একটাই পৃথিবী

‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ উপলক্ষে গ্রামীণফোন ও প্রথম আলোর উদ্যোগে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় ২ জুন ২০২২। আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে এই ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত হলো।

প্রথম আলো আয়োজিত গ্রামীণফোনের সহযোগিতায় ‘একটাই পৃথিবী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা। বাঁ থেকে অরণ্য ক্র্যাফটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নওশীন খায়ের, বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেখ বশির উদ্দিন, গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসির আজমান ও প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে
ছবি: খালেদ সরকার

অংশগ্রহণকারী

আতিকুল ইসলাম

মেয়র, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন

সেখ বশীর উদ্দিন

ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আকিজ গ্রুপ

ইয়াসির আজমান

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, গ্রামীণফোন

ড. মো. মুজিবুর রহমান

সাবেক অধ্যাপক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)

এম এ নওশীন খায়ের

ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অরণ্য ক্রাফট

সঞ্চালনা

মতিউর রহমান

সম্পাদক, প্রথম আলো

আলোচনা

মতিউর রহমান

৫ জুন বিশ্ব পবিবেশ দিবস। ১৯৭৪ সাল থেকে এ দিবস পালিত হয়ে আসছে। জলবায়ু পরিবর্তনের দিক থেকে আমরা বিপজ্জনক অবস্থায় আছি। অবশ্য এ বিষয়ে আমরা সতর্ক। যদিও এসব বিষয়ে আমাদের সূচকগুলো খুব একটা ভালো না। পরিবেশ সুরক্ষায় আমাদের অবস্থান খুবই দুর্বল। বায়ুদূষণ ও নদীদূষণের দিক থেকে আমাদের অবস্থান খারাপ। বুড়িগঙ্গার অবস্থা নিয়ে তো অনেক কথা হয়। আমরা মনে করি, একটাই পৃথিবী। এভাবেই আমাদের আলোচনাটা হবে। শুরুতে বক্তব্য দেওয়ার জন্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমানকে অনুরোধ করছি।

মুজিবুর রহমান

মুজিবুর রহমান

প্রতিবছর ৫ জুন পরিবেশ দিবস পালন করি। এ দিবস নিয়ে আমাদের কিছু চিন্তা থাকে। জলবায়ু পরিবর্তনের দিক থেকে আমরা একটা ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। একদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য পরিবেশদূষণ হচ্ছে। আবার আমরা নিজেরাও পরিবেশ দূষণ করছি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সম্মানিত মেয়র আজকের আলোচনায় আছেন। পরিবেশ রক্ষায় তিনি সচেতন। এটা নিয়ে কাজ করছেন। আমাদের দ্বারা ভীষণভাবে পানি দূষণ হচ্ছে, যেটা ওয়াটার ইকো সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ঢাকার চারপাশের নদী ও ঢাকার মধ্যে যে জলাশয়গুলো আছে, সেখানে যে ধরনের পানিপ্রবাহ থাকার কথা, সেটা কিন্তু নেই। এর কারণগুলো জানি। বিভিন্ন করণে বাস্তবসম্মত উদ্যোগ নেওয়া যাচ্ছে না। ঢাকা শহরের পয়োনিষ্কাশন–ব্যবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ ব্যাপারে মেয়র মহোদয় উদ্যোগ নিয়েছেন। কীভাবে এর উন্নতি করা যায়, সে ব্যাপারে আমরা চিন্তা করছি। বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থা এত খারাপ যে কখনো কখনো বিশ্বে বায়ুদূষণের দিক থেকে এটা এক অথবা দুই নম্বরে চলে আসে।

‍এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের থিম হলো ‘আমাদের একটাই পৃথিবী’। নানা কারণে আমরা প্রকৃতির বিরুদ্ধে চলে যাচ্ছি। আমি মাইক্রো প্লাস্টিক নিয়ে কাজ করছি। সম্প্রতি বুড়িগঙ্গার পানি পরীক্ষা করে দেখি যে সেখানে এর উপস্থিতি এত বেশি, যা আমাদের জন্য খুবই বিপজ্জনক। এটা ৫ মিলিমিটার থেকে ছোট। খালি চোখে দেখা যায় না। এটা ফিল্টার হয় না। খাদ্যে ও পানির সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে। প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণের দ্বারা আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। কিন্তু এর সঠিক তথ্যের অভাব। এর কারণ হলো কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা কোনো গবেষণা সংস্কৃতিতে ঢুকতে পারিনি। গবেষণার বিষয়ে সরকারি–বেসরকারি সবারই মনোযোগী হতে হবে। কোনো প্রকল্প নেওয়ার পর পরিবেশের ওপর এর প্রভাব চিন্তা করা জরুরি। পরিবেশ বিবেচনায় রেখে জাতীয়ভাবে যদি একটা পরিকল্পনা করা যায়, তাহলে পরিবেশ রক্ষায় সুফল পাওয়া যাবে।

ইয়াসির আজমান

ইয়াসির আজমান

আমরা সৌভাগ্যবান যে একটা বাসযোগ্য পৃথিবী পেয়েছি। প্রশ্ন হচ্ছে, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী রেখে যেতে পারব কি না। এ পৃথিবীতে আমাদের ও আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের স্বপ্ন যেন পূরণ হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বলা হচ্ছে, ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতি সাতজনে একজন স্থানান্তর হয়ে যাবে। নদীভাঙন, পাহাড়ধসসহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের কয়েক মিলিয়ন মানুষ স্থানান্তর হয়েছে। গ্রামীণফোনের ১৮ হাজার বিটিএস আছে। এখানে যে কার্বন নিঃসরণ হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা এর ৫০ শতাংশ কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছি। ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আমরা ৬ দশমিক ৮ ভাগ কার্বন নিঃসরণ কমাতে পেরেছি। বিদ্যুৎ না থাকলে জেনারেটর দিয়ে বিটিএস চলে। একই সঙ্গে সোলার দিয়ে চেষ্টা করেছি। জেনারেটরে বেশি কার্বন নিঃসরণ হয়। আমরা এখন সোলার এনার্জির সঙ্গে কমার্শিয়াল পাওয়ার ও লি-আয়ন ব্যাটারির সমন্বয় করে কাজ করছি।

২০২১ সালে ৩৬টি সাইটে এটা আমরা ব্যবহার করি। এতে ১ লাখ ৯৭ হাজার লিটার ডিজেল খরচ কমেছে। এটা পরিবেশবান্ধব। এখন আমরা এভাবে কাজ করে যেতে চাই।

সম্প্রতি আমরা ই-সিম ব্যবহারের দিকে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে সিমের ব্যবহার থাকবে না। লাখ লাখ মানুষ যদি তাদের সিম পরিবেশে ফেলে দেয়, তাহলে পরিবেশের অনেক ক্ষতি হয়। আমাদের কর্মীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করেছি। আমাদের অফিসে প্লাস্টিকের পানির বোতল ব্যবহার করা হয় না। আমরা এটা নিষিদ্ধ করেছি। যার যার বোতল নিয়ে আসতে হবে। এটা হয়তো ছোট উদ্যোগ। গতকাল একটা কোম্পানি সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা আর প্লাস্টিক ব্যবহার করবে না। পরিবার, সমাজসহ সবার মধ্যে যদি এই সচেতনতাটা আসে, তাহলে পরিবেশে একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। পরিবেশ রক্ষায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমাদের মধ্যে মাননীয় মেয়র উপস্থিত আছেন। তাঁর নেতৃত্বে আমাদের গ্রামীণফোনের দিক থেকে যা করা দরকার, আমরা তার সবটুকু করব। আমরা মোবাইল ফোনসেটও রিসাইকেল করতে চাই। কিন্তু এ ব্যাপারে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

সেখ বশীর উদ্দিন

সেখ বশীর উদ্দিন

আকিজ প্রায় আট দশকের প্রতিষ্ঠান। আমার বাবা এটা প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৬ সাল থেকে আমি এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কাজ করছি। দেশের বিদ্যমান নীতিমালা মেনে আমরা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করি। ভোগ্যপণ্য সঠিক নিয়ম মেনে তৈরি হচ্ছে কি না, এখনকার প্রজন্ম এ ক্ষেত্রে অনেক বেশি সচেতন। বায়ু, পানি ও শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আমরা সর্বোচ্চ সচেতন। এসব ক্ষেত্রে যে মাত্রায় গেলে দূষণ হয়, আমরা এর অনেক নিচে অবস্থান করি।

আমরা সর্বশেষ যে সিমেন্ট ফ্যাক্টরির নকশা করেছি, সেটার বায়ুদূষণ নির্ধারিত সীমার ২০ গুণ কমে করেছি। আমরা ইটিপিমুক্ত সিরামিকশিল্পের পরিকল্পনা করছি। সম্পূর্ণ ইকো সিস্টেমে চলবে। পৃথিবীকে কোনো সীমা দিয়ে বেঁধে রাখার বিষয় না। তাই চীনের উহানের কোভিড খুব অল্প সময়ের মধ্যে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল। বায়ু, পানি ও শব্দ আমাদের প্রচণ্ডভাবে দূষণ করছে। কিন্তু এর থেকেও পৃথিবীব্যাপী একটা ভায়াবহ সমস্যা হলো প্লাস্টিকের ব্যবহার। পলিথিনমুক্ত করার বিষয়টি আমাদের নীতিমালায় অ্যাজেন্ডা আকারে আনতে হবে। এ বিষয় কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। পৃথিবীতে প্রযুক্তিগত অনেক পরিবর্তন এসেছে। আমাদের নিজস্ব বাস্তবতায় পরিবেশ রক্ষায় নীতিমালা ঠিক করতে হবে। এটা শুধু পানি, বায়ু ও শব্দের ক্ষেত্রে নয়—সব ক্ষেত্রে একটা বাস্তবসম্মত নীতিমালা থাকতে হবে। এই দায়বদ্ধতা আমাদের সবাইকে অনুভব করতে হবে। জেল-জরিমানা করলে যে ঠিক হবে আমি সেটা মনে করি না। প্রত্যেকের ভেতর থেকে অনুভব করতে হবে। পরিবেশ দূষিত হলে তিনি নিজেও এর শিকার হবেন। আমাদের ঢাকা শহর আজ প্রায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে। আমি এই শিল্প গ্রুপের মালিক হই আর যাই হই না কেন, আমি এই শহরের নাগরিক। তাই শহরে যারা বাস করেন, তাদের প্রত্যেকের পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি ভেতর থেকে অনুভব করতে হবে। আবার যারাই পরিবেশ রক্ষায় ব্যত্যয় করবেন, তাদের সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে আইন প্রয়োগ করতে হবে।

এম এ নওশীন খায়ের

এম এ নওশীন খায়ের

বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে শিল্পায়ন হচ্ছে। আর সে জন্য অনেক কার্বন নিঃসরিত হচ্ছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর সামাজিক দায়বদ্ধতা খুব জরুরি। আমাদের পরিবেশের গাছ কাটা হচ্ছে, বন উজাড় করা হচ্ছে। আমাদের বন যেন ধ্বংস না হয়, গাছপালা যেন না কাটা হয়, সে বিষয়ে কাজ করা প্রয়োজন। আমাদের ‘অরণ্য ক্রাফট’ একটি ছোট প্রতিষ্ঠান। ১৯৮০ সালে এর যাত্রা শুরু হয়। খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সহযোগিতায় এ প্রতিষ্ঠান গবেষণা শুরু করে। তখন যেখানে–সেখানে পোশাকশিল্পের কারখানা গড়ে উঠছিল। শিল্পের ওপর তেমন নিয়ন্ত্রণ ছিল না।

নদীতে ব্যাপকভাবে বর্জ্য পড়ছিল। বিশেষ করে নীল বিপ্লবের পরে ন্যাচারাল ডাই প্রসেসটা এ অঞ্চলে ছিল না। দেশীয় ন্যাচারাল ডাই প্ল্যান্টের জন্য বন মন্ত্রণালয় থেকে একটি নীতিমালা করার ক্ষেত্রে আমরা কাজ করেছিলাম। কিন্তু এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লব চলছে। অনেক কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে। তবে আমাদের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান পরিবেশ রক্ষায় যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সেটি নিতে পারেনি। আমাদের জীবন ও পরিবেশের অনেক পরিবর্তন হচ্ছে। কিন্তু পরিবেশ রক্ষায় এত ধীরগতিতে কাজ হচ্ছে যে কতটুকু পরিবেশ রক্ষা করা যাবে, সেটি বড় প্রশ্ন।

ক্ষুদ্র শিল্প অনেক সমস্যা মোকাবিলা করছে। তাদের সম্পদের অভাব, সঠিক তথ্যের অভাব, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অভাব। ক্ষুদ্র শিল্প কী পরিমাণ কার্বন নিঃসরণ করে তার কোনো তথ্যও নেই যে এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। পৃথিবীর মুনাফা গ্রহণ করতে হলে আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে। সম্পদ ও উৎপাদনের পুনর্বণ্টন করতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, প্রাতিষ্ঠানিক সামাজিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা।

আতিকুল ইসলাম

আতিকুল ইসলাম

প্রকৃতিকে আমরা ধ্বংস করে চলেছি। প্রকৃতি এর প্রতিশোধ নিচ্ছে। দখল ও দূষণ দুটিই একসঙ্গে চলছে। জাতিসংঘে একটি মেয়র ফোরাম আছে। সেই ফোরামে আমি এক্সিকিউটিভ ভাইস চেয়ারম্যান। লন্ডনের মেয়র হলো চেয়ারম্যান। সারা বিশ্ব থেকে সাতজন মেয়র অংশগ্রহণ করেছিলেন। এশিয়া থেকে আমি প্রতিনিধিত্ব করেছি। কথা বলার জন্য এটা ছিল অনেক বড় প্ল্যাটফর্ম। সেখানে আমি তিনটি ‘সি’ এর কথা বলেছি। কোভিড, ক্লাইমেট চেঞ্জ ও কনফ্লিক্ট। তারা এটাকে খুব প্রশংসা করেছে। তিনটি ‘সি’কে তারা মূল্য দিচ্ছে।

মেয়র ফোরামে আমি বলেছি, প্রতিদিন ঢাকা শহরে দুই হাজার মানুষ আসছে। সমুদ্রের পানির উচ্চতা বাড়ছে। উপকূলের মানুষ সহায়–সম্বল হারিয়ে ঢাকা শহরে আসে। আমি শহরের আর্থিক ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করার কথা বলেছি। জলবায়ু তহবিলের ৫০ শতাংশ শহরে বিনিয়োগ করার কথা বলেছি। ২০৫০ সালে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ শহরে বাস করবে।

ঢাকা শহরের খাল-বিল ও নদীতে মাছের চাষ হওয়ার কথা; কিন্তু সেখানে মশার চাষ হচ্ছে। ঢাকার লাউতলা খাল দখল করে বুড়িগঙ্গায় সংযোগ দিয়েছি। এটা উদ্ধার করতে ৫৪ দিন লেগেছে। হাতিরঝিলের মতো খালগুলো যদি আমরা বায়োডাইভার্সিটি করতে পারতাম, তাহলে আমাদের পরিবেশ অনেক সুন্দর হতো। অবৈধ দখলদারদের ভবনসহ যেকোনো ধরনের অবৈধ ভবন ভেঙে ফেলা হবে। বর্জ্য ফেলার জায়গা হিসেবে খাল ব্যবহার করা হচ্ছে। খাল সামনে রেখে বাড়ি বানাতে হবে—খাল ব্যবহার করতে হবে সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য। প্রত্যেকের বাসাবাড়িতে ইটিপি প্ল্যান্ট বসাতে হবে। আমি আমার নিজের বাড়িতেও বসিয়েছি। বারিধারা, গুলশানের বাসাবাড়ির ময়লাও সেখানকার জলাশয়ে যাচ্ছে। সহজেই তারা ইটিপি করতে পারেন। নলেজ শেয়ার করতে হবে। মেয়রস ফোরামের মাধ্যমে কোন দেশে কী কাজ হচ্ছে, সেটি জানতে পারছি। একটিই পৃথিবী, এই পৃথিবীকে সুন্দর রাখতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

মতিউর রহমান

আমাদের একটি জাতীয় নীতিমালা দরকার। সিটি করপোরেশন, সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, নাগরিক সমাজ সবাই যদি পরিবেশ রক্ষায় আরও সচেতন হয়, সবাই যদি অনুভব করে পরিবেশ ধ্বংস হলে বিপর্যয় দেখা দেবে, তাহলে আমরা সুন্দর একটি পৃথিবী গড়তে পারব। আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।