পরীক্ষার খাতায় তোমাদের করণীয়

প্রিয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার্থী, চূড়ান্ত প্রস্তুতির এই সময়ে কোন কোন বিষয়ে আমাদের সবচেয়ে বেশি সচেতন হওয়া দরকার, তা জেনে নেওয়া যাক।

পরীক্ষার খাতা যেভাবে সাজাবে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করার পর প্রশ্নপত্র হাতে আসার আগে তোমার হাতে আসবে পরীক্ষার খাতা। আর এ সময় তোমার প্রথম কাজ হবে পরীক্ষার খাতার কভার পৃষ্ঠার নির্দিষ্ট স্থানের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া। যেখানে পরীক্ষার্থীর নাম..., ছাপানো থাকবে তার সামনে তোমার পূর্ণ নাম লিখবে। যেখানে রোল নম্বর...’ ছাপানো থাকবে তার সামনে তোমার পরীক্ষার রোল নম্বর লিখবে। ‘বিষয়...’ যেখানে লেখা থাকবে তার সামনে ওই দিনের ওই বিষয়ের নাম লিখবে এবং যেখানে ‘পরীক্ষার্থীর স্বাক্ষর...’ কথাটি ছাপানো থাকবে, তার সামনে তোমার স্বাক্ষর দেবে ও পরীক্ষা ‘অনুষ্ঠানের তারিখ...’ এর জায়গায় ওই দিনের তারিখ লিখবে। এসব প্রয়োজনীয় তথ্য অবশ্যই সুন্দর ও স্পষ্ট করে লিখবে। আর এসব প্রয়োজনীয় তথ্য নির্ভুলভাবে লেখার জন্য প্রবেশপত্রের সাহায্য নেওয়াই ভালো। আর একটি কথা, প্রবেশপত্রে যেমন স্বাক্ষর দিয়েছ, পরীক্ষার খাতা এবং হলের স্বাক্ষর পত্রে একই স্বাক্ষর করবে।
মার্জিন: কভার পৃষ্ঠায় তথ্যাদি লেখার পর তোমার প্রথম কাজ হলো খাতায় মার্জিন টানা। স্কেল দিয়ে খাতার প্রতিটি সাদা পৃষ্ঠার বাঁ পাশে এক ইঞ্চি এবং ওপরে দেড় ইঞ্চি পরিমাণ মার্জিন টেনে নেবে। খাতা ভাঁজ করে মার্জিন করবে না।
প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর: প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর সম্পূর্ণ প্রশ্নপত্র মনোযোগ দিয়ে পড়ে নেবে এবং জেনে নেবে মোট কয়টি প্রশ্নের উত্তর তোমাকে লিখতে হবে। তারপর উত্তর লেখা শুরু করবে। যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।
পরীক্ষার খাতায় যেভাবে উত্তর লিখবে: পরীক্ষার খাতায় প্রতিটি উত্তর লেখার সময় যে প্রশ্নটির উত্তর লিখবে, সেই প্রশ্নের নম্বর অবশ্যই খাতার মাঝামাঝি জায়গায় স্পষ্ট করে লিখবে। খাতার বাঁ পাশের মার্জিনের বাঁয়ে কিছু লেখা যাবে না। ওপরের মার্জিনের নিচে তুমি যে প্রশ্নের উত্তর লিখবে, সেই প্রশ্নের নম্বর লিখবে। যদি কোনো প্রশ্নে ক, খ, গ কিংবা a, b, c ইত্যাদি অংশ থাকে, তবে সেই প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় খাতার মাঝখানে ওই প্রশ্নের নম্বর লিখে তারপর ঠিক তার সরাসরি নিচে (ক), (খ), (গ) কিংবা (a) (b) (c) ইত্যাদি নম্বর সমপরিমাণ দূরত্ব রেখে স্পষ্ট করে উত্তর লিখে যাবে। কোনো প্রশ্নের উত্তর যদি খাতার পৃষ্ঠার শুরু থেকে লেখার পর ওই পৃষ্ঠার কিংবা পরের পৃষ্ঠার অর্ধেকের বেশি স্থান পর্যন্ত চলে যায়, তবে ওই স্থান থেকে আর একটি নতুন প্রশ্নের উত্তর লেখা শুরু না করাই ভালো। পরবর্তী পৃষ্ঠা থেকে নতুন আরেকটি প্রশ্নের উত্তর শুরু করা ভালো।
তবে কোনো পৃষ্ঠার অর্ধেকের কম অংশে যদি একটি প্রশ্নের উত্তর লেখা শেষ হয়ে যায়, তবে যথাযথ ‘গ্যাপ’ রেখে আরেকটি নতুন প্রশ্নের উত্তর লেখা শুরু করতে পারো।
হিজিবিজি কাটাকাটি করবে না: কোনো প্রশ্নের উত্তর লিখতে গিয়ে যদি কোনো লাইন বা শব্দ বাদ পড়ে যায় কিংবা ভুল হয়ে যায়, তবে হিজিবিজি কাটাকাটি না করে সরাসরি এক টানে কেটে দিয়ে আবার স্পষ্ট করে লিখবে।
পরীক্ষার খাতা জমা দেওয়ার আগে: নির্দেশমতো সব প্রশ্নের উত্তর লেখা শেষ হলে খাতা জমা দেওয়ার জন্য ব্যস্ত হবে না। লেখা শেষে খাতা জমা দেওয়ার আগে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর আবার মনোযোগ দিয়ে পড়ে নেবে এবং ভালোভাবে দেখে নেবে কোথায় কোনো ভুল আছে কি না, প্রশ্নের উত্তর ঠিকঠাক লেখা হয়েছে কি না এবং প্রশ্নপত্রে যতগুলো প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছে, তার সবগুলো দেওয়া হয়েছে কি না।
অতিরিক্ত লুজশিট: অতিরিক্ত পৃষ্ঠা বা লুজশিট নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পৃষ্ঠা নম্বর দিয়ে নেবে। খাতা জমা দেওয়ার আগে সেই পৃষ্ঠার নম্বর অনুসারে লুজশিট গুছিয়ে নেবে এবং মূল খাতার সঙ্গে পিন দিয়ে বা সুতা দিয়ে বাঁধাই করে নেবে। এরপর পরীক্ষা শেষ হওয়ার সংকেত ঘণ্টা বাজানো হলে পরীক্ষার খাতা হল পরিদর্শকের কাছে জমা দেবে।

সিনিয়র শিক্ষক, প্রগতি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা