
বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্প সম্পর্কে জানতে হলে শুরুতেই আমাদের প্রবেশ করতে হবে মৃৎশিল্প, আমারে অর্থাৎ কাদামাটির শিল্পের জগতে। ব্যবহারিক সামগ্রী কলসি দিয়ে শুরু করা যাক। নান্দনিকতার মাত্রা এতে উপযোগিতার অধীন হলেও কোনো কোনো সামগ্রীর ক্ষেত্রে নান্দনিকতাই মুখ্য।
আমরা সেই অভিজ্ঞতাকে নান্দনিক বলি, যা অনুভূতি জাগায়, জীবনকে জীবনের কাছে টানে। নান্দনিকতা সেই সামর্থের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যার মাধ্যমে সংবেদনশীল সব সত্তাই সুন্দরকে অসুন্দর থেকে আলাদা করতে পারে। ফুল আলোর দিকে ফোটে, সূর্যের দিকে মুখ ফেরায়। অনুভূতিমালা মনের মাধ্যমে এবং কালের অধিগত মস্তিষ্কের মাধ্যমে জটিল হয়ে ওঠে; স্মৃতি, পরিকল্পনা ও কল্পনার মধ্য দিয়ে ভারাক্রান্ত হয়। মানবজাতির মধ্যে নান্দনিকতার দায়িত্ব হলো মনকে শরীরের সান্নিধ্যে নিয়ে আসা; যাতে অনুভূতি নিজের জন্য সুখ চাইলে শরীর মনকে শেখাতে পারে। ক্লান্তিকে রুখে দেওয়ার অনুভূতির মুহূর্তে আমরা সজাগ হয়ে উঠি। চেতনার পরিগঠনের মধ্যে মতাদর্শকে শমিত করার অভিজ্ঞতা আমাদের হয়।
ব্যবহারিক মৃৎপাত্রের মূল নান্দনিক মাত্রা উদ্ভাসিত হয় তার সৃষ্টিকালেই। ভোজের রান্নার সময় রাঁধুনি বা দুর্বোধ্য বিষয়কে প্রাঞ্জল গদ্যে পরিণত করার সময় বিদ্বান যে রকম তৃপ্তি বোধ করেন, কুমোরও তাঁর কাজের প্রক্রিয়ায় একই নিবিষ্টতার আনন্দ পান। আর তা প্রযুক্তির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা অনন্য এক আনন্দ: নরম কাদার অনুভব, যা করার জন্য মাংসপেশি তৈরি হয়েছে তা করতে পারার সংবেদন এবং বৈচিত্রে্যর মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠার জটিল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য মনের ব্যবস্থাপনা। সামান্য মাটিকে শনাক্তযোগ্য পূর্ণাঙ্গ অবয়বে পরিণত করার এবং যা ছিল প্রাকৃতিক, তাকে সামাজিক করে তোলার মধ্য দিয়ে কুমোর তাঁর শক্তিমত্তা টের পান। বারবার কোনো সমস্যার সমাধানে হাতকে কাজে লাগানো এবং মনকে ভরানোর জটিল প্রক্রিয়ায় তৈরি হয় তাঁর আত্মবিশ্বাস। সৃষ্টিশীলতা সময়কে অধিকার করে। অন্তর্গত সামর্থ্য যতই ক্রীড়াশৈলীর মতো বাস্তবায়িত হয়, পরিকল্পনা যত বেশি শিল্পরূপ পেতে থাকে আর শিল্পবস্তু হয়ে ওঠে অনন্য; সক্ষম ব্যক্তি হিসেবে কুমোরও ততটাই নিজের অস্তিত্বের জোরালো প্রমাণ পান।
