বাংলাদেশ ভূমি আইন ২০২০ (খসড়া): পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ

৯ জানুয়ারি ২০২১ অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) ‘বাংলাদেশ ভূমি আইন ২০২০ (খসড়া): পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল গোলটেবিল আয়োজন করে। এ আয়োজনে সম্প্রচার সহযোগী ছিল প্রথম আলো। এই ক্রোড়পত্রে আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষেপে প্রকাশিত হলো।

অংশগ্রহণকারীরা

সুলতানা কামাল

মানবাধিকারকর্মী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা।

বিচারপতি মো. নিজামুল হক

অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, আপিল বিভাগ

খুশী কবির

চেয়ারপারসন, এএলআরডি ও সমন্বয়কারী, নিজেরা করি

সুব্রত চৌধুরী

আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

শামসুল হুদা

নির্বাহী পরিচালক, এএলআরডি

কাজল দেবনাথ

প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌্‌যাপন পরিষদ

তবারক হোসেন

আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

জেড আই খান পান্না

আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন:

মিনহাজুল হক চৌধুরী

আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

সূচনা বক্তব্য:

আব্দুল কাইয়ুম

সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো

সঞ্চালনা:

ফিরোজ চৌধুরী

সহকারী সম্পাদক, প্রথম আলো

আলোচনা

আব্দুল কাইয়ুম

প্রস্তাবিত ভূমি আইন (খসড়া) পর্যালোচনা নিয়ে আজকের আলোচনা। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। কারণ, প্রায় প্রত্যেক মানুষই ভূমির সঙ্গে সম্পৃক্ত। আইন কমিশন একটা প্রস্তাবিত আইনের খসড়া ওয়েবসাইটে দিয়েছে। এর মাধ্যমে আইন কমিশন জনগণের মতামত জানতে চায়। এএলআরডিকে ধন্যবাদ জানাই প্রস্তাবিত ভূমি আইনের খসড়ার ওপর গোলটেবিল আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। এখানে বিশেষজ্ঞ আলোচকেরা আছেন। তাঁরা এ বিষয়ে মতামত দেবেন। আশা করি আইন কমিশন এসব মতামত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।

মিনহাজুল হক চৌধুরী

মিনহাজুল হক চৌধুরী

ভূমিসংক্রান্ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সব আইন সংশোধন ও সংহতকরণের লক্ষ্যে আইন কমিশন নিজ উদ্যোগে প্রস্তাবিত ভূমি আইন ২০২০-এর খসড়াটি প্রণয়ন করেছে। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে খসড়াটি দেশে প্রচলিত আইনসমূহের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। সংবিধানের মূলনীতি ও মৌলিক অধিকারের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক।

উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিষয় আমি সংক্ষেপে তুলে ধরছি। আইনটিতে জরিপের গেজেট জারির পর জরিপভুক্ত এলাকার চলমান সব দেওয়ানি মোকদ্দমা বাতিল এবং কোনো রায় বা ডিক্রি হলে সেটি অপ্রয়োগযোগ্য মর্মে বিধান রাখা হয়েছে। উপরন্তু খতিয়ান প্রণয়ন/প্রকাশনা/সত্যয়নের বিষয়েও দেওয়ানি আদালতের সব এখতিয়ার বারিত/নিবারিত (অকার্যকর) করা হয়েছে [১৭ ধারা]।

বর্তমানে প্রচলিত প্রজাস্বত্ব আইনের বিধানমতে, জরিপ চলাকালীন শুধু সংশ্লিষ্ট ভূমির খাজনার পরিবর্তন অথবা প্রজার শ্রেণির বিষয়ে দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ার বারিত (অকার্যকর) আছে।

