মেসির সামনে শুধু রাউল

আরও একটা হ্যাটট্রিক। আরও একটা রেকর্ড।
লিওনেল মেসি যখন এমন কিছু করেন তখন বার্সেলোনা যে সহজেই জেতে সেটা তো আলাদা করে বলতে হয় না।
বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের জন্য এসব প্রায় নৈমিত্তিক ব্যাপার। গোল করাটা এমন অভ্যাসে পরিণত করেছেন যে এখন মেসির এসব কীর্তি নিয়ে নতুন করে কিছু না বললেও হয়। কিন্তু সেই হ্যাটট্রিক আর রেকর্ড যদি হয় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর হ্যাটট্রিকের ঠিক পরের দিন, তাহলে?
ফুটবল দলীয় খেলা। কিন্তু গত কয়েক বছরে এ দুজনের দ্বৈরথ দেখে যদি কেউ বলেন, ‘ফুটবল শুধু মেসি-রোনালদোর খেলা’—তাহলে কি খুব একটা ভুল হবে? রোনালদো হ্যাটট্রিক করে সব মনোযোগ কেড়ে নেবেন, আর মেসি চেয়ে চেয়ে দেখবেন তা কি হয়? পর্তুগিজ তারকার চেয়ে মেসির বড় প্রতিদ্বন্দ্বী এই গ্রহে আর কে আছে?
২২ মিনিটে দুর্দান্ত এক ফ্রি-কিকে শুরু করেছিলেন, শেষ করলেন ৭৫ মিনিটে জাভির পাস থেকে করা অসাধারণ এক গোলে। মাঝে সার্জিও বুসকেটসের পাস থেকে ৫৫ মিনিটে করা গোলটা মিলিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে তাঁর মোট গোল হলো ৬২টি। রুদ ফন নিস্টলরয়কে (৬০) পেরিয়ে এখন ইউরোপ-সেরার লড়াইয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। সবার ওপরে থাকা রাউল গঞ্জালেসের চেয়ে ৯ গোলে পিছিয়ে। কিন্তু যেভাবে এগোচ্ছেন, তাতে এই মৌসুমেই যদি এ রেকর্ডও মেসির হয়ে যায়, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এমন একজনকে দলে পেয়ে তাই রীতিমতো উচ্ছ্বসিত বার্সেলোনা কোচ জেরার্ডো মার্টিনো, ‘আমার আগে যাঁরা এই ক্লাবের কোচ ছিলেন তাঁরাও বলেছেন মেসি কতটা বিস্ময়কর। আজ আমিও সেই দলে যোগ দিলাম।’ নতুন কোচের মতো মেসিতে মুগ্ধ নতুন সতীর্থ নেইমারও, ‘আমি ওকে সাহায্য করতে পেরে দারুণ খুশি। ও আসলেই বিস্ময়কর প্রতিভা, বিশ্বসেরা।’
গোলসংখ্যায় এখনো রাউলের পেছনে। তবে ম্যাচপ্রতি গোলের অনুপাতে আশপাশে থাকা প্রায় সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন বার্সেলোনা স্ট্রাইকার। ৬২ গোল করতে মেসি খেলেছেন মাত্র ৮০ ম্যাচ। রাউল (১৪৪ ম্যাচে ৭১), নিস্টলরয় (৮৮ ম্যাচে ৬০), শেভচেঙ্কো (১১৬ ম্যাচে ৫৯), রোনালদো (৯৬ ম্যাচে ৫৪) সবাই তাঁর পেছনে!
সবাইকে পেছনে ফেলেছেন আরও এক জায়গায়। এই নিয়ে চতুর্থ হ্যাটট্রিক করলেন চ্যাম্পিয়নস লিগে। ইউরোপ-শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে তাঁর চেয়ে বেশি হ্যাটট্রিক নেই জীবিত কিংবা মৃত অন্য কোনো ফুটবলারের।
অনন্য লিওনেল মেসি! এএফপি।