সৃষ্টির আনন্দ, মাত্রায় কিছুটা কম হলেও, ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ভোক্তার সমান্তরাল। এটি ঠিক সৃষ্টিসুখের উল্লাস নয়, এ যেন ইচ্ছা বাধাগ্রস্ত হওয়ার অস্বস্তির এক বিপরীত অনুভূতি। কুমোর কাজের ধাপগুলো নির্দ্বিধায় ক্রমাগত পেরিয়ে যান; অনুভব করেন কাজটির সুললিত স্বাচ্ছন্দ্য। কুয়া থেকে বাড়িতে পানি বয়ে আনার সময় নারীরা কুমোরের তৈরি কলসি কাঁখে নিয়ে কোনো অস্বস্তি টের পান না। কোনো কিছু তাঁদের বাধা দেয় না, তাঁদের চলন থাকে সাবলীল। যে মানুষটি সারা দিন দিয়ে পেরেক ঠোকেন, তিনি তাঁর পেশির মাধ্যমেই জানেন ভালো আর খারাপ হাতুড়ির পার্থক্য। কাজের উপযোগী করে তৈরি উৎকৃষ্ট সরঞ্জাম ব্যবহারের সময় মনে যে সাবলীল প্রফুল্লতা জন্মায়, সেটিই তাঁর নান্দনিক ভারসাম্য।
দলবদ্ধ কাজ হলো শিল্পীর দ্বিতীয় আনন্দ। কলসি তৈরির জন্য কাদা খুঁড়ে তোলা, তাকে আকার দেওয়া, পোড়ানো ও বিক্রি করা—সবটা একজনেরই কাজ নয়। অনেকের সঙ্গে মিলে কাজ করার সময় আলাপ-আলোচনায় কুমোর তাঁর নিস্তরঙ্গ সময়টিকে ভরিয়ে তোলেন, তাঁর একাকীত্ব দূর করেন, একাত্ম হয়ে ওঠেন; এভাবে তিনি পরিণত হন বৃহত্তর সত্তার অংশীদারে। কর্মী এই মানুষটি এভাবে হয়ে ওঠেন এক সামাজিক সত্তা। তিনি তখন এক নিবিড় সমবায়ের অংশ, যা গড়ে উঠেছে কাজের অংশিদারত্বে, প্রতিষ্ঠা পেয়েছে উৎপাদনশীলতা ও তার পারিতোষিকের মধ্য দিয়ে। শ্রম ও প্রাপ্তির মধ্যস্থতায় তাঁদের পরিবারগুলো সংহত হয়। মাটি পোড়ানোর যৌথ চুলায় সম্মিলিত কাজের মধ্য দিয়ে গ্রামের সামাজিক পরিসরে এসব পরিবার পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয়। গ্রামীণ ও শহুরে বাজারের সূত্রে উপযোগিতার মর্যাদাপূর্ণ মূল্যবোধের ভিত্তিতে গ্রামগুলো বৃহত্তর সমাজের সংস্পর্শে আসে, যেখানে এই মুহূর্তেই কেউ না কেউ তাঁদের কাজের সুফল ভোগ করছেন।

কাদামাটি মৃৎপাত্রে পরিণত হওয়ার মধ্য দিয়ে নান্দনিকতার এই লক্ষ্য পূর্ণতার কাছাকাছি পৌঁছায়। একই সঙ্গে কুমোরও হয়ে ওঠেন এক সক্ষম ব্যক্তি, সমাজের একজন সদস্য—বিশ্বজগতের সত্তা। যে কাদামাটি দিয়ে সবকিছুর সূচনা, তা কিন্তু কুমোরের নিজের সৃষ্টি নয়। তিনি এর নিয়ন্তা হন স্বল্পকালের জন্য—মাটি খুঁড়ে তোলার পর থেকে পুড়িয়ে পাত্র তৈরি করা পর্যন্ত। ব্যবহৃত হয়ে ভেঙে যাওয়ার পর আবার তা মাটিতে মিশে যায়।
বাঙালির মহাকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলাদেশে জমিদারি তদারকির সময় তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্রীকে একটি চিঠিতে দূর থেকে গ্রামবাংলার নীরব ও মন্থরগতির বর্ণনা দিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আমাদের দেশের মাঠ ঘাট আকাশ, রোদ্দুরের মধ্যে এমন একটা সুগভীর বিষাদের ভাব কেন লেগে আছে?’ তাঁর নিজের উত্তর ছিল, প্রকৃতির বিপুলতা: আকাশের সীমা নেই, সূর্য দারুণ তপ্ত, ‘অনন্তপ্রসারিত প্রকাণ্ড উদাসীন প্রকৃতি’র সামনে মানুষকে অতি সামান্য মনে হয়, তাদের কৃতকর্ম ঠুনকো ও অস্থায়ী হয়ে যায়।
বিষাদ: আনন্দ ও সৌন্দর্যের মতো বিষণ²তার ভাবও নন্দনতত্ত্বের ইন্দ্রিয়গত প্রজ্ঞার অচ্ছেদ্য অংশ। কাজের মধ্য দিয়ে নিজের ও সামাজিক সংযোগ সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠা কুমোরেরা পৃথিবীতে তাঁদের করুণাযোগ্য অবস্থান সম্পর্কেও সচেতন হন। পৃথিবী তাঁদের পরিকল্পনা ভেস্তে দেয়, তাঁদের প্রয়াস সীমিত করে ফেলে। আবার তাঁদের উপকরণ জোগায়, দেখায় উত্তরণের সংকেত। বাংলাদেশে আমি বলতে শুনেছি, ঈশ্বর এমন এক অদৃশ্য শক্তি, যিনি ঘাসকে আন্দোলিত করা বায়ুপ্রবাহে কিংবা পানিতে আলোর ঝিলিকের মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রকাশ করেন। জীবন চালিয়ে যেতে যেতে শক্তি, দুঃখ ও জ্ঞান অর্জন করা ছাড়া আর কিছু তো করার নেই।
শিল্প এর চেয়েও বেশি কিছু। তবে এটুকু অন্তত বলা যায় যে শিল্প হলো মানবীয় অভিজ্ঞতার ব্যক্তিক, সামাজিক ও নৈসর্গিক মাত্রাকে চেতনার মধ্যে নিয়ে আসার একটি পথ। অনুভূতির তাড়না থেকে পরিপক্ব উপলব্ধিতে গিয়ে পৌঁছানো কুমোরদের আত্মবিশ্বাস ও বিষাদের প্রকাশ ঘটে তাঁদের তৈরি করা ব্যবহারিক মৃৎপাত্রে। তাঁরা শিল্প সৃষ্টি করেন। কাজটি কঠিন ও অপরিচ্ছন্ন। যাকে আমরা উন্নয়ন বলি, তা এ ধরনের কাজকে পেছনে ফেলে আসে। যে সাধারণ কাজ আর সহজ জীবনের জন্য সমঝদার মানুষেরা আকুল হয়ে থাকেন, তা শেখায় খুবই সামান্য। শ্রমজীবী মানুষের কাছ থেকে শিল্পকলাকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন তা চলে এসেছে পরিচ্ছন্ন, সুপুষ্ট ও ভাববিলাসী মানুষের হাতে।
