অভিযানের নাম 'লা ডেসিমা'
কে হায় হূদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে!
কম তো নয়, ১১ বছরের অতৃপ্তি। বেদনাও বলতে পারেন চাইলে। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে সফল দলের জন্য ১১ বছরের শিরোপা-খরা বেদনাই তো জাগাবে। সেই ২০০২ সালে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এরপর প্রতিবারই শুরু করে ইউরোপ-সেরা হওয়ার প্রত্যয় নিয়ে। কিন্তু সেই স্বপ্ন মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রতিবারই। অনেক প্রত্যাশার সেই ‘লা ডেসিমা’ এতগুলো বছর থেকে গেছে অধরাই।
আজ আবার চ্যাম্পিয়নস লিগ শুরুর আগে আবার সেই ‘লা ডেসিমা’ স্বপ্নে বিভোর রিয়াল মাদ্রিদ। এই কয়েক বছরে ইউরোপ-সেরা হতে কী করেনি রিয়াল মাদ্রিদ? ২০০২ সালের পর এক-দুজন নয়, শরণাপন্ন হয়েছে ১১ জন কোচের। এর মধ্যে ফ্যাবিও ক্যাপেলোর মতো নামী কোচ যেমন ছিলেন, ছিলেন ভ্যান্ডারলি লুক্সেমবার্গোর মতো তুলনামূলক অখ্যাতও। ক্যাপেলো, বার্নড সুস্টার, আর সর্বশেষ হোসে মরিনহোরা তো লা লিগাও এনে দিয়েছিলেন। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস লিগের সোনার হরিণটা ধরতে পারেননি কেউই! পদ ছেড়ে দিয়েই (বলা ভালো পদচ্যুত হয়ে) সেই ‘ব্যর্থতার’ খেসারত দিতে হয়েছে সবাইকে।
এ তো গেল নেপথ্য নায়কদের খতিয়ান। খেলোয়াড় কিনতেও তো খোলামকুচির মতো টাকা ওড়ানো হয়েছে। গত পাঁচ বছরে শুধু খেলোয়াড় কিনতে রিয়াল মাদ্রিদ কত খরচ করেছে, শুনবেন? ‘মাত্র’ ৬১ কোটি ইউরো। সাম্প্রতিকতম এবং সবচেয়ে আলোচিত সংযোজন গ্যারেথ বেলকে কিনতেই তো গেছে ১০ কোটি ইউরো। আর এই বিনিয়োগের ফল? ২টি লা লিগা, ২টি স্প্যানিশ সুপারকাপ, ১টি কোপা ডেল রে। এই সময়কালে রিয়ালের কাছাকাছি শুধু ব্যয় করেছে ম্যানচেস্টার সিটি (৫৪.৯ কোটি ইউরো)। গত মৌসুমের ত্রিমুকুটজয়ী বায়ার্নের বিনিয়োগ তো ঢের কম। রিয়ালের এক-তৃতীয়াংশ।
এবারের আশাটা অবশ্য অন্যবারের তুলনায় একটু অন্য রকমই। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বেতনভোগী রোনালদোর সঙ্গে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার বেল। প্রতিপক্ষ দলগুলোর মনে হতেই পারে, এক রামে রক্ষা নেই তায় সুগ্রীব দোসর! পরশু অবশ্য রিয়ালের আশার পালে বড় একটা হাওয়া লেগেছে। ২০১৮ পর্যন্ত রিয়ালের সঙ্গে নতুন চুক্তির পর ‘সুখী’ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো বলেছেন, ‘আমরা আরও শিরোপা (চ্যাম্পিয়নস লিগ) জিততে পারতাম, কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। আমি নিশ্চিত যে আগে হোক পরে হোক মাদ্রিদ সেটা জিতবেই। সেটা এই বছরেই হবে বলে আমার বিশ্বাস।’
ইস্তাম্বুলে গ্যালাতাসারাইয়ের বিপক্ষে আজকের ম্যাচটাকে তাই বলতে পারেন, প্রায় এক দশকের অতৃপ্তি ঘোচানোর অভিযানে রিয়াল মাদ্রিদের প্রথম সিঁড়ি। এএফপি।