতনামে চলে স্কুটি। স্কুটিতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক কম। স্পোর্টিং গাড়িতে ঝুঁকি অনেক বেশি। আমার গ্রামের অনেক আত্মীয়স্বজন স্পোর্টিং মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে লাশ হয়েছে। আপনারা যেমন বললেন যে মোটরসাইকেল কেনার আগে পৃথিবীর কোথাও রেজিস্ট্রেশন করা হয় না, তেমনি বাংলাদেশে ছাড়া আবার পৃথিবীর কোথাও শুধু স্পোর্টিং গাড়ি চালানো হয় না। যেহেতু এটা স্থানীয় সমস্যা, সে জন্য স্থানীয়ভাবে সমাধানের চিন্তা করা হয়েছে। বিমামা যদি বিআরটিএর কাছে বিষয়টি সমাধানের আবেদন করে, আমাদের দিক থেকে চেষ্টা থাকবে একটা যৌক্তিক সমাধানে আসার। বিআরটিএ অনলাইনে লারনার সার্টিফিকেট দেয়। যে কেউ ঘরে বসে তাঁর অবস্থা জানতে পারে। পরীক্ষায় পাস করলে দুই মাসের মধ্যে গাড়ি চালানোর অস্থায়ী অনুমতিপত্র পেয়ে যায়। দুর্ঘটনারোধে যেটা বিআরটিএর করণীয়, বিআরটিএ সেটা করবে। সবাইকে ধন্যবাদ।

ফিরোজ চৌধুরী

আজকের আলোচনায় অনেক সুপারিশ ও পরামর্শ এসেছে। নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে এসব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে বলে আশা করি। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

সুপারিশ

  • ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী মোটরসাইকেলচালকদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেশি। তাঁদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

  • সড়ক দুর্ঘটনা একটি জাতীয় দুর্যোগ। পরিবহন খাতে অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, নৈরাজ্য দূর করতে হবে।

  • কোনো নিয়ম যেন কোনো শিল্পের উন্নতির প্রতিবন্ধক না হয়, সেটা বিবেচনা করা দরকার।

  • স্পোর্টিং মোটরসাইকেলের চেয়ে স্কুটি মোটরসাইকেলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা কম।

  • গ্রাম ও শহরের সড়কে ত্রুটি আছে। এ জন্য সড়ক নিরাপত্তা বাড়াতে হবে।

  • যেকোনো শিল্পের জন্য ঘন ঘন নীতির পরিবর্তন বন্ধ করা প্রয়োজন

  • মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা কেন হচ্ছে, এর কারণ অনুসন্ধান করে সমাধান বের করতে হবে।

  • সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজন সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ।