পরাশক্তির স্বার্থপর কূটনীতি

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সরকার প্রথম থেকেই মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ও জাতীয়নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জারের ভূমিকা ছিল বাঙালির বিরুদ্ধে চরমভাবে বিদ্বিষ্ট। তাঁরা কার্যত বাঙালির ওপর পরিচালিত পাকিস্তানের নির্বিচার গণহত্যার পক্ষে এসে দাঁড়ান। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কবি, শিল্পী ও বহু সাধারণ মানুষ বাঙালির দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয়।

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের আগে বাংলাদেশের জন্মই শুধু দেখেনি, নতুন রাষ্ট্রের সম্ভাব্য অভ্যুদয় সর্বাগ্রে স্বীকৃতি দান ও শেখ মুজিবকে কী ভাষায় অভিনন্দন জানানো হবে, তার খসড়া তারা চূড়ান্ত করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাদ সেধেছিলেন হেনরি কিসিঞ্জার। পররাষ্ট্র দপ্তর যখন সিদ্ধান্ত নিল তারা বাংলাদেশের একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণাকে স্বাগত জানাবে তখন কিসিঞ্জার ভাবলেন, আমি হব ‘ডেভিলস অ্যাডভোকেট’।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধে মার্কিন অবস্থান মূল্যায়নে কয়েকটি বিষয় একসঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, স্নায়ুযুদ্ধের পটভূমি, প্রেসিডেন্ট নিক্সন ও তাঁর নিরাপত্তা উপদেষ্টা কিসিঞ্জারের ব্যক্তিত্ব, পাকিস্তানের নেতাদের প্রতি তাঁদের পুরোনো ঝোঁক। চীনের সঙ্গে গোপন কূটনীতি। মার্কিনদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কী হবে, সেটা বঙ্গবন্ধু বাস্তবসম্মতভাবেই ঠিক করেছিলেন। তিনি একই সঙ্গে নিক্সন-কিসিঞ্জারের প্রশাসনের প্রতি সমালোচনামূলক এবং মার্কিন জনগণ বিশেষ করে কংগ্রেসম্যান ও সিনেটরদের ভূমিকার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকেন।
৩ মার্চ ১৯৭১ মার্কিন প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী ডেভিড প্যাকার্ড, পররাষ্ট্র দপ্তরের আন্ডার সেক্রেটারি আরইউন, জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের চেয়ারম্যান অ্যাডমিরাল এইচ মুরার ও সিআইএ পরিচালক রিচার্ড হেল্মেসর জন্য একটি দলিল প্রস্তুত হয়। এই দলিলের বক্তব্য মূল ছিল, দুটি রাষ্ট্র নয়, অবিভক্ত পাকিস্তানই দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের রক্ষাকবচ। আর ভারতও তার জাতীয় স্বার্থেই পাকিস্তানকে অবিভক্ত দেখতে চাইবে। ওই দলিলে পরিবর্তিত অবস্থায় মার্কিন স্বার্থ ও মার্কিন নীতির সীমাবদ্ধতার উল্লেখ করে বলা হয়, ‘আমাদের অব্যাহত অবস্থান হচ্ছে দুই স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তান মার্কিন স্বার্থের জন্য সবচেয়ে অনুকূল। স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান হবে অধিকতর নাজুক। চূড়ান্তভাবে আমরা অবশ্য এটা স্বীকার করছি যে আমাদের সামনে বাস্তবসম্মত কোনো বিকল্প নেই। ঘটনাপ্রবাহের ওপর আমাদের প্রভাবও খুবই সীমিত হতে বাধ্য।’
প্রায় চার দশক পরে একদল মার্কিন গবেষক, যাঁরা নিক্সন-কিসিঞ্জারের টেলিফোন আলাপচারিতার গোপন টেপ নিয়ে গবেষণা করেছেন, তাঁরাও এ সিদ্ধান্তে পৌঁছান। তাঁরা বলেন, পরাশক্তির প্রতিদ্বন্দ্বিতার বাতাবরণে সপ্তম নৌবহর পাঠানোর মতো ঘটনা যাঁরা ঘটিয়েছিলেন, তাঁরা তৃণমূলের বাস্তবতা উপলব্ধি করেননি।
মার্কিন দলিলগুলো আমাদের নানাভাবে বিস্মিত ও শিহরিত করেছে। ৩ মার্চের এক দলিলে দেখছি: ‘পূর্ব পাকিস্তানিরা সত্যিই দেশ স্বাধীন করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললে তো আমরা তা ঠেকাতে পারি না। আবার ভুট্টো ও তাঁর অনুসারীরা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেন যে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির ভিত্তিতে একটি দুর্বল ফেডারেল পদ্ধতি গ্রহণ করার চেয়ে পূর্ব পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন হতে দেওয়াই ভালো।’ অর্থাৎ পূর্ব পাকিস্তানকে ধরে না রাখতে ওঁরা সুপরিকল্পিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সুতরাং পানি নিচে গড়িয়েছে।
দলিলটিতে আরও বলা হলো, ‘আমাদের স্বার্থ যাতে গুরুতরভাবে বিপন্ন না হয় তা বিবেচনায় রেখে দুই স্বাধীন দেশের সঙ্গেই সন্তোষজনক সম্পর্ক বজায় রাখার যোগ্যতা আমাদের থাকতে হবে। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানে বর্তমানে পররাষ্ট্রনীতির প্রতি যে দৃষ্টিভঙ্গি তা নিকট ভবিষ্যতে বদলে যাবে বলে মনে হয় না। উভয় দেশই যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব চাইবে।’ কিন্তু ২৫ মার্চে গণহত্যা চলার পর মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বন্ধু ঢাকার মার্কিন কনসাল আর্চার ব্লাড তারবার্তা পাঠালেন, তখন নিক্সন-কিসিঞ্জার ‘ডেভিলস অ্যাডভোকেট’ হিসেবে আবির্ভূত হলেন।
১২ এপ্রিল ১৯৭১ ওভাল অফিসে কিসিঞ্জার নিক্সনকে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র পূর্ব পাকিস্তানে বিদ্রোহীদের সমর্থন দিলে পশ্চিম পাকিস্তান তাদের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াবে, আর বাঙালিরা বেছে নেবে বাম পন্থা। নিক্সন সায় দিলে বলেন, ‘এখন মধ্যপন্থা অনুসরণ করা হবে নরকতুল্য ভ্রান্তি। ভিয়েতনাম প্রশ্নে যেসব বেজন্মা আমাদের বিরোধিতা করেছে,...এখন তারাই চাইছে আমরা পূর্ব পাকিস্তানে হস্তক্ষেপ করি। অথচ দুটোই গৃহযুদ্ধ।’ কিসিঞ্জার বলেন, ভারত ভীত হয়ে পড়েছে কারণ তাদের নিজেদের বাঙালিরা মারা যেতে পারে। ভারত আসলে স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান চায় না। কারণ তা হলে ১০ বছরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ স্বায়ত্তশাসনের জন্য চাপ দেবে। কিসিঞ্জার বলেন, দূরে থাকার জন্য এটি তাদের জন্য একটি ‘ধ্রুপদি পরিস্থিতি’।
আবার এ কথাও ঠিক যে ভারত একাত্তরে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা করতে গেয়ে যুক্তরাষ্ট্র এমন ধারণা পায়নি যা থেকে মনে হবে পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষা করা ভারতীয় স্বার্থের জন্য জরুরি। কিন্তু ভারত পাকিস্তানের অখণ্ডতা কেন চায়, সে ব্যাপারে তারা নানা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করেছে—কখনো তা পাওয়া যায় সিআইএর রিপোর্টে, কখনো কিসিঞ্জারের জবানিতে। আমেরিকার গোপন দলিল থেকে পাওয়া তথ্য ও মূল্যায়ন সংক্ষেপে এ রকম।
১. যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীন, সোভিয়েত ইউনিয়ন—প্রত্যেকে নিজ নিজ দেশের জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষা দিতে গিয়ে বাংলাদেশ যুদ্ধে নিজেদের অবস্থান তৈরি করেছে। বাংলাদেশের পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান তৈরিতে উল্লেখযোগ্য কোনো নীতিগত বা আদর্শিক কারণ অনুপস্থিত ছিল।
২. নিক্সন প্রশাসন বলতে যা বোঝায় ওই সময় তা ছিল দারুণভাবে বিভক্ত। বিশেষ করে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের একটি বড় অংশ পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বনে নারাজ ছিল। বংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধী শক্তি হিসেবে ‘যুক্তরাষ্ট্রকে’ চিহ্নিত করা কঠিন। বরং নিক্সন-কিসিঞ্জার জুটিকে দায়ী করা সম্ভবত অধিকতর সংগত। তবে এ তথ্যও চমকপ্রদ যে নিক্সন ও কিসিঞ্জারও গোড়া থেকেই অনেক সময় দোদুল্যমান ছিলেন। মুজিব যথাসম্ভব সাংবিধানিক চৌহদ্দির মধ্যে থাকবেন, একান্তই না পারলে স্বাধীনতার দিকে যাবেন। সে ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যে পূর্ব পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করবে না, মুজিব, নিক্সন ও কিসিঞ্জারের মধ্যে এমন একটি আগাম আপসরফার ইঙ্গিত দ্ব্যর্থবোধক হলেও লক্ষণীয়।
৩. মুজিব যদি তথাকথিত ‘প্রো-আমেরিকান’ হিসেবে গণ্য না হতেন, অর্থাৎ স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী শক্তি যদি চীনপন্থী হতো, তাহলে সম্ভাব্য মুক্তিযুদ্ধে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সম্ভবত ছিল অনিবার্য।
৪. স্নায়ুযুদ্ধের পটভূমি ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ইয়াহিয়ার সঙ্গে নিক্সন-কিসিঞ্জার জুটি জোট বাঁধে। অবশ্য তাঁরা দুজনেই গোড়া থেকে জানতেন, দক্ষিণ এশীয় সংকটের পরিণতি যা-ই হোক, যুক্তরাষ্ট্রকে সরকারিভাবে যুদ্ধে জড়ানো সম্ভব হবে না। তবে এ দুর্বলতা তাঁরা প্রকাশ করেননি। আসলেই, তাঁদের স্বীকৃত মতে পাকিস্তানের পক্ষে তাঁরা ‘সাজানো যুদ্ধে মহড়া’ দিয়েছেন।
৫. বঙ্গোপসাগরে সপ্তম নৌবহর পাঠানোর নথি মার্কিন আর্কাইভে পাওয়া যায়নি। জানা গেল, সেটি নৌবাহিনীর কাছে আছে। সম্ভবত ওই মিশনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল পশ্চিম পাকিস্তানকে বাঁচানো, বিশেষ করে আজাদ কাশ্মীরকে রক্ষা করা। নিক্সন ও কিসিঞ্জারের সন্দেহ ছিল, ভারত সুযোগ পেলে পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর দখল করে নেবে। তবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিশ্চিত হওয়ার পরে নিক্সন, কিসিঞ্জার কিংবা ভুট্টোর তরফে তেমন কোনো হতাশাব্যঞ্জক মন্তব্য দলিলে নেই। পশ্চিম পাকিস্তান রক্ষা পাওয়ায় তাঁরা বরং পরস্পরকে মোবারকবাদ জানিয়েছে। ভারতের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার আগ পর্যন্ত নিক্সন ও কিসিঞ্জারের রুদ্ধশ্বাস সংলাপগুলো এই সাক্ষ্য বহন করে যে ঢাকার পতন নিয়ে নয়, ডিসেম্বরের দিনগুলোতে পশ্চিম পাকিস্তানকে বাঁচানোই ছিল তাদের পরম লক্ষ।
৬. যুক্তরাষ্ট্র নিজেও কিন্তু কংগ্রেসের আপত্তির দোহাই দিয়ে পাকিস্তানকে কার্যকর অর্থে অস্ত্র সরবরাহ করতে পারেনি বা দেয়নি। নিক্সন-কিসিঞ্জার যে করেই হোক তৃতীয় কোনো দেশের মাধ্যমে পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহে ব্যাকুল ছিলেন, এমন কোনো দলিল এ পর্যন্ত হাতে আসেনি।
৭. পাকিস্তানের কারাগারে বঙ্গবন্ধুর বিচার প্রশ্নে নিক্সন-কিসিঞ্জারসহ মার্কিন প্রশাসনের সব মহলে স্পষ্ট উদ্বেগ দেখা গেছে। বিশ্ব-জনমতের চাপ থাকার পাশাপাশি তার অন্যতম কারণ হয়তো এই ছিল যে নিক্সন ও ইয়াহিয়া শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত একটা রাজনৈতিক আপসের আশায় ছিলেন। সে ক্ষেত্রে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুই ছিলেন তুরুপের তাস। স্বাধীনতার পরের নথিতেও দেখা যাচ্ছে, মুজিবকে প্রাণে না মারতে কিসিঞ্জার ব্যক্তিগত কৃতিত্ব দাবি করছেন।
৮. বাংলাদেশ যাতে কোনোভাবেই বামপন্থীদের খপ্পরে না পড়ে, সে জন্য দিল্লি-ওয়াশিংটনের উদ্বেগ চোখে পড়ার মতো। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন যাতে প্রলম্বিত যাতে না হয়, সে ব্যাপারে ভারতের গরজ ও তাড়না ছিল সবচেয়ে বেশি। এমনটা বলা সম্ভবত অত্যুক্তি হবে না যে মুক্তিযুদ্ধের কোনো এক পর্যায়ে আন্দোলনের নেতৃত্ব কার্যকরভাবে আওয়ামী লীগের হাতছাড়া হয়ে গেলে, ভারতের অবস্থান নাটকীয়ভাবে বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। দিল্লি যেন নিপুণভাবে সম্ভাব্য এ ধরনের পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে হাত মেলানোর পথ উন্মুক্ত রেখেছিল। আর বাংলাদেশে ১৯৫২ থেকে মার্কিনদের অব্যাহতভাবে কমিউনিস্ট ভীতি তাড়া করে ফিরেছে।
৯. খন্দকার মোশতাক আহমেদ ও মাহবুব আলম চাষীর কলকাতার মার্কিন মিশনের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ এবং তারা মুজিবকে বাদ দিয়ে কনফেডারেশন চেয়েছিলেন মর্মে যে ধারণা সাধারণভাবে কোনো কোনো মহলের রয়েছে, তা প্রাপ্ত দলিলে সন্দেহাতীতভাবে তার নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি।
২১ ডিসেম্বর ১৯৭১। বারমুডায় অনুষ্ঠিত এক আলোচনায় নিক্সন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী রজার্স ও কিসিঞ্জার এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ ও তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্যার অ্যালেক ডগলাস হোম উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার শুরুতেই স্যার অ্যালেক হোমস মন্তব্য করলেন, দুই দেশের সংকটের সূত্রপাত ঐতিহাসিকভাবে তখনই, যখন পাকিস্তান সরকার সিয়াটো ছেড়ে এবং সেন্টোর সঙ্গে বাঁধন আলগা করে চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ভারত উপমহাদেশের নিরাপত্তার জন্য এটিকে একটি বড় হুমকি বলে ধরে নেয়। এই পটভূমিতে ভারত ও সোভিয়েত রাশিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় ট্রিটি অব কনভেনিয়েন্স। ব্রিটিশদের সন্দেহ হয়, ভারত এবার বুঝি সোভিয়েতের পকেটেই চলে গেল। এবার তারা তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে ঘাঁটি স্থাপনের অধিকার দিয়ে বসে কি না। তবে দুই দেশেরই নীতিনির্ধারকেরা একমত হয়েছিলেন যে, ভবিষ্যতে ঢাকায় ভারতপন্থী সরকারের প্রতিষ্ঠাই হবে পশ্চিমা স্বার্থের রক্ষাকবচ।
 মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক