মাশরাফির ঈদ

ঈদের নামাজ শেষে ছোট ভাই মুরসালিন বিন ​মুর্তজার সঙ্গে মাশরাফি। ​ছবি: অনুপম হোসেন
ঈদের নামাজ শেষে ছোট ভাই মুরসালিন বিন ​মুর্তজার সঙ্গে মাশরাফি। ​ছবি: অনুপম হোসেন

যশোর থেকে নড়াইলের রাস্তাটা একটা সুড়ঙ্গের মতো।
দুই পাশের গাছ রাস্তার ওপর ঝুঁকে পড়ে একটা সবুজ সুড়ঙ্গ তৈরি করেছে। রাস্তা শেষ হওয়ার আগেই ঝপ করে সন্ধে নেমে গেল। নড়াইল যে কেমন শহর, সে আর ঠিক ঠাওর করে ওঠা গেল না। এমন অবস্থায় কী করে ঠিকানা খুঁজে পাওয়া যায়!
পথচারী ভদ্রলোক অত্যন্ত সদাশয়। তিনি দারুণ করে বুঝিয়ে বললেন, ‘একটা ভ্যান নেবেন। ভ্যানে বলবেন, টার্মিনালে যাব। নড়াইল টার্মিনাল। ওখানে পৌঁছে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই বাড়িটা দেখিয়ে দেবে।’
‘আমরা এখন যেখানে আছি, তার নাম নড়াইল?’
‘হ্যাঁ।’
‘যেখানে যাব, সেটাও নড়াইল!’
‘হ্যাঁ।’
‘আমরা যেখানে আছি, তার নাম টার্মিনাল?’
‘হ্যাঁ।’
‘যেখানে যাব, তার নামও টার্মিনাল!’
‘হ্যাঁ। এই সহজ ব্যাপারটা কেন বুঝতে পারছেন না!’
নড়াইল, টার্মিনালের এই গোলকধাঁধা কিছুতেই আর সমাধান হয় না। ভ্যানচালককে বলতে গিয়ে আরও গোলমাল পাকিয়ে গেল। তিনি কিছুই বুঝতে না পেরে হতভম্ব হয়ে চেয়ে রইলেন, ‘কোহানে যাবেন, সেটা পরিষ্কার কইরে কন।’
একপর্যায়ে নামটা করতেই হলো। প্রাণের মায়া ত্যাগ করে বলে ফেলতে হলো—মাশরাফির বাড়ি যাব।
ভ্যানচালকের মুখের হাসি আর কে দেখে! বোকাদের বোকামি দেখে লোকটা হেসে বাঁচেন না, ‘তাই বলেন। কৌশিক ভাইয়ের বাড়ি যাবেন। এত কথা না বলে এটা বললেই হয়। কৌশিক ভাইদের বাড়ি যেতে আবার ঠিকানা লাগে নাকি! এটাই তো কৌশিক ভাইয়ের শহর।’
হ্যাঁ, কৌশিক ভাইয়ের শহরের গল্প করছি। নড়াইল শহরের গল্প। এস এম সুলতান, বিজয় সরকারের শহর নড়াইল; নায়ক-অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার শহর নড়াইল।
বেশি দিন আগের কথা নয়। এই গত ঈদুল ফিতরের সময় জানা গেল, জাতীয় দলের অধিনায়ক (ওয়ান ডে ও টি-টোয়েন্টি), দেশের অভিজ্ঞতম ও অন্যতম সেরা পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজা এবারও ঈদ নড়াইলে কাটাবেন। গাট্টি-বোঁচকা নিয়ে মাশরাফি নিজের শহরে পৌঁছানোর এক দিন আগেই তাই নড়াইল শহর হয়ে উঠল আমাদের গন্তব্য।
ছোট্ট একটা টিনের ছাউনি দেওয়া বাড়ি। বাড়ির সামনে একটা উপন্যাসের মতো বটগাছ। বাড়ির দরজা হাট করে খোলা।

বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মাশরাফি
বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় মাশরাফি

দুটো অচেনা লোক সেই দরজায় ব্যাগ-বোঁচকা নিয়ে উপস্থিত দেখে ভেতরে খবর গেল। আটপৌরে পোশাক পরা একজন মায়াবী চেহারার নারী ছুটে এলেন, ‘তোমরা কারা বাবা? ভেতরে আসো।’
দেখুন, তখনো তিনি পরিচয় জানেন না, কোত্থেকে আসছি জানেন না; বলছেন, ‘ভেতরে আসো।’
ভেতরে ঢুকে নিজেদের ওজন বাড়াতে একটু পরিচয়টাও বাড়িয়ে বললাম, ‘আমরা কৌশিকের বন্ধু। আমরা ঢাকা থেকে আসছি।’
সঙ্গে সঙ্গে ভদ্রমহিলা চিত্কার শুরু করলেন, ‘ওরে আমার কপাল! তুমি কৌশিকের বন্ধু! ওরে, কে আছিস। তাড়াতাড়ি আয়। বাবার ব্যাগটা ভেতরে রাখ। বাবা, তোমরা এদিকে আসো। একটু হাত-মুখ ধুয়ে নাও। বাবা, কিছু খাও। এই খাটে শুয়ে পড়তে পারো। ইশ্, মুখটা কালো হয়ে গেছে! পথে খুব কষ্ট হয়েছে?’
আমরা যে বাড়িটার গল্প করছি, এটা মাশরাফির পৈতৃক বাড়ি। মাশরাফি অবশ্য জন্মের পর থেকে এই বাড়িতে তেমন রাত কাটাননি। তাঁর ঠিকানা এই বাড়ি থেকে পাঁচ মিনিটের দূরত্বের মামাবাড়িতে।
মাশরাফির এই পৈতৃক বাড়িতে অনেকগুলো কক্ষ; অনেক লোকেরই থাকার ব্যবস্থা। ঈদের ছুটি বলে লোকজন আরও বেশি। তবে এর মধ্যে একটা কক্ষ তাঁর বাবা-মায়ের জন্য একটু আলাদা করে সাজানো। বিকেল গড়াতে জেনে ফেললাম, কয়েকজন অনাথ শিশুকে নিয়ে এই কক্ষে স্বপন কাকা আর বলাকা কাকি, মানে মাশরাফির বাবা ও মা ঘুমান। কাকি এসে বললেন, ‘তোমরা কিন্তু এখানে ঘুমাবে।’
‘আপনারা?’
‘সে হবেনে। কষ্ট করে আসছ, এই কটা দিন তোমরা এখানে ঘুমাবা।’
চাইলে আমরা এমনকি পাশেই মাশরাফির মামার বাসায়, তার কাছাকাছি কোনো একটা কক্ষেও আশ্রয় নিতে পারতাম। তাঁর মামা তা-ই চাইছিলেন। কিন্তু মাশরাফির বাবা-মাকে কষ্ট দিয়ে এই আদর এক সেকেন্ডের জন্যও মিস করতে চাইনি।
রাত নামতে না-নামতে শুরু হলো আমাদের স্বপন কাকা, মানে মাশরাফির বাবা গোলাম মুর্তজা স্বপনের গল্পের আসর। একসময়ের দাপুটে খেলোয়াড়, ছাত্রনেতা ও সুগায়ক। স্বপন কাকার নানা রকম স্মৃতিচারণা—কখনো নিজের গল্প, কখনো ছেলের গল্পে কেটে যাচ্ছে এক-একটা পল। হামিদা মুর্তজার অবশ্য বসে গল্প করার মতো সময় তখন একটুও নেই। ছেলে আসছে আজ রাতে, বউমা আর দুই নাতি-নাতনিকে নিয়ে। তাঁদের বরণ করার জোগাড়যন্ত্র নিয়ে মহাব্যস্ত। গল্পে গল্পে হয়তো পুরোটা রাতই কেটে যেতে পারত। তা তো চলবে না। সকালবেলায় ঈদের নামাজ।
নামাজ শেষ হতে কোলাকুলির পর্ব। সেখানে স্বভাবতই লোকজনের একটু বাড়তি আগ্রহ পেতে থাকলেন মাশরাফি। কারও কারও বায়না এই কোলাকুলির মধ্যেই সেলফি তুলতে হবে। মাশরাফির হাসিমুখে একটু ধমকও শুনতে পাওয়া গেল, ‘এসব সেলফি-টেলফি বাইরের ব্যাপার। নিজের শহরে ঈদের দিনে এসব কেন!’
তা বললেই কী লোকে শোনে?
মাশরাফির মামার বাড়ির সামনে তখন লোকারণ্য। একটা ট্রাক এসেছে যশোর থেকে। না, ট্রাকভরা কোনো পণ্য নয়। কোনো একটা কলেজের ছাত্ররা। ঈদের নামাজ শেষ করে ট্রাক নিয়ে চলে এসেছে নড়াইলে! মাশরাফির সঙ্গে একটু ছবি তুলতে হবে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেল, এই ছবি তোলার পালা আর শেষ হয় না।
দীর্ঘক্ষণ সাজগোজ করে থাকতে মাশরাফির একটু কষ্ট হয়। একপর্যায়ে একটু হতাশ হয়ে বললেন, ‘লোকে কেন যে এমন তারকা তারকা করে! অন্য জায়গায় হলে তবু মানা যায়, নিজের শহরে এমন হলে কষ্ট লাগে। আমি কি পর হয়ে যাচ্ছি?’

বাবার সঙ্গে
বাবার সঙ্গে

মাশরাফির এই শোকে কান দেওয়ার সময় পাওয়া গেল না। মামাবাড়ির ভেতর থেকে ডাক এসেছে। নাহিদ মামা এসে ধমক দিয়ে বললেন, ‘আমরা কতক্ষণ বসে থাকব? ভেতরে আসো, সবাই অপেক্ষা করছে তোমাদের জন্য। খাওয়া হবে একসঙ্গে।’
আসলে এই দুটো পরিবারই কেমন যেন! এঁরা অনাহূত অতিথির জন্য নিজেদের শোয়ার ঘর ছেড়ে দিতে পারেন, ভাগনের বন্ধুদের জন্য নিজের সব মিটিং-অনুষ্ঠান বাতিল করে আড্ডায় মেতে উঠতে পারেন।
এই মানুষদের কথা বলতে গিয়ে, মাশরাফির মামার বাসার কথা না বললে অন্যায় হবে। মাশরাফি নিজে জন্ম থেকে পাঁচ মিনিট দূরত্বের সেই বাসাতেই থাকেন। আমাদের রাতের আশ্রয় তাঁর বাড়িতে, কিন্তু সন্ধ্যা গড়াতে না-গড়াতে বুঝলাম, দিন-রাতের আড্ডা ওই মামার বাসায়। সেখানে নাহিদ মামা ও কুহু মামি নামে দুজন সদা হাস্যময় মানুষ তৈরি আছেন শত শত মানুষের উৎপাত সহ্য করার জন্য। সে এক কল্পতরু বৃক্ষ যেন। নাহিদ মামাকে বললেই হলো, এই চাই। দেখবেন, কোত্থেকে এসে হাজির হয়ে গেল ব্যাপারটা। অবশ্য এই কল্পতরুর কাছে বেশি কিছু চাওয়ার সুযোগ পাবেন না। কারণ, তিনিই ক্ষণে ক্ষণে সবাইকে জিজ্ঞেস করছেন, ‘এই, তোদের আর কিছু লাগবে?’
আবার এটা ভাবার কোনো কারণ নেই যে সাংবাদিক হিসেবে এই বিশেষ সমাদর। দুটো বাড়িতে আসলে এলাকার সবারই একই যত্ন, এই একই প্রবেশাধিকার। এর মধ্যে কে সাংবাদিক, কে উকিল, কে নরসুন্দর; কোনো কিছুই বিবেচ্য নয়। পরিচয় একটাই—কৌশিকের বন্ধু।
কৌশিকের বন্ধুদের গল্প একটু করতেই হয়। মাশরাফির অন্যতম প্রিয় বন্ধু, জাতীয় দলের পেসার সৈয়দ রাসেল একবার বলেছিলেন, ‘মাশরাফির নেশা হলো বন্ধুত্ব। মানুষ জীবনের প্রতিটা ধাপে নতুন নতুন নেশা করে; ও বন্ধুত্বের নেশা করে। যেখানে যায় বন্ধু তৈরি করে। বন্ধু ছাড়া একটা দিনও বাঁচতে পারবে না। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, ও সেই ছোটবেলা থেকে আজ পর্যন্ত পৃথিবীর যে জায়গায় যত বন্ধু তৈরি করেছে, সবগুলো সম্পর্ক ধরে রাখে। এটা হলো বিস্ময়কর ব্যাপার!’
হ্যাঁ, মাশরাফির বন্ধুত্ব একটা বিস্ময়কর ব্যাপারই বটে! বন্ধু সবারই কম-বেশি আছে। ফেসবুকের ‘পাঁচ হাজার বন্ধু’ ব্যাপারটার কথা বাদ দিলে; রোজকার সম্পর্ক রাখা বন্ধুর সংখ্যা দশের ওপরে যাওয়া খুব কঠিন। আসলে সমাজ গবেষকেরাই বলেন, একটা নির্দিষ্ট সংখ্যার ওপরে মানুষের সঙ্গে ‘ওয়ান টু ওয়ান ফ্রেন্ডশিপ’ মানুষের পক্ষে ধরে রাখা সম্ভব নয়।
মানুষের মস্তিষ্কের গঠনই নাকি এমন যে সে অধিকসংখ্যক মানুষের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রাখতে পারে না।
কিন্তু মাশরাফি তো সেই মানুষ, যিনি বহু আগেই চিকিত্সাবিদ্যাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন। মাশরাফি তো সেই মানুষ, যিনি বহু আগেই বইয়ে পড়া অনেক কথাকেই মিথ্যা প্রমাণ করেছেন। ফলে সমাজ-গবেষকদের জন্য তিনি যে এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ হয়ে থাকছেন, তাতে আর বিস্ময়ের কী আছে!
একেবারে সরলীকরণ করে আঙুল গুনতে বসলে আমরা আবিষ্কার করব, অন্ততপক্ষে দেড় শ জন বন্ধুর সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। শুনতে যতই অবিশ্বাস্য হোক, এটা খুবই সত্যি যে এই বিশাল সংখ্যায় বন্ধুদের হাঁড়ির খবর, ঘরের খবর তাঁর প্রতিনিয়ত জানা চাই; প্রতিনিয়ত ধারাবাহিকভাবে এই বিশাল বাহিনীর নানা অংশের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া চাই।
এঁদের কারও সঙ্গে তাঁর কখনো বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়নি। কখনো মাসের পর মাস দেখা হয় না, কথা হয় না। কিন্তু এরপর প্রথম যেদিন দেখা হয়, তাঁদের পরস্পরকে দেখে চিত্কার করে উঠতে হয় না। কারণ, তাঁরা যেন এক জায়গাতেই ছিলেন।
সবচেয়ে বিচিত্র ব্যাপার হলো, ভিন্ন ভিন্ন শ্রেণিগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করা এই ভিন্ন ভিন্ন বন্ধুর দলের সঙ্গে যে অনবরত আড্ডা চলে, সে আড্ডায় মাশরাফিকে দেখে এঁদের থেকে আলাদা করাটা অসম্ভব।

ছোটরাও বড় ভক্ত তাঁর
ছোটরাও বড় ভক্ত তাঁর

নড়াইলের বন্ধুদের সঙ্গে মাশরাফি অনায়াসে এক পেয়ারাগাছ তলায় বসে ‘ডাঁসা পেয়ারা’ খেতে খেতে লুঙ্গিটা একটু গুটিয়ে গ্রাম্য একজন যুবক হয়ে উঠতে পারেন। অবশ্য ‘উঠতে পারেন’ বললে মনে হয়, এটা তিনি চেষ্টা করে করেন; আসলে ওই মুহূর্তে তাঁকে দেখলে এটাই আপনি বিশ্বাস করতে বাধ্য যে মাশরাফি এমনই।
তিনি নড়াইলের এই বন্ধুদের সঙ্গে এখনো রাত-দুপুরে রাস্তায় বসে গান করার পরিকল্পনা করতে পারেন। পিকনিক করতে হলে কোন বাড়ির নারকেল চুরি করতে হবে, তা এখনো আবিষ্কার করেন। কিংবা এই বন্ধুদের সঙ্গে আদুল গায়ে এখনো তিনি চিত্রা নদীতে তুফান তুলতে পারেন।
আবার এই লোকটিই ক্রিকেটার বন্ধুদের সঙ্গে একেবারে ভিন্ন এক মেজাজে হাজির। এখানে মাশরাফিকে দেখলে বোঝা কঠিন, এই লোকটি জন্ম থেকে বুঝি পেশাদার ক্রিকেটের সঙ্গে পরিচিত। যে লোকটি কিছুক্ষণ আগেই নড়াইলে আদিরসাত্মক রসিকতা করে এসেছেন, তিনিই ক্রিকেটারদের আড্ডায় আবার কাটার আর সুইংয়ের পার্থক্য বোঝাচ্ছেন। আবার খানিক পরে ঝরঝরে ইংরেজিতে সাংবাদিকদের আড্ডায় এক পুরোনো স্কটিশ প্রবাদ শোনাচ্ছেন! কোনো আড্ডায় বেমানান নন; সবচেয়ে বড় কথা, কোনো বন্ধুর কাছে তিনি বড় নন।
নড়াইলেই অনেক রকম বন্ধুর দেখা মিলল। মাশরাফির নিজের হিসেবে ৬১ জনের দল তাঁদের। কেউ ঢাকার করপোরেট প্রতিষ্ঠানের চাকুরে, কেউ প্রিমিয়ার লিগের ক্রিকেটার, কেউ নড়াইলের পরিচিত নরসুন্দর, কেউ-বা আবার পারিবারিক সূত্রে পরিচ্ছন্নতাকর্মী। কিন্তু এঁরা সবাই কৌশিকের বন্ধু।
বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা, পেয়ারার কামড়; সময় যৌবনের মাশরাফির বলের চেয়েও জোরে ছোটে। চৌরাস্তার মোড়ে আড্ডা তখন জমে উঠেছে। হঠাৎ মাশরাফি হাঁক দিলেন, ‘রবি কই?’
কে যেন বলল, ‘দোকানে কাজ করে।’
‘চলেন, আমার প্রিয় বন্ধুটাকে দেখে আসি।’ বলে উঠে দাঁড়ালেন মাশরাফি।
দলে-বলে চললাম বাজারে। ছবির বায়না, অটোগ্রাফের বায়না এড়িয়ে মাশরাফি ছুটে গেলেন একটা গাছের গোড়ায় উবু হয়ে জুতা সেলাই করতে থাকা ছেলেটির দিকে। চিত্কার করে উঠলেন, ‘দোস্ত!’
এক হাতে জুতো, এক হাতে ব্রাশ নিয়ে লাখ ওয়াটের হাসি ছড়ালেন কৌশিকের বন্ধু, ক্যাপ্টেনের বন্ধু রবি!
আমরা বুঝলাম, খুশি শব্দটার মানে কী!