বস্তুগত, স্পর্শযোগ্য ও আকারপ্রাপ্ত গুণগুলোই ব্যবহারিক সামগ্রীর সুপ্ত নান্দনিকতাকে বিশিষ্ট করে তোলে। খালি পায়ের নিচে কাদা মসৃণতা পায়, আঙুলের চাপে তাতে আকার ফোটে। মাটির পাত্র তুলে হাতে নিয়ে তার সুষমতা মাপা হয়। গড়ে তোলার সময়ই চিহ্নিত এই গুণাবলি অন্তর্বস্তুর অনুধ্যানে পাওয়া রূপ থেকে আলাদা। জাপানি চা-পাত্রের মতো কলসির মহিমাময় বৈশিষ্ট্যেরও মূল্যায়ন করতে হবে এটি নাড়াচাড়ার সময়। স্পর্শের নাগালের বাইরে রাখা যেসব বিরল জিনিস আমরা দৃষ্টি দিয়ে অবলোকন করি, কলসি বা এর মতো লাখো সামগ্রীকে সেভাবে বিচার করা অন্যায় হবে। তারপরও তুলনার সুবিধার্থে যদি আমরা ইন্দ্রিয়গুলোকে শুধু চোখের পর্দায় কেন্দ্রীভূত করি এবং কলসিকে নিছকই বস্তু বলে গণ্য করি, এর কিছু বৈশিষ্ট্য চোখকে উদ্দীপিত করে মনকে জাগিয়ে তুলবে বটে।
প্রাত্যহিক কারুশিল্পের সবচেয়ে দৃষ্টিগ্রাহ্য দিক হলো, ব্যবহারিক অলংকার ও অনুপুঙ্খের সজ্জা এর আদলের অপরিহার্য অংশ হলেও উপযোগিতার অংশ নয়। এভাবে তা, উপযোগ ও অলংকারকে আলাদা করা যদি সুবিধাজনকও হয়, আলংকারিক প্রয়োজন মেটানোর অংশ হয়ে ওঠে। সাধারণ কলসির গলার কাছে খাড়াখাড়ি খাঁজ করা ছন্দোবদ্ধ একটি বা দুটি বৃত্ত থাকে। এই খুঁত রাখা হয় এ ব্যাপারটা বোঝাতে যে বস্তুটি ব্যবহারিক উদ্দেশ্যেই তৈরি করা হয়েছে।
প্রথমে চোখে না পড়লেও এর আরেক গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে রং। পোড়ানোর আগে পাত্রটিকে সাধারণত অর্ধতরল কাদা দিয়ে লেপা হয়। এটি কাশমাটি নামে বিশেষ একধরনের হলুদ কাদা। এই মাটি শুকিয়ে পিটিয়ে মিহি করা হয়। এরপর তাতে তিনবার পানি মেশানো হয়। সে পানি আবার নেওয়া হয় ইস্পাতের জলাধার থেকে, নদী থেকে নয়। পাত্রের তলায় বালু থিতিয়ে এলে ওপর থেকে আঠালো কাদা সাবধানে সরিয়ে নেওয়া হয়। সোডা মেশালে তার রং হয় উজ্জ্বল, কাদাও সহজে আলাদা করা যায়। আবার পানি মেশালে কাদা অর্ধতরল দ্রবণে পরিণত হয়। মাটির পাত্রটি এবার এই রংয়ের দ্রবণে চোবানো হয় বা ন্যাকড়া দিয়ে দ্রুত লেপা হয়। প্রক্রিয়ার দিক থেকে পাত্রটিকে ঝলসানো না হলেও প্রক্রিয়া শেষে তা চকচক করে। এভাবে লেপে নিয়ে পাত্রটিকে পোড়ালে তাতে কোমল তেলতেলে আভা আসে, তাতে রং ধরে। পোড়ানোর পর লেপা ওপরের পিঠ কালচে বা লাল হয়।
আগুন নিভিয়ে ফেলার পর তাপ কমে এলে চুল্লি থেকে কলসি বেরোয় কালো হয়ে। আগুনের চঞ্চলতায় কলসির পিঠ ছাই-ধূসর থেকে কালি কালি হয়ে যায়। চুল্লিতে রাখা অন্যান্য পাত্রের সংস্পর্শে যে ফিকে চক্রাকার মেঘের ছাপ পড়ে, তা কুমারের প্রত্যাশিত সৌন্দর্যের চিহ্ন। কাদার প্রলেপ কলসিকে জীবন্ত করে তোলে, এর কালচে খসখসে পৃষ্ঠতলে নিয়ে আসে রুপালি ঝিলিক।
