শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরকে এগিয়ে নিতে হবে

২০২০ সালের ১৮ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সামনাসামনি পাঠদানের পরিবর্তে প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য ঘরে বসে শিক্ষা গ্রহণের নানাবিধ উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা হয়েছে। দেশে টেলিভিশন, রেডিও ও কমিউনিটি রেডিও, ওয়েবসাইট, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষাদানের নানা উদ্যোগ আমরা দেখেছি। তবে শহর ও গ্রামে এসব উদ্যোগ একই ফলাফল বয়ে আনেনি। স্বেচ্ছাসেবীদের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম ভলান্টারি সার্ভিস ওভারসিজের (ভিএসও) ভিএসও স্কুল অ্যাপ নিয়ে কাজ করেছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের সাতটি দেশে এই অ্যাপ ব্যবহার করা হচ্ছে পিছিয়ে পড়া ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষায়। এর অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য প্রথম আলোর সহযোগিতায় ভিএসওর উদ্যোগে ১২ এপ্রিল একটি ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। ওয়েবিনারে আলোচনার সংক্ষিপ্ত সার এখানে প্রকাশ করা হলো।

ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর যুব কার্যক্রম ও অনুষ্ঠানপ্রধান মুনির হাসান

সালাহউদ্দিন আহমেদ, প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রধান (অন্তর্বর্তী), ভিএসও

ভিএসও চেষ্টা করে প্রান্তিক ও দরিদ্র সম্প্রদায়ের মানুষের জীবনকে উন্নত করার। গত ৬০ বছরে আমরা প্রায় ৯০টি দেশে ৮০ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবককে সঙ্গে নিয়ে প্রায় ৫ কোটির বেশি মানুষকে সাহায্য করেছি। বাংলাদেশে ১৯৭৪ সাল থেকে আমরা সক্রিয়। বর্তমানে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রায় সাত হাজার শিশুকে শিক্ষায় সাহায্য করছি একটা প্রজেক্টে, যেখানে ভিএসও অ্যাপটি পরীক্ষা করেছি। আমাদের এ অভিজ্ঞতা ও অন্যদের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্যই এ ওয়েবিনার।

মোস্তাফা জব্বার, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আমাদের শিক্ষার্থীরা চরম দুর্দশার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সরাসরি শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ না থাকায় পরোক্ষ যে সুযোগগুলো তৈরি করতে পেরেছি, সেটাও আমরা সবার কাছে সমভাবে পৌঁছে দিতে পারিনি। কারণগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে এ রকম—কোনো অভিজ্ঞতা আমাদের ছিল না এবং এমন চিন্তাভাবনাই ছিল না যে লেখাপড়া শ্রেণিকক্ষে কাগজে–কলমে করা ছাড়াও অন্য কোনো উপায়ে হতে পারে। আবার আমরা যখন অনলাইনে গেলাম, তখন দেখা গেল অনেকের কাছে ইন্টারনেট পৌঁছানোর মতো ব্যবস্থা নেই, ইন্টারনেট ব্যবহার করার মতো ডিভাইসও নেই। আমি আমার প্রায় ৪৪ বছরের বেশি তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আমাদের জন্য এটা খুব অদ্ভুত বিষয় যে আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবকদের শিক্ষার আধুনিকায়নের জন্য মনে হয় উদ্বুদ্ধ করতে পারিনি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশে ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছি এবং বিশেষ করে করোনাকালে আমাদের জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশনের প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর সুফলও আমরা পেয়েছি। তবে শিক্ষায় আমাদের আরও কাজ করতে হবে।

পূর্ণা শ্রেষ্ঠা, শিক্ষাবিষয়ক প্রধান কারিগরি উপদেষ্টা, ভিএসও

ইউনেসকোর ‘এডুকেশন ২০৩০’–এর আন্তর্জাতিক টাস্কফোর্সের সমন্বয়কারী হিসেবে বাংলাদেশসহ জাতিসংঘের ৯৮ সদস্যদেশের শিক্ষকদের নীতি ও চর্চার বিষয়ে কাজ করছি। এই কোভিডকালকে শিক্ষকেরা কীভাবে মোকাবিলা করছেন নতুনত্ব ও সৃজনশীলতার মাধ্যমে, সেটাই দেখা হচ্ছে। আগে দেখেছি, শিশুরা স্কুলে যাওয়া সত্ত্বেও ঠিকভাবে শিখতে পারছে না। আর এখন তারা স্কুলেই যাচ্ছে না। ভিএসওর স্বেচ্ছাসেবকেরা বিভিন্ন দেশে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের পর তাঁদের পরিশ্রম, অনুশীলন—সব ধরে রাখার জন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা আমরা ভাবি। ভিএসও অ্যাপের যে পরীক্ষামূলক অনুশীলন আমরা করেছি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে, সেটা এখন সাতটি দেশে প্রয়োগ করা হচ্ছে। রুয়ান্ডা, ইথিওপিয়ায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে এ অ্যাপকে একটা টুল হিসেবে ব্যবহার করি। আমি শুধু ক্লাসরুমের শিক্ষকদের কথা বলছি না, মা–বাবাও শিক্ষক। বিশেষ করে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ এবং বাবা–মায়েরা বাসায় থেকে কাজ ও পড়ানো—দুই–ই করছেন। এ ছাড়া আছে তরুণ িশক্ষা ভলান্টিয়ার। অর্থাৎ যাঁদেরই যথাযথ দক্ষতা ও জ্ঞান আছে, তাঁরা সবাই শিশুদের শিখতে সাহায্য করতে পারেন। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা এখন ইংল্যান্ডে বসে বাংলাদেশ বা নাইজেরিয়ার শিক্ষক, স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য প্রশিক্ষণ পরিচালনা করতে পারি। আমরা খেলার ছলে শিশুদের শিক্ষার ব্যাপারটিকে সামনে নিয়ে এসেছি। আর এই শিক্ষাসামগ্রী তৈরি হয় ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে। দূরশিক্ষণে আমরা শিক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণে সুফল পেয়েছি তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে। বাংলাদেশের শিক্ষকদের যদি আইসিটিতে দক্ষ করা যায়, তাহলে তাঁরা এ ধারণাকে এগিয়ে নিতে পারবেন।

এম রোকনুজ্জামান, অধ্যাপক, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়

ই-লার্নিং এখন আমাদের একমাত্র উপায় শিক্ষাব্যবস্থার জন্য। আমাদের দেশে প্রযুক্তির অভিগম্যতা এখনো সমান নয়, যদিও ব্যবধানটা কমে আসছে। অন্যদিকে আমাদের শিক্ষার্থীরা অনুপ্রেরণার অভাবে ভুগছে, বিশেষ করে স্মার্টফোন আসক্তির কারণে। ফলে এই প্রযুক্তির দূরশিক্ষণের কিছু অন্তর্নিহিত দুর্বলতার মধ্যেও তারা ভুগছে। শিক্ষার উদ্দেশ্য হলো, পরবর্তী প্রজন্মকে মানবসম্পদে পরিণত করা। এ জন্য অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক—তিন বিষয়ে নজরে রাখতে হয়। সম্পদে পরিণত হওয়ার জন্য মানুষের তিন ধরনের ক্ষমতা, তথা জ্ঞানভিত্তিক দক্ষতা, কর্মকুশলতা ও সহজাত দক্ষতার বিকাশ দরকার। এখন পর্যন্ত আমাদের শিক্ষাপদ্ধতি শুধু জ্ঞানভিত্তিক দক্ষতা বৃদ্ধিকে প্রাধান্য দিচ্ছে, যার স্বয়ংক্রিয়করণ সহজ এবং ই-লার্নিং সেখানেই জোর দেয়। কর্মকুশলতা ও সহজাত দক্ষতার বিকাশ ও মিথস্ক্রিয়ার সুযোগ আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় প্রাধান্য পায়নি। কিন্তু এর গুরুত্ব প্রতিনিয়ত বাড়লেও অনলাইন শিক্ষা সেটাকে অ্যাড্রেস করতে আমাদের সহায়তা করছে না। আগামীর কর্মী বাহিনী গড়ে তোলার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে আগামীর জন্য গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য আমাদের গত এক বছরের শিক্ষার্থীদের লার্নিং বিহেভিয়ার নিয়ে ডেটা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে প্রযুক্তির যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে শিক্ষার বিস্তারেই কেবল আমরা এগিয়ে যেতে পারব।

