এবার শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখাটা কঠিন হবে

আন্তর্জাতিক হকিতে ফেবারিট হিসেবে একটি টুর্নামেন্টেই খেলেছে বাংলাদেশ দল। এশিয়ান হকি ফেডারেশন কাপ নামের সেই টুর্নামেন্টে সর্বশেষ তিনবারই চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। কিন্তু এবার ১১–২০ মার্চ ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় অনুষ্ঠেয় আরেকটি এশিয়ান হকি ফেডারেশন কাপে বাংলাদেশকে ফেবারিট বলা যাচ্ছে না। প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাঁচ বছর পর জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব ফিরে পাওয়া অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার সারোয়ার হোসেন বললেন সে কথাই—

সারোয়ার হোসেন

প্রশ্ন :

প্রশ্ন: এশিয়ান হকি ফেডারেশন কাপে যাচ্ছেন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফিরতে পারবেন তো?

সারোয়ার হোসেন: সব চেষ্টাই করব চ্যাম্পিয়ন হতে। কিন্তু এই টুর্নামেন্টে আমরা এবার ফেবারিট নই। চীন র‍্যাঙ্কিংয়ে আমাদের চেয়ে অনেক ওপরে (২৫)। ওমান ২৭তম, আমরা ৩৮তম। বুঝতেই পারছেন, শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখাটা কঠিন হবে। চীনকে আমরা অতীতে হারিয়েছি। কিন্তু এখন ওরাও আমাদের জন্য বড় বাধা। তবে এবারও আমাদের প্রথম লক্ষ্য ফাইনাল নিশ্চিত করা।

প্রশ্ন :

প্রশ্ন: টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য তাহলে এটাই, ফাইনালে খেলা?

সারোয়ার: আগামী এশিয়া কাপ ও এশিয়ান গেমসের ছাড়পত্র পাওয়া আমাদের মূল লক্ষ্য। টুর্নামেন্টের ১২ দল থেকে শীর্ষ ৩টি যাবে এশিয়া কাপে। প্রথম ৫টি উঠবে এশিয়ান গেমসে। এটা কঠিন লক্ষ্য নয় আমাদের জন্য।

প্রশ্ন :

প্রশ্ন: এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা জোর দিয়ে বলতে পারছেন না। কিন্তু আগে তো এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ শিরোপা জিতেছে...

সারোয়ার: আমি এর আগে দুটি এশিয়ান হকি ফেডারেশন কাপ খেলেছি। তখনকার সময়ে যেসব দল ছিল, তার মধ্যে আমরাই সেরা ছিলাম। এখন চীন এই টুর্নামেন্টে এসেছে। ওমানও ভালো করছে। ফলে এই দলগুলো আমাদের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

প্রশ্ন :

প্রশ্ন: চীন, ওমান এগিয়েছে, নাকি বাংলাদেশ দল শক্তির দিক থেকে পিছিয়েছে?

সারোয়ার: আন্তর্জাতিক হকিতে ভালো করতে হলে নিয়মিত ম্যাচ খেলতে হবে। অথচ গত ডিসেম্বরে আমরা এশিয়ান চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলেছি প্রায় ৪০ মাস পর। এত লম্বা সময় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট না খেললে এগোবেন কীভাবে? আপনাকে ম্যাচ খেলতে হবে।

প্রশ্ন :

প্রশ্ন: এক দিকে আন্তর্জাতিক ম্যাচ পাচ্ছেন না। অন্য দিকে জাকার্তায় যাচ্ছেন ভালো মানের দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ ছাড়াই। অধিনায়ক হিসেবে এ নিয়ে কোনো অতৃপ্তি আছে?

সারোয়ার: বিদেশি দলের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারলে ভালো হতো, সেটা বলাই বাহুল্য। তবে আমরা বিকেএসপির সঙ্গে খেলেছি। টুর্নামেন্টে আমাদের গ্রুপে থাকা ইরান, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়ার মতো দলগুলোর সঙ্গে বিকেএসপির খুব বেশি পার্থক্য হবে না। তা ছাড়া আমরা প্রতিদিন অনুশীলন করছি, ভিডিও দেখছি। ম্যাচে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে করলে পারলে আশা করি ভালো করব।

প্রশ্ন :

প্রশ্ন: প্রস্তুতি ক্যাম্পে সব সুযোগ–সুবিধা পাচ্ছেন?

সারোয়ার: বিকেএসপিতে সব সুযোগ–সুবিধাই পাচ্ছি। তবে বড় বড় দলের সঙ্গে তুলনা করলে আমাদের পর্যাপ্ত সুযোগ–সুবিধা নেই। এখন আমি যদি বলি, আমাদের সব সুযোগ–সুবিধা লাগবেই, তাহলে তো হবে না। আমাদের ফেডারেশনের অবস্থা বুঝতে হবে। সেটা বুঝি বলেই সব এক পাশে রেখে সবাই খেলায় মনোযোগ দিচ্ছি।

প্রশ্ন :

প্রশ্ন: ২০১৬ সালের এসএ গেমসে আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্রোঞ্জ জিতেছিল। পাঁচ বছর পর আবার জাতীয় দলের অধিনায়ক হবেন ভেবেছিলেন?

সারোয়ার: অধিনায়কত্ব নিয়ে ভাবিনি। হকি ফেডারেশন আমাকে যোগ্য মনে করেছে বলে আবার দায়িত্ব দিয়েছে। এখন আমার দায়িত্ব জাকার্তায় ভালো কিছু করা।