খতিয়ানে কার নাম লিপিবদ্ধ হবে, এ প্রসঙ্গে খসড়া আইনের ২৪(৬) ও ৪৫(৩) ধারার বিধান পরস্পর সাংঘর্ষিক। আশ্চর্যজনকভাবে ৪৫(১০) ধারায় জরিপ কর্মকর্তাদেরও সীমানা চিহ্নিত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত প্রকাশিত খতিয়ানের বিরুদ্ধে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষ বা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ছাড়া অন্য কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। অথচ খসড়াটিতে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের কোনো বিধান রাখা হয়নি এবং ওই ট্রাইব্যুনাল গঠনসংক্রান্ত প্রজাস্বত্ব আইন বাতিল করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় ভূমি হস্তান্তরকারীর ন্যূনতম বয়স নির্ধারিত হয়েছে ২১ বছর (৬৭ ধারা), যা প্রচলিত সাবালকত্ব আইন ও চুক্তি আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। প্রচলিত ক্ষেত্রে একজন নাবালকের (অনূর্ধ্ব ১৮ বছর) পক্ষে তার আইনগত অভিভাবক আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ২১ বছর বয়স্ক ব্যক্তি কীভাবে সম্পত্তি হস্তান্তর করবেন?

৭২ ধারায় খাস বা অধিগ্রহণকৃত ভূমি বা ভূমিস্থ স্থাপনা/ফ্ল্যাট হস্তান্তরের ক্ষেত্রে শুধু একই পেশা বা শ্রেণির কাছে হস্তান্তরের বিধান রাখা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং সংবিধানের ৪২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। ৭৪ ও ৭৫ ধারায় ভূমিখণ্ডের শরিক ও বর্গাদারকে ক্রয়ের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ‘ভূমিখণ্ডের শরিক’ শব্দটি কোনো আইনে বিবৃত নয় এবং বর্গাদারের ক্রয়ের অগ্রাধিকার প্রচলিত কোনো আইনে নেই।

খসড়া আইনটিতে বিচ্ছিন্নভাবে পুকুর, জলাশয়, বাগান ইত্যাদি শ্রেণি পরিবর্তন, ভূমি অধিগ্রহণ ও হুকুম দখল, বন/রেল/বন্দরের ভূমি, অর্পিত ও পরিত্যক্ত সম্পত্তি, ওয়াক্ফ/দেবোত্তর/ট্রাস্ট–সংক্রান্ত বিচ্ছিন্ন কিছু বিধান রাখা হয়েছে। অথচ এর প্রতিটি বিষয়ে পরিপূর্ণ আইন বলবৎ আছে। ওই আইনসমূহের সংশ্লিষ্ট ধারাসমূহ বাতিলক্রমে বিচ্ছিন্নভাবে এই আইনে কিছু বিধান মূলনীতির পরিপন্থী।

দুটো বিষয় এখানে উল্লেখ্য: ১. ক্রমবর্ধমান বনভূমি ধ্বংস ও বেদখল হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ১৯৯০ সালে ফরেস্ট অ্যাক্টের ৬৩ ধারা সংশোধনের ভিত্তিতে এ–সংক্রান্ত অপরাধের সাজা সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদণ্ড ও অনূর্ধ্ব ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করেছে। খসড়া আইনে তা কমিয়ে সর্বোচ্চ ৬ মাস কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে। বোধ করি সাজা কমানোর এমন বিধান এটিই প্রথম এবং এর ফলে অপরাধটিকে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের দ্বারা পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালতের এখতিয়ারাধীন করার আশঙ্কা থাকবে।

একইভাবে ওয়াক্ফ অধ্যাদেশের বিপরীতে জেলা প্রশাসককে যেকোনো জটিলতার ক্ষেত্রে ওয়াক্ফ/দেবোত্তর/ট্রাস্ট সম্পত্তির যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। অর্পিত সম্পত্তিসংক্রান্ত ২৪৯ ধারার প্রোভাইসোর বিধানটি সুপ্রিম কোর্ট প্রদত্ত রায়ের পরিপন্থী। সরকারি, পতিত ও গণব্যবহার্য জমি এবং জলমহালের ক্ষেত্রে দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ার নিষিদ্ধ এবং প্রশাসনের কথাই চূড়ান্ত করা হয়েছে।

