দুর্দান্ত মোস্তাফিজ, দারুণ জয় দিল্লির

দিল্লির জয়ে দুর্দান্ত ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমানআইপিএল

সর্বশেষ ৩ ম্যাচের দুটিতেই ৪০-এর ওপরে রান দিয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। একটু চাপে ছিলেন, সেটি বলাই যায়। তবে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে নিজের সেরা বোলিংটা বের করে আনলেন বাংলাদেশি পেসার। শেষ ওভারে মাত্র ১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ, ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ১৮ রান। মোস্তাফিজের সঙ্গে কুলদিপ যাদব, চেতন সাকারিয়ার দারুণ বোলিংয়ে কলকাতাকে ১৪৬ রানেই আটকে রাখে দিল্লি। সে রান তাড়া করতে নেমে চাপে পড়েছিল তারা, তবে শেষ পর্যন্ত ৬ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেটের বেশ দাপুটে জয়ই পেয়েছে তারা।

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা কলকাতা চাপে পড়ে শুরুতেই। দ্বিতীয় ওভারে অ্যারন ফিঞ্চকে হারানোর পর অষ্টম ওভারে ৩৫ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারায় তারা। প্রথম ১১ ওভারে তাদের ইনিংসে ছিল মাত্র তিনটি বাউন্ডারি, তিনটিই চার। মাঝের ওভারগুলোতে দুর্দান্ত ছিলেন বাঁহাতি আন-অর্থোডক্স স্পিনার কুলদিপ যাদব। শেষ পর্যন্ত তিনি মাত্র ১৪ রানে ৪ উইকেট নেন।

মাত্র ১৪ রানে ৪ উইকেট নেন কুলদিপ
আইপিএল

কলকাতাকে উদ্ধারের প্রথম চেষ্টা করে পঞ্চম উইকেটে শ্রেয়াস আইয়ার ও নিতীশ রানার জুটি, যাতে ৩৪ বলে ওঠে ৪৮ রান। ৩৭ বলে ৪২ রান করে ফেরেন শ্রেয়াস। ওই ওভারেরই ৩ বল পর আন্দ্রে রাসেলও কোনো রান না করেই কুলদিপ যাদবের শিকার হলে কলকাতার চাপ বাড়ে আরেকটু। এরপর তাদেরকে টানেন নিতীশ রানা ও রিংকু সিং, দুজনের জুটিতে ৩৫ বলে ওঠে ৬২ রান।

১৬ থেকে ১৯—এ ৪ ওভারে ৫৫ রান তোলে কলকাতা। শুরুর চাপ সামলে বেশ ভালো একটা সংগ্রহের পথেই এগোতে থাকা কলকাতাকে চেপে ধরেন মোস্তাফিজই। প্রথম ২ ওভারে ৭ রান দেওয়া বাঁহাতি পেসার ১৮তম ওভারে এসে দেন ১০ রান। তবে শেষ ওভারে চমক দেখান তিনি। ২০তম ওভারে ১৬ বলে ২৩ রান করা রিংকু সিংয়ের পর পরপর দুই বলে ফেরান ৩৪ বলে ৫৭ রান করা নিতীশ রানা ও টিম সাউদিকে। শেষ বলে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকের সামনে। হর্ষিত রানা হ্যাটট্রিক আটকালেও রান নিতে পারেননি শেষ বলে, একটি লেগবাইসহ সে ওভারে আসে মাত্র ২ রান।

শেষ ওভারে ১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ
আইপিএল

১৮ রানে ৩ উইকেট, আইপিএলের এ মৌসুমে এটিই মোস্তাফিজের সেরা বোলিং। সব মিলিয়ে এ টুর্নামেন্টে তাঁর দ্বিতীয় সেরা বোলিং এটি, ২০১৬ সালে ১৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন মুম্বাইয়ের বিপক্ষে, সে সময় সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলছিলেন।

মোস্তাফিজের অমন ওভারের পর অবশ্য ১৪৬ রান তাড়ায় শুরুতে ঠিক উজ্জীবিত হতে পারেনি দিল্লি। ইনিংসের প্রথম বলেই উমেশ যাদবের দারুণ ফিরতি ক্যাচে পরিণত হন পৃথ্বি শ। দুটি চারে ১৩ রান করা মিচেল মার্শও ফেরেন পরের ওভারে, ১৭ রানেই ২ উইকেট হারায় দিল্লি। তৃতীয় উইকেটে ডেভিড ওয়ার্নার ও ললিত যাদবের ৪৯ বলে ৬৫ রানের জুটি সে চাপ কমিয়ে আনে অনেকটাই। সে সময় সহজ জয়ের পথেই এগোচ্ছিল দিল্লি।

দিল্লিকে পার করান রোভম্যান পাওয়েল
আইপিএল

চিত্রটা বদলে যায় ১১ বলের মধ্যে ৩ উইকেট পড়ার পর। ২৬ বলে ৪২ রান করা ডেভিড ওয়ার্নারের পর ৫ বলে ২ রান করা অধিনায়ক ঋষভ পন্ত ললিত যাদবের শিকার, মাঝে ২৯ বলে ২২ রান করা ললিতকে এলবিডব্লু করেন সুনীল নারাইন। শেষ ৩৬ বলে এরপর প্রয়োজন ছিল ৪৮ রান। রাসেলের করা ১৫তম ওভারে অক্ষর প্যাটেলের চার-ছয়ে শুরুটা দারুণ হয়েছিল, তবে শেষ বলে অক্ষর রান-আউট হলে আবার পিছিয়ে পড়ে দিল্লি। ১৭ বলে ২৪ রান করেন অক্ষর। অক্ষর ফিরলেও অসুবিধা হয়নি দিল্লির, তাদের এরপর পার করান রোভম্যান পাওয়েল। ১৬ বলে ৩৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। দিল্লি ৪ উইকেটের জয় পায় ১ ওভার বাকি থাকতেই।

এ জয়ে ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ছয়ে উঠে এল মোস্তাফিজদের দিল্লি। অন্যদিকে কলকাতা হারল টানা ৫টি ম্যাচ।