'মিরপুর টেস্টে শেষ ধারাভাষ্য হবে, কে ভেবেছিল'

এই তো কিছু দিন আগেও ভরাট গলায় ধারাভাষ্য দিয়েছেন বেতারে। বয়স হয়েছিল। কিন্তু চলে-ফিরে বেড়াতেন নির্দ্বিধায়। শেরেবাংলা কিংবা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম—যেখানেই খেলা হতো, মঞ্জুর হাসান মিন্টুকে দেখা যেত সেখানেই। বাংলাদেশের ক্রীড়া ধারাভাষ্যের অন্যতম প্রবাদপুরুষই বলা চলে তাঁকে। সবার প্রিয় মিন্টু ভাই আজ মারা গেছেন ভারতের একটি হাসপাতালে (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুর আগে এ দেশবরেণ্য ক্রীড়া ধারাভাষ্যকারের বয়স হয়েছিল ৭৫। জানা যায়, ১৩ নভেম্বর স্ত্রী পারভীন হাসানকে নিয়ে আজমির শরিফ জিয়ারতের উদ্দেশ্যে জয়পুরে গিয়েছিলেন। আজ সন্ধ্যায় হোটেলে গোসল করার সময় পা পিছলে পড়ে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান। এরপর শুরু হয় বমি । একপর্যায়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ভারতের স্থানীয় একটি হাসপাতালের মারা যান।
মনজুর হাসান মিন্টুর দীর্ঘদিনের সহকর্মী ও ঘনিষ্ঠজন চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত বললেন, ‘মিন্টু ভাই ছিলেন উপমহাদেশের বাংলা ধারাভাষ্যের কিংবদন্তি। স্টাইল, ব্যক্তিত্ব ও বাচনভঙ্গিতে তিনি ছিলেন অনন্য। বছরের পর বছর দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন সুমিষ্ট কণ্ঠে। এ বিরাট শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।’ কান্নাভেজা কণ্ঠে শারাফাত আরও বললেন, ‘মিন্টু ভাই আমাকে সব সময়ই ছোট ভাই বলে জেনেছেন। আমাকে তাঁর ‘‘শিষ্য’’ বলে অভিহিত করেছেন। গত অক্টোবরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টই যে তার জীবনের শেষ ধারাভাষ্য হবে, কে ভেবেছিল?’
মূল পরিচিতি ধারভাষ্যকর হলেও মিন্টুর খেলোয়াড়ি জীবনও ছিল যথেষ্ট সমৃদ্ধ। পাকিস্তান আমলে চরম বৈষম্যের মধ্যেও জাতীয় ফুটবল দলের গোলরক্ষক হিসেবে খেলেছেন। ১৯৫৮ সালে টোকিও এশিয়াডে পাকিস্তান ফুটবল দলের হয়ে খেলেছিলেন। ধারাভাষ্য জগতে তাঁর পদার্পণ ১৯৭৩ সালে। গত চার দশকে দর্শকদের মুগ্ধ করা সেই কণ্ঠস্বর থেমে গেল আজ।