খসড়া আইনের সর্বাপেক্ষা আশ্চর্যজনক ও অসাংবিধানিক বিধানটি ১৫তম অধ্যায়ে। ২৬৪ ধারা অনুযায়ী জেলা প্রশাসক মনোনীত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসারের সমন্বয়ে ‘ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি ট্রাইব্যুনাল’ গঠিত হবে। প্রশাসনের ওই ব্যক্তিরা ভুল রেকর্ড (খতিয়ান), বণ্টন, সীমানা বিরোধ, অবৈধ দখল ও জবরদখল–সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি করবেন। একই ধারায় শর্ত দিয়ে বলা হয়েছে, ভূমিমালিকানা বা বাঁটোয়ারাসংক্রান্ত বিরোধ দেওয়ানি আদালত নিষ্পত্তি করবেন। উপরিউক্ত কয়েকটি শব্দ দ্বারা বর্তমানে দেওয়ানি আদালতে বিচারাধীন ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ মামলা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হবে। খসড়া আইনপ্রণেতারা ‘বণ্টন ও বাঁটোয়ারা’র মধ্যে কী পার্থক্য পেলেন, তা আমাদের বোধগম্য নয়।

ভুল রেকর্ড, অবৈধ দখল, জবরদখল ও সীমানা বিরোধসংক্রান্ত অনেক মামলায় সরকার একটি পক্ষ, যার প্রতিনিধিত্ব করেন জেলা প্রশাসক। এ ক্ষেত্রে সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে জেলা প্রশাসক নিজেই বিরোধের একটি পক্ষ, সে ক্ষেত্রে ওই জেলা প্রশাসকের অধীন কর্মকর্তারা সেখানে বিচারক হিসেবে কী ভূমিকা রাখবেন, তা বোধগম্য নয়। উপরন্তু ওই প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনারের কাছে আপিলের বিধান রাখা হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষের আদেশ কার্যকর করার ক্ষমতাও জেলা প্রশাসকের (২৬৫ ও ২৬৭ ধারা)।

বস্তুত, খসড়া আইনের ১৫তম অধ্যায়ের প্রদত্ত বিধান সম্পূর্ণ বেআইনি ও অসাংবিধানিক। ১৫তম অধ্যায়ের প্রদত্ত বিধান মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট প্রদত্ত মাসদার হোসেন মামলায় প্রদত্ত রায়ের পরিপন্থী।

খসড়া আইনের ২৭২টি ধারার মাধ্যমে ১৮৬৮ থেকে বর্তমান পর্যন্ত ভূমিসংক্রান্ত প্রচলিত ২২টি আইন, অধ্যাদেশ এবং পিও রহিত করা হয়েছে, যার মধ্যে ৯টির সংশ্লিষ্ট ধারাসমূহ রহিত হবে। বলা যায়, প্রস্তাবিত এই বিধান অভিনব।

আমাদের পর্যবেক্ষণ, খসড়া আইনটি প্রণয়ন ও প্রকাশনার দায় একমাত্র আইন কমিশনের। প্রস্তাবিত এই আইন দ্বারা মূলত বিচারপ্রার্থীদের জন্য দেওয়ানি আদালতের দ্বার রুদ্ধ করে ভূমিসংক্রান্ত সব বিরোধ নিষ্পত্তির ভার প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের ওপর ন্যস্ত করার কথা বলা হয়েছে। আমরা আশা করব, আইন কমিশন এই খসড়া নিয়ে সব পক্ষের মতামত গ্রহণ করবে।

বিচারপতি মো. নিজামুল হক

বিচারপতি মো. নিজামুল হক

আজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এ ইস্যু বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রত্যেক মানুষের কাছে প্রয়োজনীয়। এটা নিয়ে অনেক আলোচনা হওয়া দরকার। শুধু আলোচনা করলেই হবে না। এটা নিয়ে অনেক কাজ করতে হবে। ক্যাম্পেইন করতে হবে। আইন কমিশনে গিয়ে এটা ঠিক করতে হবে। জনাব মিনহাজের উপস্থাপনায় যে সমস্যাগুলো উঠে এসেছে, সেগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। আইন কমিশন আগেও বিভিন্ন আইনের প্রস্তাব করেছে। সে আইনগুলোকে আমরা সাধুবাদও জানিয়েছি। কিন্তু এবার যে আইনের খসড়াটি করা হয়েছে, সেটা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের করতে বলা হয়নি, এটা তারা নিজ উদ্যোগে করেছে। আইনের এই খসড়া মোটেই গ্রহণযোগ্য হয়নি। এর মাধ্যমে বিচার কার্যক্রমের একটা বড় অংশ প্রশাসনের কাছে দেওয়া হচ্ছে। এটা দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই এবং উচিতও নয়। আদালতে একটা মামলা চলমান। এমন অবস্থায় একজন সেটেলমেন্ট অফিসার যা করবেন, সেটাই যদি প্রতিষ্ঠিত হয়, টিকে যায় এবং আদালতের রায় বাতিল হয়ে যায়, তাহলে কোনোক্রমে এটাকে গ্রহণ করা যায় না।

এখানে দেখলাম ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির ব্যবস্থাপনাও জেলা প্রশাসকের কাছে চলে যাবে। তবে আমার বিশ্বাস, আলোচনার মাধ্যমে এসব ঠিক করা সম্ভব হবে। প্রস্তাবিত খসড়া আইনের বিষয় আমাদের একটা টিম করতে হবে। এ টিম সবকিছু বিচার–বিশ্লেষণ করবে। তারপর এটা নিয়ে আইন কমিশনের সঙ্গে বসতে হবে। আইন কমিশনের কাছে আমাদের অবশ্যই বলতে হবে, এসব কারণে আমরা এই খসড়া মানতে পারছি না। প্রশাসনকে অতিক্ষমতায়িত করে বিচারব্যবস্থার ক্ষমতা কমানো হচ্ছে কি না? এটা দেখা আমাদের দায়িত্ব। সেভাবে এগোতে হবে। ভূমি আইন এমন একটা আইন যে দেশের প্রায় প্রত্যেক মানুষকে এটা প্রভাবিত করে।

কাজল দেবনাথ

কাজল দেবনাথ

আমি আইনের ছাত্র নই। একজন সাধারণ মানুষ। একজন ভুক্তভোগী। অত কিছু বুঝি না। তবে অর্পিত সম্পত্তি নিয়ে গত ৪০ বছর কাজ করছি। অর্পিত সম্পত্তির ক্ষেত্রে বলা ছিল, সরকার (কাস্টডিয়ান) দেখাশোনা করবে কিন্তু সে মালিক নয়। তহশিলদার, এসি ল্যান্ড, ডিসি—তাঁরা মনে করেন, অর্পিত সম্পত্তির মালিক তাঁরা। দেবোত্তর সম্পত্তির ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটেছে। ২০১২ সালে দেবোত্তর সম্পত্তি নিয়ে কাজ হয়। তখন আমরা এর নাম দিলাম ‘দেবোত্তর সম্পত্তির পুনরুদ্ধর ও সংস্কার’। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এর নাম দেওয়া হলো ‘দেবোত্তর সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা’। এই ব্যবস্থাপনার সব ক্ষমতা ডিসির হাতে দেওয়া হলো।

জনাব মিনহাজ তাঁর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় বলেছেন, বিচার বিভাগ থেকে বিষয়টা প্রশাসনের কাছে দেওয়া হচ্ছে। আইন কমিশনের এই ভূমি আইনের খসড়া প্রস্তাবনায় আমি ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ। আমার কথা হলো, এমন কিছু করা মোটেই উচিত হবে না, যেন বিচার বিভাগকে বাদ দিয়ে ক্ষমতা প্রশাসনের ওপর যায়। প্রশাসনের ব্যাপারে অনেক ক্ষেত্রে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। এ অবস্থার আরও সর্বনাশ করা উচিত হবে না। এই সাপলুডু খেলা বন্ধ করতে হবে। আমি মনে করি, ভূমি সংস্কারের প্রথম কাজ হওয়া উচিত ভূমির দলিল ডিজিটাল করা, যেন আর কেউ জাল দলিল করতে না পারে। ভূমি সংস্কারের এটা হলো প্রধান কাজ।

সুব্রত চৌধুরী

সুব্রত চৌধুরী

আমি প্রথমে ধারণা করেছিলাম ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে এ আইন করা হয়েছে, কিন্তু পরে দেখলাম এটা করেছে আইন কমিশন। তাদের পক্ষ থেকে এটা ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে তারা এটা করেছে। প্রায় এক বছর হতে চলল।

একসময় দেশে আইন কমিশন ছিল না। অনেক আন্দোলন করে আশির দশকে আমরা এটা পেয়েছি। আইন কমিশনের চেয়ারম্যান দেশের একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি। তাঁর নেতৃত্বে আইন কমিশন। একজন সাবেক প্রধান বিচারপতি যেখানে চেয়ারম্যান, সেখান থেকে কীভাবে এমন অগ্রহণযোগ্য ভূমি আইনের খসড়া জাতির সামনে উপস্থাপন করা হলো?

ভূমি বিষয়ে ব্রিটিশরা ধারাবাহিকভাবে অনেক আইন করেছে। ১৭৯০ সাল থেকে ব্রিটিশরা, বিশেষ করে ১৭৯৩ সাল থেকে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে যে ভূমির শাসন শুরু করেছিল, এর দুই শ বছর পার হয়ে গেছে। বাংলাদেশেও অনেক আইন হয়েছে। এর প্রতিটি আইন অনেক বিবেচনা করে করা হয়েছে। জনগণ এর সুফল পাচ্ছে। বন, রাবারবাগান, জলাভূমি—প্রতিটির বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে। সেখানে কোনো ভুল থাকলে উচ্চ আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যায়। সংশোধন হয়। সরকারের দৃষ্টিতে আনার জন্য হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশনা দেন। এভাবে আইনগুলোর পরিমার্জন করা হয়েছে। ১৯৮০ সালে ভূমি মন্ত্রণালয় অসাধারণ কাজ করেছে। এর সুফল মানুষ পাচ্ছে। এই যে আমরা বলি, জাল যার জলা তার, লাঙল যার জমি তার। বর্গাচাষিদের স্বার্থ রক্ষার জন্য অনেক আইন হয়েছে। আইন কমিশন হঠাৎ সেসব বাদ দিয়ে এক ছাতার নিচে নিয়ে আসবে, এটা হয় না। এতে ২২টির বেশি আইন বাতিল হয়ে যাবে। এটা করার আগে অনেকবার ভাবা উচিত ছিল। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, এনজিও, আইনজীবী—যাঁরা এসব নিয়ে কাজ করেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল।

আইন কমিশন একটা সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান। সরকার বলেনি, জনগণ বলেনি, তাহলে কেন আপনারা এমন একটা আইনের প্রস্তাব করলেন? কতকগুলো মীমাংসিত বিষয়কে এর মধ্য দিয়ে অমীমাংসিত করে দেওয়া হয়েছে। এটা কোনোভাবে প্রস্তাবিত খসড়া হতে পারে না। প্রস্তাবিত খসড়ারও একটা গ্রহণযোগ্যতা থাকে। এমন একটা আইনের খসড়া জাতির সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে, যেটা অগ্রহণযোগ্য।

তবারক হোসেন

তবারক হোসেন

আমি একটা বিষয় বুঝতে পারি না যে আইন কমিশনের মতো একটা প্রতিষ্ঠান থেকে কীভাবে এ ধরনের একটা প্রস্তাবনা হয়। এটা আইনের কোনো প্রস্তাবনা হতে পারে না। এটা আইনের খসড়া বলেও বিবেচনা করার সুযোগ নেই। এখানে বলা হয়েছে সেটেলমেন্ট অফিসার হচ্ছেন এমন কর্মকর্তা, যিনি সব বিরোধের নিষ্পত্তি করে ফেলবেন। এ ধরনের কোনো আইনের খসড়া গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