মাইক ডাউসন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, উস্তাদ মোবাইল

উস্তাদ মোবাইল ভিএসওর অংশীদার হিসেবে এ অ্যাপ তৈরিতে কাজ করেছে। এ অ্যাপ তৈরিতে আমরা ইন্টারনেটের অভাব, অভিগম্যতা ও ডিভাইসের স্বল্পতাকে অতিক্রমের চেষ্টা করেছি। ভিএসও স্কুল অ্যাপে শিক্ষার বিষয়বস্তু একবারে ডাউনলোড করে রেখে দেওয়া যায় এবং ইন্টারনেট না থাকলেও সেটা ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া রয়েছে অফলাইন শেয়ারিং। অভিগম্যতার সমাধান হিসেবে অ্যাপে রয়েছে টেক্সট টু স্পিচ, ভিডিও সাবটাইটেল ও লার্জ টাচ এরিয়া‌।

আফজাল হোসেন সারওয়ার, নীতিনির্ধারণী বিশেষজ্ঞ, অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই)

করোনাভাইরাস অর্থনৈতিক, ব্যবসায়িক, স্বাস্থ্যসেবাসহ আমাদের উন্নয়নে বেশ বড় বাধার সৃষ্টি করেছে। শিক্ষাব্যবস্থা এর মধ্যে বেশি ভুক্তভোগী। বাংলাদেশ এই পরিস্থিতিকে বেশ ভালোভাবে সামলে নিয়েছে ডিজিটাল টুলস ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়; প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়—সবাই একসঙ্গে কাজ করছে প্রায় চার কোটির বেশি শিক্ষার্থীর জন্য। আমাদের জাতীয় টিভি চ্যানেল, সব শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম, রেডিও চ্যানেল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করেছি শিক্ষাদানের জন্য। আমরা বুঝেছি, জরুরি পরিস্থিতির জন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ডিজিটাল রূপান্তর দরকার। কারণ, এটাই ভবিষ্যৎ। এটি শিক্ষক, শিক্ষার্থী উভয়ের জন্যই উপকারী হতে হবে। কোভিডের অভিজ্ঞতা থেকে আমি বলব যে ব্লেন্ডেড লার্নিংয়ের সঙ্গে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে ইনপারসন লার্নিংয়ের পাশাপাশি। খেয়াল রাখতে হবে, ডিজিটাল অবকাঠামোর সুযোগ–সুবিধা সব ধরনের শিক্ষার্থী যেন পায়।

নিশাত তাসনিম, শিক্ষার্থী, ভাঙ্গুড়া জরিনা রহিম বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাবনা

স্কুল বন্ধ হলে শুধু বাসায় পড়েছি। তারপর আমাদের অনলাইন ক্লাস শুরু হয়। আমাদের শিক্ষকদের ক্লাসগুলো ছাড়াও সংসদ টিভির ক্লাসগুলোও করেছি। পড়ালেখা পুরোপুরি স্কুলের মতো হয়নি, কিন্তু অনেকটাই কাছাকাছি হয়েছে।

আহমেদ আল কাবির, শিক্ষা তথ্যপ্রযুক্তিগত উপদেষ্টা, ভিএসও

২০১৯ সালের ১১ আগস্ট আমরা সফলভাবে ভিএসও স্কুল অ্যাপ উদ্বোধন করি কক্সবাজারের এডুকেশন ইমার্জেন্সি প্রজেক্টের মাধ্যমে, সেখানে হোস্ট কমিউনিটিকেও যুক্ত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকেরা মিলে লোকাল রিসোর্স মডিউল, কনটেন্ট ও উপকরণ তৈরি করা হয়েছে। আমরা অ্যাপে গেমও যোগ করেছি। অ্যাপটি সাশ্রয়ী ফোনেই ব্যবহার করা যায় এবং সার্বক্ষণিক ইন্টারনেট ছাড়াই চলতে পারে। প্রশিক্ষিত শিক্ষকেরা নিজেরাই বাড়তি কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন।

মেরি ওয়াটকিনস, শিক্ষা বি‌শেষজ্ঞ, ভিএসও

প্রশিক্ষণে আমরা শেখানো ও শেখা—দুটোকেই আরও আনন্দময় করার উদ্যোগ নিই। পরিত্যক্ত জিনিস, যেমন কার্ডবোর্ড, কার্টন, ক্যান ইত্যাদি সংগ্রহ করে এগুলো দিয়ে আকর্ষণীয় শিক্ষা উপকরণ তৈরি করি। মজার বিষয় হলো, এই জিনিসগুলো বানানোর জন্য তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োজন হয় না। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করে এটি ছড়িয়ে দিচ্ছি।

জাহিদ হাসান, সভাপ‌তি, ব্যবস্থাপনা কমিটি, ভাঙ্গুড়া জরিনা রহিম বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, পাবনা

আমাদের স্কুলটি উপজেলার একমাত্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। আমাদের বিদ্যালয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব আছে। স্কুল বন্ধ হওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে অনলাইন ক্লাস শুরু করি। কিন্তু অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশ কম— ১০ থেকে ১২ কি সর্বোচ্চ ১৫ জন। এর প্রধান কারণ ছিল ডিভাইস এবং ইন্টারনেটে ডেটা কেনার অসামর্থ্য। তা ছাড়া অনেক অভিভাবক তাঁদের মেয়েদের ডিভাইস দিতে আগ্রহী নন। যত দিন না প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ডিভাইস ও ইন্টারনেট সহজগম্য হচ্ছে, তত দিন ডিজিটাল লার্নিংয়ের সুযোগের সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করা সম্ভব হবে না।

মোস্তাফা জব্বার, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

আমি নিজে বিশ্বাস করি যে শিক্ষার জন্য ইন্টারনেট দেওয়া খরচ নয়; বরং বিনিয়োগ এবং এই বিনিয়োগ রাষ্ট্রকে অবশ্যই করতে হবে‌। কারণ, ইন্টারনেট মানবসম্পদ তৈরিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা এখন পালন করছে। এই করোনাকালে আমরা উপলব্ধি করেছি, কোটি কোটি টাকা খরচ করে শিক্ষার অবকাঠামো তৈরি করা হলেও সামান্য ইন্টারনেট যদি না দিতে পারি, তাহলে এই কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগের ফলাফলে সীমাবদ্ধতা তৈরি হয়।

শিক্ষাকে যদি শুধু শ্রেণিকক্ষ আর পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সীমিত করে রাখি, তাহলে প্রকৃত শিক্ষা দেওয়া সম্ভব নয়। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা পাঠ্যপুস্তককেন্দ্রিক, নোট বইকেন্দ্রিক হয়ে গেছে এবং তাদের মধ্য থেকে ডিজিটাল যুগ বা ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভল্যুশনের উপযোগী মানবসম্পদ পাব, সেই প্রত্যাশা আমি করি না। কাজে শিক্ষাব্যবস্থায় বেশ পরিবর্তন দরকার। পাঠ্যক্রম পরিবর্তন থেকে শুরু করে ক্লাসরুমের পরিবেশ পরিবর্তন, শিক্ষকদের পদ্ধতির পরিবর্তন ইত্যাদি। আমি বিশ্বাস করি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে। আমি বলব যে এই করোনাকালে, এই সময় ইন্টারনেটের প্রাপ্যতা যতটা সম্ভব বৃদ্ধি করা উচিত। বর্তমানে দেশের প্রায় ৯৯ শতাংশ অঞ্চল চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইলের কভারেজের আওতায় আছে। আমরা দেশে ১২ হাজার বিনা মূল্যের ওয়াই–ফাই জোনও তৈরির উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা যখন ডিজিটালাইজেশন পদ্ধতিতে যাচ্ছিই, তাই একদম প্রাথমিক পর্যায় থেকে ওপরের দিকে টেনে তোলা উচিত। কারণ, গোড়া শক্ত না হলে আমি ওপরে ডালপালাসহ কোনো কিছুকেই শক্ত করতে পারব না। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ, প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রধান (অন্তর্বর্তী), ভিএসও

উপস্থিত সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ আমাদের সময় দেওয়ার জন্য এবং বেশ কিছু প্রায়োগিক ও অনুপ্রেরণামূলক ধারণা দেওয়ার জন্য। আশা করি, আমরা সামনে আরও আলোচনা ও একত্রে কাজ করতে পারব।