জোড়া মৃত্যুতে শোকাবহ ক্রিকেটও

জিম পার্কস (১৯৩১–২০২২)ছবি: সাসেক্স

বলিউডের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও শোক নেমে এসেছিল কাল। ভারতীয় সিনেমায় অনেক জনপ্রিয় গানের গায়ক কৃঞ্চকুমার কুন্নাথ ওরফে কেকে মারা গেছেন কাল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডও কাল হারিয়েছে নিজেদের সাবেক দুই টেস্ট ক্রিকেটারকে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২৪ টেস্ট খেলা সাবেক অলরাউন্ডার ডেভিড হলফোর্ড মারা গেছেন। ইংল্যান্ড হারিয়েছে তাঁদের সবচেয়ে বেশি বয়সী জীবিত সাবেক টেস্ট ক্রিকেটারকে। ৯০ বছর বয়সে মারা গেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক উইকেটকিপার জিম পার্কস।

ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ কাল হলফোর্ডের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেন ৫১ উইকেট নেওয়া এই লেগ স্পিনার। সম্পর্কে তিনি ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার গ্যারি সোবার্সের কাজিন।

১৯৬৬ সালে অভিষেক টেস্টেই চমক দেখান হলফোর্ড। ওল্ড ট্রাফোর্ডে সোবার্সের সঙ্গে ১২৭ রানের জুটি গড়ার পথে ১১৬ বলে ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। অভিষেক টেস্টে ৪ উইকেটও পেয়েছিলেন হলফোর্ড।

সোবার্সের সঙ্গে মাঠ ছাড়ছেন হলফোর্ড
ছবি: টুইটার

তবে লর্ডসে পরের টেস্টেই তাঁর ম্যাচ বাঁচানো ১০৫ রানের ইনিংসটি বেশি স্মরণীয়। দল ৯৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ উইকেটে সোবার্সের সঙ্গে ২৭৪ রানের জুটি গড়েছিলেন হলফোর্ড। ঘরোয়া ক্রিকেটে বার্বাডোজের অধিনায়ক ছিলেন হলফোর্ড। খেলেছেন ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগোর হয়েও। অবসর নেওয়ার পর নির্বাচক ও ম্যানেজারের দায়িত্বও নিয়েছিলেন জাতীয় দলের।

ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের সভাপতি রিকি স্কেরিট তাঁর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেছেন, ‘খেলোয়াড় হিসেবে তিনি ছিলেন উঁচুমানের অলরাউন্ডার। অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নিজের সবকিছু ঢেলে দিতেন। প্রশাসক, টিম ম্যানেজার ও পিচ কিউরেটর হিসেবে খেলাটার প্রতি তাঁর ভালোবাসাই প্রকাশ পেয়েছে।’ টেস্টে ১ শতকসহ ৭৬৮ রান করেছেন হলফোর্ড।

জিম পার্কসের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে তাঁর কাউন্টি দল সাসেক্স। ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৮ সালের মধ্যে ইংল্যান্ডের হয়ে ৪৬ টেস্ট খেলেন সাবেক এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।

ক্যারিয়ারের শুরুতে তিনি শুধু ব্যাটসম্যান ছিলেন। সাসেক্সের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সাসেক্স ক্রিকেট কষ্টের সঙ্গে জানাচ্ছে, ৯০ বছর বয়সে মারা গেছেন জিম পার্কস। গত সপ্তাহে বাসায় অসুস্থ হওয়ার পর আজ হাসপাতালে তিনি মারা গেছেন।’

ক্রিকেটার পরিবার থেকে উঠে আসা পার্কস ১৯৫৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক টেস্টে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেন। চার বছর পর নিজেকে রূপান্তর করেন উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে।

একবার তিনি উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হওয়া নিয়ে বলেছিলেন, ‘অনেকটা দুর্ঘটনা থেকেই এটা হয়। ক্যারিয়ারের শুরুতে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান ছিলাম। কয়েক বছর পর সাসেক্সের ম্যাচে উইকেটকিপার রুপার্ট ওয়েব চোট পান। সাসেক্স অধিনায়ক রবিন মারলার এসে বলল, আমাকে (উইকেটকিপিং) করতে হবে।’

২ শতকসহ টেস্টে ১৯৬২ রান করেন পার্কস। তাঁর বাবা জিমও সাসেক্সে খেলেছেন এবং একটি টেস্ট খেলেছেন ইংল্যান্ডের হয়ে। জিম পার্কস মারা যাওয়ার পর ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সী জীবিত টেস্ট ক্রিকেটার হলেন রমন সুব্বা রো। ইংল্যান্ডের হয়ে ১৩ টেস্ট খেলা এই ব্যাটসম্যানের বয়স ৯০ বছর ১২৩ দিন।