খুশী কবির

খুশী কবির

আমাদের উন্নয়ন আলোচনায় ভূমির বিষয়টা তেমন আসে না। অনুৎপাদনশীল খাতেই ভূমির ব্যবহার বেশি হয়ে থাকে। ১৯৮৪ সালে আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ ভূমি কমিশন করেছিলেন। তাঁরা সবার মতামতের ভিত্তিতে এটা করেছিলেন। এখন আইন কমিশনের ওয়েবসাইটে ভূমি আইনের যে খসড়া দেওয়া হয়েছে, এটা আমূল পরিবর্তিত একটা আইন।

আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছর পার করতে যাচ্ছি। গণতান্ত্রিক চেতনার মধ্য দিয়ে এটা আসা উচিত। কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই এটা কীভাবে করা হলো? কোথাও থেকে কোনো তথ্য–উপাত্ত না নিয়ে ঢালাওভাবে একটা খসড়া তৈরি করা হয়েছে। এখন সবাই মিলে বলতে হবে যে এটাকে আমরা গ্রহণ করছি না। আমাদের আইন কমিশন, ভূমি মন্ত্রণালয়–সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটি এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসতে হবে। এই খসড়া আমরা কেন মানতে পারছি না, সেটা আমাদের দেখাতে হবে। এ আইন প্রত্যেক নাগরিককে প্রভাবিত করবে। এখন প্রথম কাজ হচ্ছে আইনের খসড়াটি প্রত্যাহার করে সবার মতামত গ্রহণ করা।

এই খসড়া আইনে পরিণত হলে এত দিন আমরা ভূমি বিষয়ে যা অর্জন করেছি, সব তছনছ হয়ে যাবে। দরিদ্র, ভূমিহীন, খেতমজুর, বর্গাচাষি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, দলিত সম্প্রদায়সহ সবার ওপর এর অত্যন্ত নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পড়বে।

আমরা বোধ হয় আমাদের একাত্তরের চেতনাকে ভুলে যাচ্ছি। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এই ধরনের একটি আইনের চিন্তা করা হচ্ছে, তা ভাবা যায় না।

জেড আই খান পান্না

জেড আই খান পান্না

প্রস্তাবিত ভূমি আইনের খসড়ায় দেওয়ানি আদালতের (সিভিল কোর্ট) এখতিয়ার বাদ দিয়ে সেখানে জেলা প্রশাসকের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। এতে দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ার চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে অর্পিত সম্পত্তিসংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ভাবতে হবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা বাড়াবেন, নাকি বাদ দেবেন। আইন যদি করতে হয়, সেটা অগ্রগতির জন্য করতে হবে। অনগ্রসর জায়গায় নেওয়ার জন্য নয়। বাংলাদেশকে আরও অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ জায়গায় নিতে হবে। এই আইন দেখে আমি আমার ফেসবুকে লিখে একটু ধারণা নিতে চেয়েছিলাম। একজন আইনজীবীও এর পক্ষে মত দেননি।

শামসুল হুদা

শামসুল হুদা

প্রস্তাবিত ‘ভূমি আইন ২০২০ (খসড়া)’ ওয়েবসাইটে উন্মুক্ত করে আইন কমিশন মতামত চেয়েছে। প্রস্তাবিত খসড়াটি আইন কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে করেছে। এই খসড়া তৈরি করার জন্য তাদের সরকার বা কারও পক্ষ থেকে নির্দেশ বা অনুরোধ করা হয়নি। আমি আইনজীবী নই। এটা সংগ্রহ করে বোঝার চেষ্টা করলাম, কিন্তু এমন একটি আইন প্রস্তাব করার কোনো কারণ খুঁজে পেলাম না।