চুল্লিতে জড়ো করা কলসির ওপরের মাটির আস্তরের মধ্যে মধ্যে ছিদ্র করা হলে ভেতরে অক্সিজেনের পরিমাণ বেড়ে যায়। কলসিতে আসে গোলাপি রং। তাতে কাদা রঙের প্রলেপ দেওয়া থাকলে দীপ্তি আসে। তখন সেটি সাধারণভাবে পোড়ানো পাত্রের চেয়ে লাল, ঝকঝকে ও গভীর আভাময় হয়ে ওঠে।
চকচকে ও ম্রিয়মাণ, লালাভ ও রুপালি ঝিলিক দেওয়া ধূসর কালো কলসির উপরিতল দৃষ্টিকে উদ্দীপ্ত করে। এই সজীব রূপটি উত্তর ইউরোপের লবণদানির মতো চকমকে পাত্র বা যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলের ছাইরঙা পাত্রের সঙ্গে তুলনীয়। কুমোররা তাঁদের কাজটিকে রঙে ছুবিয়ে দেন। তাঁরা চান আকস্মিকতার প্রভাবে এ রং যেন আরও দারুণ হয়ে ওঠে।
পাত্রগুলোকে সাধারণত মোটামুটি শ্রমে রঙে অলংকৃত করা হয়। কিন্তু রং ও সজ্জা যদি বর্ণিল পৃষ্ঠতলে এসে মিলিত হয়, কলসি তাহলে আর ব্যবহার্য থাকে না। হয়ে যায় শখের হাঁড়ি, আনন্দদায়ক এক পাত্র। এর অবয়ব তখনো সুগঠিত—রান্না বা পানি বহনের জন্য যথেষ্ট পরিমাণেই উপযোগী—কিন্তু অলংকার বেড়ে গিয়ে এর ব্যবহার তখন বদলে গেছে।
অঙ্কন হয় দুই ধাঁচের। একটি আল্পনা থেকে ধার করা ঘোরানো নকশা। এটি এসেছে হিন্দু ঐতিহ্য থেকে। তবে হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলমান নারীরাও এর চর্চা করে থাকেন। আল্পনা হলো পার্বণ উপলক্ষে মেঝেতে আঁকা জ্যামিতিক নকশা। দ্বিতীয় ধাঁচের অলংকরণ দৃশ্যমূলক রূপ নেয়। তুরস্ক বা দক্ষিণ-পশ্চিম যুক্তরাষ্ট্রে সিরামিকের পাত্র তৈরির ঐতিহ্যে ফুল-পাখি আঁকার রেওয়াজ আছে। প্রকৃতির উজ্জ্বল ও সুন্দর অলংকরণে ব্যবহারিক পাত্র এভাবে হয়ে ওঠে আনন্দের আধার।
তবে অলংকরণের মধ্য দিয়ে দৈনন্দিনের গৎবাঁধা কাজ থেকে ছিটকে গিয়ে পাত্র হয়ে পড়ে বিশেষ উপলক্ষের সামগ্রী। অলংকৃত পাত্র বিক্রি হয় দেবদেবীর মন্দিরে, দরবেশদের মাজারে, তাঁদের স্মরণে আয়োজিত মেলায়-মাহফিলে। আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার স্মারক হিসেবে এসব কেনার পর বাড়িকেও তা বিশেষ রঙে রঞ্জিত করে; সজীব করে রাখে উৎসবের স্মৃতি। কিংবা হয়তো এসব উপহার সম্পর্ককে আরও গাঢ় করে তোলে। উপহার দেওয়ার সময় এগুলো ভরে দেওয়া হয় মিষ্টান্নে। শখের হাঁড়ি আর কাজের হাঁড়ি তখন একাকার হয়ে যায়।
অনুবাদ: ফারুক ওয়াসিফ
হেনরি গ্লাসি: ইমেরিটাস অধ্যাপক, লোকসংস্কৃতি বিভাগ, ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়, ব্লুমিংটন, যুক্তরাষ্ট্র।