ব্যাট হাতে ঝড় তুলছেন গেইল, ম্যাক্সওয়েল, হেলস রা। বল হাতে স্টেইন, মিশ্র, আজমল আর নারাইনরা কখনো বিধ্বংসী, কখনো মায়াবী ঘাতক হয়ে দেখা দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে তারার আলোয় আলোকিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।
তারার মেলা আছে মাঠের বাইরেও। ব্যাট কিংবা বল হাতে মাঠে নামার দিন তাঁরা পেছনে ফেলে এসেছেন। এখনকার দায়িত্বটা মাইক হাতে ক্যামেরার সামনে অথবা ধারাভাষ্যকক্ষে। তবে একঝাঁক সাবেক ক্রিকেটারকে নিয়ে গড়া সেই বিশেষজ্ঞ ও ধারাভাষ্যকারদের দলটাও যে বিশ্বসেরা যেকোনো দলের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো, তা বোঝা যাবে নামগুলো শুনলেই। এ যেন তারকাখচিত আরও একটা বিশ্ব একাদশ! তবে সাবেক এই ক্রিকেটারদের বেশির ভাগই ক্যারিয়ারের যবনিকা টেনেছেন টি-টোয়েন্টি যুগের আগে। টেস্ট কিংবা ওয়ানডে নিয়ে সন্দেহ নেই, তবে এঁদের সবাইকে নিয়ে গড়া দলটা টি-টোয়েন্টিতে কেমন করবে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
ধারাভাষ্যকারদের এই দলের তারকাদ্যুতি আরও বাড়ত যদি সুনীল গাভাস্কারও থাকতেন। কিন্তু তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না এবার। এশিয়া কাপ শেষ করেই দেশে ফিরে গেছেন কিংবদন্তি ভারতীয় ওপেনার। কারণটা আন্দাজ করাও খুব কঠিন নয়। টালমাটাল ভারতীয় ক্রিকেটকে সামাল দিতে ধারাভাষ্যের চেয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ কাজ এখন তাঁর সামনে।
সমস্যা নেই। গাভাস্কার নেই বলে ওপেনার সংকটে পড়তে হচ্ছে না। সৌরভ গাঙ্গুলী আছেন। তাঁর সঙ্গে জুটি বাঁধার জন্য আছেন রমিজ রাজা, নভজ্যোত সিং সিধু, আতহার আলী খান, নিক নাইট এমনকি অরুণ লালও। পছন্দমতো সমন্বয়টা বেছে নিলেই হলো। শুধু ওপেনার হলেই তো হবে না, তিন, চার ও পাঁচে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যানও লাগবে। চিন্তা নেই, হাতের কাছেই আছেন নাসের হুসেইন, সঞ্জয় মাঞ্জরেকার, রবি শাস্ত্রী, জন্টি রোডস, রাসেল আরনল্ডরা। ফিল্ডারদের হাত থেকে যেভাবে টপাটপ ক্যাচ পড়ছে এই বিশ্বকাপে, তাতে রোডসের মতো বিশ্বসেরা একজন ফিল্ডার থাকা তো খুবই জরুরি।
ব্যাটিংটা তাহলে দাঁড়িয়ে গেল, এবার দুয়েকজন অলরাউন্ডার হলে মন্দ হয় না। সর্বকালের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার কপিল দেব আছেন, এ দলে প্রশ্নাতীত তাঁর জায়গা। পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে থাকতে পারেন শন পোলকও। নইলে শুধু ফাস্ট বোলার হিসেবেই তো তিনি থাকতে পারেন দলে। সঙ্গে ওয়াসিম আকরামকে পাওয়া মানে সর্বকালের অন্যতম সেরা বাঁহাতি পেসারকে পাওয়া। একসময় বিশ্বের দ্রুততম বোলার শোয়েব আখতারের ধারাভাষ্যকার হিসেবে অভিষেক হলো এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই। বিকল্প পেসার হিসেবে থাকছেন ইয়ান বিশপ, ড্যানি মরিসনরা। অন্তত একজন স্পিনার না হলে কি দলটা দাঁড়ায়! চিন্তা নেই, সর্বকালের সেরা লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্নও ধারাভাষ্য দিচ্ছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।
সমস্যা একটাই, কোনো বিশেষজ্ঞ উইকেটকিপার নেই এই দলে। ইয়ান হিলি বা ইয়ান স্মিথের মতো কেউ যে কেন এলেন না এবার ধারাভাষ্য দিতে!