প্রস্তাবিত আইনের খসড়ার শুরুতেই বলা হয়েছে, দেশের সর্বত্র এই আইন প্রযোজ্য হবে। অন্য অনেক আইনে আমরা দেখি একটা ক্লজ থাকে, পার্বত্য তিন জেলা বাদে এই আইন প্রযোজ্য হবে। এখানে এমন কোনো ক্লজ নেই। তাহলে ধরে নিতে হবে পার্বত্য চট্টগ্রামেও এটা প্রয়োগ হতে পারে। এটা যদি হয়, তাহলে তা পার্বত্য চুক্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে। সরকার ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। সেই পার্বত্য চুক্তির আওতায় ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন হয়েছে। সে কমিশন কাজ করছে। সেখানে আঞ্চলিক পরিষদ আছে, জেলা পরিষদ আছে। এসবের কী হবে? পুরো খসড়া পড়ে এর উত্তর আমি পাইনি। আমি শঙ্কিত বোধ করছি যে এটি আইনে পরিণত হলে পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী যেসব আইন হয়েছে, সেগুলো নিয়ে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠবে।

প্রস্তাবিত আইনের ২৭৩ ধারা অনুযায়ী অনেক আইনের আংশিক ধারা বাতিল হবে। দুটো আইন সম্পূর্ণ বাতিল হবে। এর একটা হলো ইস্ট বেঙ্গল স্টেট অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড টেনান্সি অ্যাক্ট। ভূমির ক্ষেত্রে এটাকে আমরা মৌলিক আইন হিসেবে জানি। আর অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন সব সংশোধনীসহ বাতিল হবে।

খসড়ায় অর্পিত সম্পত্তির নতুন তালিকা করার বিধান রেখে দেওয়া হয়েছে। আমরা জানি, অর্পিত সম্পত্তির দুটো তালিকা হয়েছিল। খ তালিকা এই সরকার বাতিল করেছিল, সেখানে বলা ছিল ‘খ’ তালিকা এমনভাবে বাতিল হলো যে খ তালিকার সম্পত্তি কখনো অর্পিত সম্পত্তি বলে বিবেচিত হয়নি। আর এবারের খসড়ায় বলা আছে, তালিকা হলেই সরকারের এখতিয়ারে চলে যাবে। সেটা খাসজমি হিসেবে বিবেচিত হবে।

অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন এই সরকারই ২০০১ সালে করেছে। এটাকে কার্যকর করার জন্য ২০১১ সাল থেকে পাঁচবার এই আইন সংশোধন করা হয়েছে। পার্বত্য ৩ জেলা বাদে ৬১ জেলায় অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ ট্রাইব্যুনাল কাজ করছে। আপিল ট্রাইব্যুনাল কাজ করছে। আমাদের জানামতে, অন্তত ৩৮ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। কিছু হস্তান্তরও হয়েছে। এখন যদি আইনটা বাতিল হয়ে যায়, তাহলে অর্পিত সম্পত্তি ট্রাইব্যুনালের পরিণতি কী হবে? আইন কমিশনের প্রস্তাবিত ভূমি আইন কার্যকর হলে এসব বাতিল হয়ে যাবে। আমরা আবার পাকিস্তান আমলের শত্রু সম্পত্তি আইনের যুগে ফিরে যাব।

এ বিষয়ে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের যৌথ বেঞ্চ যে যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন, সেখানে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে অনেক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বক্তব্য দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষে প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের উক্তি ও মতামতের সূত্র ধরে রায়ে বলা হয়েছে, পাকিস্তান আমলে শত্রু সম্পত্তি আইনটি স্বাধীনতা উত্তরকালে অর্পিত সম্পত্তি আইন হিসেবে বহাল রাখা ছিল একটি ঐতিহাসিক ভুল। আমরা মনে করি, প্রস্তাবিত খসড়া যদি আইনে পরিণত হয়, তাহলে সেই ঐতিহাসিক ভুলই আবার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।

যাঁদের জন্য আইন, যাঁদের কল্যাণে আইন ও যাঁরা আইনের বিজ্ঞজন আছেন, বিচারপতি ও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আছেন এবং যাঁরা এসব নিয়ে গবেষণা করেন, খসড়া বিষয়ে তাঁদের মতামত নিতে হবে। এর সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের অবশ্যই যুক্ত করতে হবে।

সুলতানা কামাল

সুলতানা কামাল

সত্যি কথা বলতে কি, আমরা কিছুটা হতভম্ব হয়েছি। আইন কমিশনের মতো একটা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কীভাবে এত অযৌক্তিক, অগ্রহণযোগ্য একটি খসড়া উপস্থাপন করা হলো, সেটা একটা বিরাট প্রশ্ন। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল প্রতিটি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, সম্পদের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা, এখানে সবকিছুকে উপেক্ষা করা হয়েছে।

এ খসড়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশের যেকোনো জনগোষ্ঠী তাদের যেকোনো অধিকার প্রয়োগ করতে যাক না কেন, তাদের ওপর এ আইনের প্রভাব পড়তে বাধ্য। বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে চুক্তি হয়েছে, সেখানে ভূমি ব্যবস্থাপনার বিষয় রয়েছে, ভূমি কমিশনের দায়দায়িত্ব রয়েছে, অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের যে দায়দায়িত্ব বা ক্ষমতা রয়েছে, সেটার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। নারীদের ভূমি অধিকারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, ভূমি আইনের এ খসড়া অসাংবিধানিকভাবে করা হয়েছে।

একটা স্বাধীন আইন কমিশন থেকে কীভাবে এমন একটি খসড়া তৈরি হলো, যা ক্ষমতাকে এককেন্দ্রিক করে ‍দিচ্ছে? এ ধরনের আইনের মাধ্যমে ক্ষমতা নির্বাহী বিভাগের কাছে চলে যাবে। এই আইনের মাধ্যমে দেওয়ানি আদালতের ক্ষমতা ভীষণভাবে খর্ব করা হয়েছে।

যদি আদালতে ভূমিসংক্রান্ত মামলার অনেক জট হয়, তাহলে তারা এ জট কমানোর জন্য কিছু সংস্কারের প্রস্তাব করতে পারত। সরকারসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে আমরা ভূমিসংক্রান্ত মামলা জটের কথা শুনে থাকি। এ ক্ষেত্রে তারা কোনো সুপারিশ রাখতে পারত।

জেলা প্রশাসকের অনেক কাজ রয়েছে। তাঁরা জেলা শিল্পকলা একাডেমি, জেলা শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিসহ অনেক উপজেলা পর্যন্ত বহুবিধ বিষয়ের সঙ্গে তাঁদের যুক্ত থাকতে হয়। এর মধ্যে তাঁদের কিছু বিচারিক ক্ষমতা রয়েছে, সেগুলোও দেখতে হয়। তাঁদের যদি আবার এই কাজ ও ক্ষমতা দেওয়া হয়, তাহলে অবস্থা কী দাঁড়াবে!

আমাদের যদি আইন কমিশন ডাকে, আমরা যাব। কিন্তু প্রস্তাবিত এই আইনের খসড়ার কোনো যৌক্তিক অবস্থান নেই যে এর পক্ষে কোনো সুপারিশ করা যায়। আমি বলব এ রকম একটা খসড়া অবিলম্বে ওয়েবসাইট থেকে সরিয়ে ফেলে বিদ্যমান আইনের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। যদি কোনো আইনের সংস্কার করার প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে আগে আলোচনা করা দরকার।

ফিরোজ চৌধুরী

‘ভূমি আইন (খসড়া) ২০২০: পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ’ শিরোনামের ভার্চ্যুয়াল গোলটেবিল আয়োজনের জন্য এএলআরডি কর্তৃপক্ষ এবং আজকের আলোচনায় অংশ নেওয়ার জন্য সম্মানিত আলোচকদের প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।