পথ দেখাচ্ছেন হামেলস

ম্যাটস হামেলসের হেড জালে। মাটিতে গড়াচ্ছেন হুগো লরিস, গড়াচ্ছে ফ্রান্সের সেমিফাইনাল আশাও! l রয়টার্স
ম্যাটস হামেলসের হেড জালে। মাটিতে গড়াচ্ছেন হুগো লরিস, গড়াচ্ছে ফ্রান্সের সেমিফাইনাল আশাও! l রয়টার্স

হলুদ মারাকানায় লাল-কালোর উচ্ছ্বাস। মুলার, পোডলস্কি হাসছেন, একে অন্যের সঙ্গে খুনসুটি করছেন, জবাব দিচ্ছেন দর্শক অভিবাদনের। তবে এর মধ্যেও একজনের হাসিটা যেন একটু বেশিই উজ্জ্বল। ম্যাট হামেলস যা করেছেন, তাতে তাঁর হাসিটাই তো সবচেয়ে বেশি চওড়া থাকার কথা!
জার্মান ডিফেন্ডারের আসল কাজ গোল ঠেকানো। পরশু মাঠের অন্য প্রান্তের ভূমিকাতেও তিনি সফল। ১৩ মিনিটেই টনি ক্রুসের ক্রস থেকে দুর্দান্ত এক হেডে এগিয়ে দেন জার্মানিকে। শেষ পর্যন্ত ওই গোলটাই গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। আর রক্ষণে তো বরাবরই প্রতীক হয়ে ছিলেন অবিচল আস্থার। ৩৫ মিনিটে হামেলস না থাকলে তো বেনজেমা গোল করেই ফেলেছিলেন! জার্মানির কোচ জোয়াকিম লো পরে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন ছাত্রকে, ‘ম্যাট (হামেলস) আজ অসাধারণ খেলেছে। সে যেভাবে ট্যাকল করে, জেতে, ঠিক জায়গায় থাকে সেটা আসলেই মুগ্ধ করার মতো। সবচেয়ে বড় কথা, সে আজ গোল করেছে। সেট পিসে ও সব সময়ই একটা হুমকি।’
বিশ্বকাপে শুরুটাও দুর্দান্তই করেছিলেন। পর্তুগালের সঙ্গে জার্মানির দ্বিতীয় গোলটাই ছিল হামেলসের, সেটাও সেট পিসেই ক্রুসের সঙ্গে যুগলবন্দীতেই। অসুস্থতার কারণে শেষ ষোলোতে আলজেরিয়ার সঙ্গে ম্যাচটা মিস করেছিলেন। ফেরাটা এর চেয়ে বেশি রাজকীয় হতে পারত না! পরে নিজেই জানিয়েছেন, ‘ক্রুস ভালো একটা ক্রস দিয়েছিল। তবে আমি ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় ছিলাম।’
তা জার্মান দলে হামেলসের প্রভাব আসলে কতটুকু? এই ডিফেন্ডারের জার্মানি ও ডর্টমুন্ড-সতীর্থ রোমান ভেনডেনফেলার তো বলেই দিলেন, ‘সে আমাদের জন্য অবিশ্বাস্য রকম গুরুত্বপূর্ণ। সব পরিস্থিতিই ও দারুণভাবে সামলাতে পারে। দিনে দিনে দলের নেতা হয়ে উঠছে সে। এর মধ্যেই কিন্তু দুটি গোলও করে ফেলেছে।’ সতীর্থ হুভেডেসের কণ্ঠেও একই সুর, ‘আমার এই দলে বেশ কয়েকজন নেতা আছে। কিন্তু ম্যাটস এর মধ্যেই অনেক পরিণত হয়েছে।’ বিশ্বকাপের আগে জার্মানি দলকে নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল, বালাকদের জার্মান দলের মতো নেতৃত্বের অভাব আছে এই দলে। কথাটা যদি সত্যিও হয়ে থাকে, হামেলস নিশ্চয়ই অনেকটাই ভুলিয়ে দিয়েছেন সে অভাব। ২৫ বছর বয়সী জার্মান ডিফেন্ডার সামনে থেকেই পথ দেখাচ্ছেন, ‘জেতার জন্য যে রকম ফুটবল দরকার সেটা আমরা খেলতে পারছি। মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী আমাদের রক্ষণ ছিল শক্তিশালী। আর চাইলেই তো প্রতিপক্ষের চেয়ে আপনি ২ গোল বেশি করতে পারবেন না।’
পরশু মারাকানায় প্রথমবারের মতো খেলেছে জার্মানি। ব্রাজিলকে হারিয়ে ফাইনালে উঠলে আবারও মারাকানায় আসবে তারা। হামেলস সেই স্বপ্নেই বুঁদ, ‘ব্যাপারটা আমার কাছে স্বপ্নপূরণের মতো। আশা করি এটা এখনো শেষ হয়ে যায়নি, এখানে আবার ফিরে আসব।’ ফিফাডটকম।