ভলিবলে সাফল্যের হাসি

শুরুতে এত বড় স্বপ্ন ছিল না। কিন্তু দারুণ খেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক ভলিবলে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ! কাল মিরপুর ইনডোরে l সাইফুল ইসলাম
শুরুতে এত বড় স্বপ্ন ছিল না। কিন্তু দারুণ খেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক ভলিবলে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ! কাল মিরপুর ইনডোরে l সাইফুল ইসলাম

মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোরে তখন সাগরের গর্জন। চারদিকে একটাই আওয়াজ, ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ।’ এই মিরপুরেই গত বছর এশিয়ান সেন্টাল জোনের গ্রুপ পর্বে বিদায় নেওয়ার পর কেঁদেছিল বাংলাদেশ। এবার আর কাঁদতে হয়নি। এবার আনন্দে ডুবে যাওয়ার উপলক্ষ এসেছে। ৪৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হলো বাংলাদেশ।
ফাইনালে কিরগিজস্তানের বিপক্ষে এসেছে ৩-০ সেটে জয়। গত টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন তুর্কমেনিস্তান এবার খেলেনি। যা বড় সুবিধাই করে দিয়েছে বাংলাদেশের। তবু বাংলাদেশকে ফেবারিট মনে করেনি কেউ। কিন্তু ইরানি কোচ আলি পোরজি আশায় বুক বেঁধেছিলেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল বাংলাদেশ দল পারবে। কোচের সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন খেলোয়াড়েরা।
গত পরশু এই কিরগিজস্তানের সঙ্গে লড়াই করে শেষ মুহূর্তে হেরেছিল স্বাগতিক দল। কাল ফাইনালে ২৫-২২ পয়েন্টে প্রথম সেট জয়। দ্বিতীয় সেট ২৫-২৩-এ। তৃতীয় সেটে বাংলাদেশ যখন ৭-৬, তখনই চোট পেলেন কিরজিগস্তানের বড় ভরসা লিবারো তকতয়েভ নুরমুকুম্মাদ। তিনি আর মাঠে নামতে না পারেননি, তাই খেলোয়াড়-সংকটে পড়ে কিরগিজরা। আগের দিন চোট ছিটকে দেয় দুই খেলোয়াড়কে। আট খেলোয়াড় নিয়ে বাংলাদেশে আসা কিরগিজদের ফিট খেলোয়াড়ের সংখ্যা নেমে আসে পাঁচে। ভলিবল আইনে পাঁচ খেলোয়াড় নিয়ে ম্যাচ খেলার নিয়ম নেই। তাই তৃতীয় সেটে জয়ী ঘোষণা করা হয় বাংলাদেশকে। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে নেপালকে ৩-১ সেটে হারায় মালদ্বীপ।
ফাইনালের আগে লিগ পর্বে চার ম্যাচেই জেতে কিরগিজস্তান। টুর্নামেন্টের শীর্ষ বাছাই ছিল তারাই। কিন্তু ফাইনালে এসে পারল না দলটি। এই সাফল্যের প্রতিদান দিতেও দেরি করেননি ভলিবল ফেডারেশনের সভাপতি আতিকুল ইসলাম, ‘চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আলিফ গ্রুপের পক্ষ থেকে দলের ১৮ জনকে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। এই জয় আমাদের জন্য দারুণ আনন্দের।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অভিনন্দন জানিয়েছেন দলকে।
টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় বাংলাদেশের হরষিত বিশ্বাস, ফাইনাল সেরা অধিনায়ক সাঈদ আল জাবির। এমন আনন্দময় বিকেলে জাবিরের কণ্ঠে উচ্ছ্বাস, ‘কী যে খুশি লাগছে, বোঝাতে পারব না। এটা সারা দেশের জয়। আমরা এর আগে কিরগিজদের কাছে দুবার হেরেছি। তবে গত ম্যাচে হেরে অনেক পর্যালোচনা করেছি। জয়ের প্রস্তুতি নিয়েই ফাইনালে নেমেছিলাম।’
বলতে বলতে নানা অপ্রাপ্তির কথা তুলে আনেন জাবির। উদাহরণ টানেন ক্রিকেট ও ফুটবলের। ওই সব খেলার বর্ষপঞ্জি আছে। কিন্তু ভলিবলে নেই। এই জয়ে জাবিরের আশা, সঠিক পরিকল্পনা ও বর্ষপঞ্জি ঘোষণা করে ভলিবল ফেডারেশন খেলোয়াড়দের জন্য সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ গড়বে।